ডিপোজিট ক্যাপ তুলে নিলেও উপকৃত হবেনা লোন ক্যাপের অধীনে থাকা ব্যাংকগুলো
আমানত হারের সীমা তুলে নিলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও ৯% ঋণ সীমা বহাল রেখেছে, ফলে সাধারণ মানুষের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ঋণে সুদের হারে সীমা বহাল থাকায় ব্যাংকগুলো আমানতের হার বাড়াতে পারবে না।
ক্রেডিটের তুলনায় ডিপোজিটের গ্রোথ অনেক কম। আমাদের এখন ডিপোজিট বাড়াতে কাজ করতে হবে। সেইসঙ্গে ব্যাংক খাতে গ্রাহকের আস্থা বাড়াতে এবং তারা যেন লিগ্যাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠায়, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে।
ডিপোজিটের ইন্টারেস্ট রেটের ফ্লোর তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে লোনের ইন্টারেস্ট রেটে ক্যাপ থাকায় ব্যাংকগুলোর পক্ষে ডিপোজিটের ইন্টারেস্ট রেট বাড়ানো খুব একটা সম্ভবপর না।
যে ব্যাংকের আকার ছোট ও গ্রাহকের আস্থা কম, তাদের বাধ্য হয়ে ডিপোজিটে হাই রেট দিতে হচ্ছে।
আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে জিডিপির গ্রোথকেও ঠিক রাখতে হয়, আবার ইনফ্লেশনকেও ম্যানেজ করতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দুটো বিষয়কেই মনেটারি পলিসিতে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
নতুন পলিসিতে লোনের ইন্টারেস্ট রেটের ক্যাপ তোলা হয়নি। অপরদিকে, ব্যাংক চ্যানেল থেকে প্রচুর টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে (কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে জমা হয়েছে), ফলে মার্কেটে অটোমেটিক্যালি একটা লিকুইডিটি টাইটেনিং হয়েছে।
আবার দেখছি, কনজিউমার লোনে ৩% সুদ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, এটি আগেই করা হলেও এখন অফিসিয়ালি ডকুমেন্টেড হয়েছে। তবে কর্পোরেট, এসএমইসহ অন্য ক্ষেত্রগুলোতে লোনের ইন্টারেস্ট রেট আগের মতোই ৯% রাখা হয়েছে। এদিক থেকে দেখতে গেলে, টাইটার লিকুইডিটি আমাদের জন্য ভালো।
রেপো রেট এখন বাড়ানোকে আমার মনে হয়েছে, 'দ্যাট ইজ এ রেকগনিশন অব দ্য হায়ার রেট ইন দ্য মার্কেট'। ব্যাংক চ্যানেলে এখন লিকুইডিটি স্ট্রেস আছে। ইনফ্লেশনকে কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে বলে এটা একদিক থেকে ভালো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক লিকুইডিটিকে আরো টাইট করার চেষ্টা করছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমাদের প্রাইভেট সেক্টরে ক্রেডিট গ্রোথ ১৪% এর নিচেই আছে। এর মধ্যে আবার ৩% ক্রিয়েট হয়েছে ফরেইন কারেন্সির প্রাইজ বেড়ে যাওয়ার কারণে। তাই, জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ের মনেটারি পলিসিতে প্রাইভেট সেক্টরে ১৪% গ্রোথ আমার কাছে এম্বিশাস মনে হচ্ছে।
ডিপোজিটে ৮% পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। এটাই মূল চ্যালেঞ্জ। ডিপোজিটে বেশি সুদ দেওয়ার কারণে তাদের মার্জিন কমে একেবারে নগণ্য পর্যায়ে চলে এসেছে।
ইন্টারেস্ট রেটের ক্যাপ রেখে মনেটারি পলিসি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, এটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। এসএমই সহ বিভিন্ন খাতে রিফাইন্যান্স স্কিমে ইন্টারেস্ট রেটের স্প্রেড বাড়িয়ে ব্যাংক খাতকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে লোনের ইন্টারেস্ট রেটে ক্যাপ রেখে মনেটারি পলিসি ইফেক্টিভ করা কঠিন।
সেলিম আর এফ হোসেন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান।