দুই সপ্তাহে ডালের দাম বেড়েছে মণে ২৫০-৪৫০ টাকা
ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ডালের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বিভিন্ন জাতের ডালের দাম ২৫০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়েছে। চাহিদা স্থির থাকলেও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের বুকিং দর বৃদ্ধি ও আমদানিকারদের কারসাজিতে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে।
ভোগ্যপণ্যের দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজারের আড়ত ও পাইকারি দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহষ্পতিবার বাজারে প্রতিমণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) কানাডার মসুর বিক্রি হয়েছে ২৫০০ থেকে ২৫৫০ টাকা দামে। যা দুই সপ্তাহে আগে মাত্র ২১০০ থেকে ২১৫০ টাকা দামে বিক্রি হতো।
দুই সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতিমণ অস্ট্রেলিয়ান মসুর বিক্রি হয়েছে ২৩০০ থেকে ২৩৫০ টাকা। যা বর্তমানে ২৬৫০ থেকে ২৭০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে, গত দুই সপ্তাহে প্রতিমণ মসুরের দাম ৪০০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
একই সময়ে বাজারে প্রতিমণ ছোলার দাম ২৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বাজারে মানভেদে প্রতিমণ ছোলা বিক্রি হয়েছে ২৩০০ থেকে ২৪৫০ টাকায়। যা দুই সপ্তাহ আগে মাত্র ২০০০ থেকে ২২৫০ টাকা দরে বিক্রি হতো।
দুই সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতিমণ সাদা মটর বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকা দরে। যা বর্তমানে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে দুই সপ্তাহে প্রতিমণ সাদা মটরের দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি ডাল ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বাজারে ডাল জাতীয় প্রতিটি পণ্যের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। এরপরও কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক কারসাজি করে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
ডাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স পায়েল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আশুতোষ মহাজন বলেন, "বাজারে চাহিদার চেয়ে ছোলার সরবরাহ সংকট রয়েছে। এছাড়া মটর ও মসুরের আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বেড়েছে। ফলে দেশীয় বাজারে ডাল জাতীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে"।
তবে পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী মেসার্স হক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আজিজুল হক বলেন, "আন্তর্জাতিক বাজারে শুধু মসুরের বুকিং দর বেড়েছে গত এক সপ্তাহ ধরে। ডাল জাতীয় অন্যান্য পণ্যের দাম স্থির রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বাজারে যেসব মসুর বিক্রি হচ্ছে তা কমপক্ষে এক থেকে দুই মাস আগের কেনা। এক সপ্তাহ ধরে যেসব মসুরের বুকিং দর বেড়েছে তা বাজারে পৌঁছবে আরো এক-দেড় মাস পরে। কোন পণ্যের সরবরাহ সংকটও নেই বাজারে। শুধুমাত্র আমদানিকারকরা সিন্ডিকেট করে পণ্যগুলোর দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থির করে তুলেছে।
চট্টগ্রাম ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম মহিউদ্দিন বলেন, "বাজারে ডালজাতীয় পণ্যের চাহিদা, আমদানি ও সরবরাহ সবই ঠিক রয়েছে। বাজারের কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে জিম্মি পুরো বাজার। ফলে আমদানিকারকরা যখন ইচ্ছা কোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। আবার কখনো চাহিদার চেয়ে বাজারে পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে পণ্যের দাম কমে যায়"। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।