সার্কিট হাউজের এসির দাম ২ লাখ টাকা!
গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরের দুটি সার্কিট হাউজের জন্য কয়েকটি ২ টন ওজনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বা এয়ার কন্ডিশনার কিনবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যন্ত্রগুলোর প্রতিটির দাম পড়বে ২ লাখ টাকা! প্রকল্প প্রস্তাবের তালিকায় এরকম দামই লিখেছে মন্ত্রণালয়।
যদিও বাজারের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসির দাম ৫৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে। কিন্তু মন্ত্রণালয় ১৬২টি এসি কিনতে ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, সার্কিট হাউজের ৬০৬ মিটার সীমানা দেয়ালের নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের হিসাবপত্র অনুযায়ী, দেয়ালের প্রতি মিটারে খরচ পড়ছে ৩১ হাজার টাকা!
আরও আছে। দুটি সার্কিট হাউজে রান্নাঘর বানাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এরপর আসা যাক ভিআইপি এবং ভিভিআইপি কক্ষগুলোর ফার্নিচার কেনার খরচের হিসেবে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৯ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে মোট ৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বাজেটের এই প্রকল্প প্রস্তাবনা।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ডিসেম্বরে শুরু হয়ে কাজ শেষ হবার কথা ২০২১ সালে।
বাজার পরিদর্শন করে আমাদের প্রতিবেদক দেখলেন, শার্প ব্র্যান্ডের এসির দাম ৯২ হাজার টাকা। ওয়ার্লপুল ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যায় ৯৫ হাজার ৯০০ টাকায়। ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এসি মিলছে ৫৬ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৭৬ হাজার ৪০০ টাকায়। আর জেনারেল ব্র্যান্ডের এসির দাম পড়ে ১ লাখ টাকা।
২ টন ওজনের এসিগুলোর মধ্যে সিঙ্গার কোম্পানির এসির দাম ৮১ হাজার ৯৫০ টাকা। আর এলজি থেকে ২ টন ওজনের এসি পাওয়া যাবে ১ লাখ টাকার মধ্যে।
ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো ব্র্যান্ডের তৈরি ২ টন ওজনের এসির দামও ২ লাখ টাকা নয়। কোথাও যদি এ দাম দেখানো হয়ে থাকে তবে বাজার-মূল্যের চেয়ে দাম অনেক বেশি ধরা হয়েছে।’
এদিকে, ছয় তলা সার্কিট হাউজ দুটির জন্য প্রতি বর্গমিটারে নির্মাণ-ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১৫ টাকা। যা নির্মাণাধীন বা সম্প্রতি সমাপ্ত প্রকল্পগুলোর খরচের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন।
কুমিল্লা সার্কিট হাউজে এমনই এক প্রকল্পে প্রতি বর্গমিটারে খরচ পড়েছিল ৩৮১ টাকা। সেখানে পুলিশের সহকারী সুপারিনটেনন্ডেন্টদের (এএসপি) জন্য ৫০টি কার্যালয়-কাম-বাড়ি তৈরিতে প্রতি বর্গমিটারে ৩৩৩ টাকা ব্যয় করা হয়।
তাই গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরের সার্কিট হাউজ দুটির নির্মাণকাজের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।