পিএইচপি মোটরসের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশে প্রবেশ করল পেরোডুয়া
পিএইচপি গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত পিএইচপি মটরস বিখ্যাত মালয়েশিয়ান অটোমোবাইল ব্র্যান্ড পেরোডুয়ার সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবসা শুরু করেছে। কোম্পানি দুটি বাংলাদেশে পেরোডুয়ার গাড়ি ও এসইউভি আনবে এবং বাজারে বিক্রি করবে।
তারই ধারাবাহিকতায় আজ (৯ মে) চট্টগ্রাম ভিত্তিক অটোমোবাইল কোম্পানিটি রাজধানীতে একটি ইভেন্টে পেরোডুয়ার চারটি মডেল লঞ্চ করতে চলেছে।
পিএইচপি মোটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আখতার পারভেজ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা পেরোডুয়া এআরইউজেড (১৫০০ সিসি ৭-সিটার এসইউভি), পেরোডুয়া বেজ্জা (১৩২৯ সিসি সেডান), পেরোডুয়া এমইউভিআই (১৫০০ সিসি হ্যাচব্যাক), পেরোডুয়া এক্সিয়া (১০০০ সিসি হ্যাচব্যাক) ঢাকায় লঞ্চ করতে যাচ্ছি। চলতি মাসের শেষের দিকে ব্র্যান্ডগুলো চট্টগ্রামে লঞ্চ করা হবে।"
সম্প্রতি পিএইচপি মোটরস মালয়েশিয়ার অটোমোবাইল কোম্পানি প্রোটনের সাথে চুক্তি বাতিল করে। পরবর্তীতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে পেরোডুয়ার সাথে নতুন চুক্তি করে কোম্পানিটির গাড়ি বাজারে আনার পরিকল্পনা করে।
আখতার পারভেজ বলেন, "পেরোডুয়ার ছয়টি মডেল রয়েছে। আমরা সবগুলো মডেল নিয়েই কাজ করছি। প্রাথমিকভাবে আমরা আমাদের কারখানায় চারটি মডেলের পেরোডুয়া গাড়ি ও এসইউভি অ্যাসেম্বল করব। সেগুলো বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি করা হবে। একইসাথে অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলিও শীঘ্রই এসেম্বল এবং লঞ্চ করা হবে।"
আখতার পারভেজ আরও বলেন, "পেরোডুয়া জাপানি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আমরা আশাবাদী, যে এটি বাংলাদেশি ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে।"
আখতার পারভেজ জানান, পেরোডুয়া মালয়েশিয়ায় ৬০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে গত ১৬ বছর ধরে দেশটিতে বিকৃত শীর্ষ ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের বাজার খুব শীঘ্রই তারা দখল করতে পারব বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তবে পিএইচপি মোটরস ওয়ারেন্টি চুক্তি অনুযায়ী প্রোটন গাড়ির ক্রেতাদের বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান অব্যাহত রাখবে। আখতার পারভেজ বলেন, "পেরোডুয়ার সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করার সময় আমরা পূর্বে বিক্রি হওয়া প্রোটন গাড়িগুলিতে বিক্রয়োত্তর পরিষেবা সরবরাহ করার অনুমতি দেওয়ার শর্তটি অন্তর্ভুক্ত করেছি। তারা আমাদের এই প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছে।"
আখতার পারভেজ আরও বলেন, "আমাদের ৪০০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। আমরা প্রতিদিন তিনটি শিফটে ৩৬টি গাড়ি এসেম্বল করতে পারি; অর্থাৎ প্রতিটি শিফটে ১২টি। আমরা প্রথমে ইঞ্জিন এসেম্বল করি এবং তারপরে গাড়িগুলিকে এসেম্বল করে আমাদের কারখানায় পেইন্ট করি।"
'মেইড ইন বাংলাদেশ' ট্যাগযুক্ত গাড়ি বিক্রির স্বপ্ন প্রসঙ্গে আখতার পারভেজ বলেন, "একটি গাড়ি তৈরি করতে এক হাজারের বেশি খুচরা যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হয়। গাড়ির চাহিদা কম থাকায় আমরা এখনও বাংলাদেশে সব খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির পর্যায়ে নেই। তবে আমরা যদি সকল স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে সমর্থন পাই সেক্ষেত্রে একদিন আমরা এই স্বপ্নকে সত্যি করতে সক্ষম হব।"
পিএইচপি মোটরস ২০১৫ সালে ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে চট্টগ্রামের সরাইপাড়া হালিশহরে কারখানা স্থাপন করে। ২০১৭ সালে কারখানাটি চালু হয় এবং গাড়ির অ্যাসেম্বল করা শুরু করে।
যাত্রা শুরুর পর পিএইচপি অ্যাসেম্বল করা গাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামে সেডানের বাজারের প্রায় ২০ ভাগ দখল করে। তাদের কারখানাটি ২০১৯ সাল থেকে পূর্ণ ক্ষমতায় চলছে; যা বছরে ১২০০ ইউনিট এসেম্বল করতে সক্ষম।