মঙ্গলের গিরিখাতে মাত্র ৩ ফুট খুঁড়লেই মিলবে পানির সন্ধান!
পৃথিবী থেকে ৩৩ কোটি ৯০ লক্ষ মাইল দূরে অবস্থিত 'লাল গ্রহ' মঙ্গলের বিশাল একটি এলাকায় তিন ফুট খুঁড়লেই পাওয়া যাবে পানি। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা) ও রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'রসকসমস'-এর যৌথভাবে পাঠানো এক মঙ্গলযান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে এটি।
'এক্সোমার্স ট্রেস গ্যাস অরবিটার' নামক যন্ত্রে থাকা ফাইন রেজোলিউশন এপিথার্মাল নিউট্রন ডিটেক্টর (ফ্রেন্ড) যন্ত্রের মাধ্যমে পানির সন্ধান পাওয়া যায়।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা 'আইকারাস'-এ প্রকাশিত হয়, 'গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অব মার্স' নামে খ্যাত ভ্যালেস মেরিনারিস গিরিখাতে পানির সন্ধান মিলেছে।
এসা-র তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলযানের পাঠানো ছবি ও তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে এ ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে, ৪ হাজার কিলোমিটার বা ২ হাজার ৪৮৫ মাইল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিশালাকার ভ্যালেস মেরিনারিস-এর তিন ফুট গভীরেই বিশুদ্ধ বরফ অবস্থায় পানি জমা আছে। এই অবস্থাকে 'ওয়াটার আইস' বলা হয়ে থাকে। গিরিখাতের গভীরে থাকা খনিজ পদার্থগুলোর মধ্যেও আটকে রয়েছে সেই পানি।
এর আগে মঙ্গলের দুই মেরুতে, বিশেষ করে দক্ষিণ মেরুতেই কঠিন বরফ হয়ে থাকা পানির অস্তিত্বের হদিশ পাওয়া যায়। মঙ্গলের বিষূবরেখার নীচে থাকা কয়েকটি অঞ্চলেও বরফ হয়ে থাকা পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এর গভীরতা অনেক বেশি।
২০১৮-র মে থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মঙ্গলের গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে এই পর্যবেক্ষণ চালায় এসা ও রসকসমস-এর পাঠানো মহাকাশযানের ফ্রেন্ড যন্ত্রটি।
রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পদার্থবিজ্ঞানী অ্যালেক্সেই মালাখভ বলেন, "লাল গ্রহের ওই গিরিখাতের নীচের মধ্যাঞ্চলটির প্রায় পুরোটাই পানিতে ভরা। যতটা আশা করা হয়েছিল তার চেয়েও বহুগুণ বেশি এটি। পৃথিবীতেও এমন ওয়াটার আইস রয়েছে শুকনো মাটির নীচে।"
কিন্তু মঙ্গলের ওই এলাকার চাপ ও তাপমাত্রায় কীভাবে পানির এই বিপুল সঞ্চয় রয়েছে সে রহস্যের জট এখনও খোলা সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের পক্ষে।
- সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা