৫৫ হাজার কোটি ইউরো প্রণোদনা ঘোষণা জার্মানির
করোনা ভাইরাস বিস্তাররোধে নিজ নিজ সীমান্তে আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে ডেনমার্ক, পোল্যান্ড এবং সাইপ্রাস।
ডেনমার্ক এবং পোল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির সীমান্ত রয়েছে। জার্মান সরকার করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার খরচে কোনও প্রকার কার্পণ্য করা হবে না বলে জানায়। একইসঙ্গে, অর্থনীতিকে করোনার প্রভাব থেকে সার্বিক সুরক্ষা দিতেও বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মান কোম্পানি ও কর্মীদের আর্থিক সহায়তা দিতে কমপক্ষে ৫৫ হাজার কোটি ইউরোর ইউরোর আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই জার্মানির সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রণোদনার ঘটনা।
জার্মানির বড় অংকের প্রণোদনা ঘোষণার পরেই ইউরোপীয় কমিশন আঞ্চলিক বাজার ধস নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার অঙ্গীকার করে। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও ডয়েচে ভেলের।
ইউরোপের অর্থনৈতিক ভরকেন্দ্র জার্মানির অন্যতম প্রধান বৈদেশিক বাণিজ্য সহযোগী দেশ চীন। কিন্তু করোনার কারণে সেখানেও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির চাহিদা কমে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে জার্মানির ভারি শিল্প এবং প্রকৌশল খাতে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস বিস্তারের কেন্দ্র এখন ইউরোপ হওয়ায় তা জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে।
এই অবস্থায় বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি বহু গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন ও বাণিজ্য মেলা স্থগিত করে। পিছিয়ে দেয়া হয়েছে লাইপসিশ বইমেলা, করা হয়েছে হানোফার শিল্পমেলাও । খোদ নিজ দলের সম্মেলন পিছিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেল।
জার্মান কালচারাল কাউন্সিল বলছে, বাণিজ্যমেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ায় সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম খাত 'ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত' হয়েছে।
তবে ইতালির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই অগ্রিম প্রস্তুতিতে কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছে না জার্মান সরকার। এর আগে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ থেকে সকল প্রকার পর্যটন নিষিদ্ধ করে। এটাও জার্মান অর্থনীতির জন্য আরেক ধাক্কা। পাশাপাশি দেশটির কাছ থেকে বড় অংকের ঋণ নেওয়া ইতালি এবং গ্রীসের অর্থনীতি বড় আকারের মন্দার মুখে পড়তে পারে।
ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন এই উদ্বেগ চেপে রাখেননি। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, করোনার ফলে সৃষ্ট সংকট ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতির ভিত্তি ধরে শক্ত ঝাঁকুনি দিচ্ছে। এই অবস্থায় সদস্য দেশগুলোকে তাদের প্রয়োজন অনুসারে সরকারি প্রণোদনা চালু করার পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দেওয়া হবে।
গত শুক্রবার জার্মান অর্থমন্ত্রী ওলাফ শুলজ করোনায় প্রভাবিত সকল জার্মান শিল্পে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট অংক অনুসরণ না করার কথা জানান। এর মানে সরকার নিজ সাধ্য অনুসারে প্রয়োজনীয় কর রেয়াত এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণ সঞ্চালনের উদ্যোগ নেবে।