বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী সের্গেই ব্রিনের বিবাহবিচ্ছেদ, ভাগ হবে ৯৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি!
গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিনের চার বছরের বিয়ে ভাঙতে চলেছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা সের্গেইয়ের বিচ্ছেদের খবরে জল্পনা শুরু হয়েছে তার সম্পত্তি ভাগাভাগির অঙ্ক নিয়ে। গত মাসে স্ত্রী নিকোল সানাহানের সঙ্গে বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছেন ৪৮ বছর বয়সী ধনকুবের সের্গেই। আদালতকে গুগল প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, তাদের দুজনের মধ্যে যে বিভেদ বা মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, তা আর মিটমাট করা সম্ভব নয়।
গত চার বছরে বিবাহবিচ্ছেদের মুখে পড়া তৃতীয় ধনকুবের সের্গেই। তার দুই উত্তরসূরি মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোসের বিচ্ছেদের মামলা শেষ পর্যন্ত মোটা অঙ্কের ভরণপোষণে গিয়ে থেমেছে। সের্গেইয়ের এই ডিভোর্স মামলার পরই শুরু হয়েছে তাদের বিচ্ছেদ পরবর্তী বিষয়— স্ত্রীকে ভরণপোষণ, সন্তানের হেফাজত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা।
এক বছর আগেই বিচ্ছেদ হয়েছে বিল গেটস এবং মেলিন্ডা গেটসের। বিচ্ছেদের সময় এই জুটির সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৪৫ বিলিয়ন ডলার। তারও দুই বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে বেজোস এবং ম্যাকেঞ্জি স্কটের, যাদের মোট সম্পত্তি ছিল ১৩৭ বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের আবেদনকারী সের্গেই ব্রিন বর্তমানে ৯৪ বিলিয়ন ডলারের মালিক।
২০১৫ সালে সের্গেইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয় নিকোলের। সেবছরই গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে তার প্রাক্তন স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর আড়ম্বরহীন, জাঁকজমকহীন এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ে করেন এই জুটি। আগের বিয়ের সূত্রে দুই সন্তানের বাবা সের্গেই। নিকোল এবং সের্গেইয়েরও দুই বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই বর্তমানে শুধুমাত্র অ্যালফাবেটের এক জন বোর্ড সদস্য। ২০১৮ সালে তিনি গুগলের প্রশাসনিক পদে ছিলেন। এছাড়া, নিকোল একজন উদ্যোক্তা, আইনজীবি এবং ক্লিয়ার অ্যাকসেস আইপি নামক একটি সংস্থার সিইও।
তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকেই আলাদা থাকছেন সের্গেই এবং নিকোল। গত জুনে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্টা ক্লারা আদালতে ডিভোর্সের আবেদন করেন সের্গেই। আদালতে সের্গেই তাদের কন্যা সন্তানের যৌথ দায়িত্ব চেয়েছেন।
কিন্তু সের্গেয়ের সম্পত্তিতে কী ভাগ পাবেন নিকোল? সান ফ্রান্সিসকোতে সাইডম্যান অ্যান্ড ব্যানক্রফ্ট এলএলপি-এর অংশীদার মনিকা মাজ্জেই বলেছেন, যেহেতু সের্গেই বিলিয়নিয়ার হওয়ার অনেক পরে তাদের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল, তাই খুব সম্ভবত এই জুটির মধ্যে একটি বিবাহপূর্ব চুক্তি হয়েছে। কিন্তু যেহেতু মামলাটি একজন প্রাইভেট বিচারক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, তাই বাইরের মানুষ কখনোই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবে না।
যদিও আইনজীবিরা জানিয়েছেন, এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি যেহেতু বিচারাধীন, তাই সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারে। পুরনো ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে ভরণপোষণ দিতে হয়েছিল সের্গেইকে। কিন্তু সেই টাকার পরিমাণ এখনো পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি।
আর বিচ্ছেদের ফলে যদি মোটা অংকের টাকা পেয়েই যান সানাহান, সেই টাকার একটি বড় অংশ মানবসেবায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিকোল সানাহানের প্রতিষ্টিত 'বায়া-ইকো ফাউন্ডেশন' এর মূল লক্ষ্য হলো, দীর্ঘায়ু ও সমতা, ফৌজদারি বিচারের সংস্কার এবং একটি সুস্থ ও বাসযোগ্য গ্রহ তৈরি করা।
সূত্র: ব্লুমবার্গ