ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তাই প্লাস্টিক বিক্রি করে অনলাইনে পড়াশোনা
করোনাভাইরাস এসে হঠাৎ করেই যেন স্কুল-কলেজ সব বন্ধ হয়ে গেল। আর এসময়েই দেখা গেল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে অসংখ্য শিক্ষার্থীরই ইন্টারনেট সংযোগ নেই। এমনকি দূর শিক্ষণ বা অনলাইনে পড়াশোনা করার জন্য নেই একটি স্মার্ট ফোনও।
কিন্তু তা বলে কি পড়াশোনা বন্ধ রাখা যায়? এই সমস্যা সমাধানেই নতুন কৌশল উদ্ভাবন করল ইন্দোনেশিয়ার দিমাস আনোয়ার পুত্র। গত দুইমাস ধরে ১৫ বছর বয়সের দিমাস প্লাস্টিক কুড়ায়। জাকার্তায় নিজ এলাকার আশেপাশে এভাবে দুই ভাইবোন মিলে ওরা প্লাস্টিক কুড়িয়ে এর বিনিময়ে ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগ পায় তারা। সপ্তাহে তিনদিন তিনঘণ্টার জন্য অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পায় তারা।
কিন্তু এই প্লাস্টিকগুলো তারা কোথায় জমা দেয়? কারাই বা ওয়াইফাই সংযোগের সুবিধা দেয় তাদের?
'ওয়াইফাই স্টেশন' এর ধারণা নিয়ে আসে ইং সোলিহিন। শিশুদের কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিক বিক্রি করে একমাসের জন্য ২২ ডলারের ইন্টারনেট কিনে আনে সে। আর এই ইন্টারনেট ব্যবহার করেই অনলাইন ক্লাস করে শিশুরা।
তবে অনেক সময়েই মাস ফুরোবার আগেই শেষ হয়ে যায় ইন্টারনেট, ফলে আর পড়াশোনা চালাতে পারে না বাচ্চারা- এমনটা জানালেন ইং।
গত মার্চ মাস থেকেই ইন্দোনেশিয়ার স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। ফলে বাচ্চারা সবাই বাধ্য হয়েছে বাড়িতে দূর শিক্ষণ বা অনলাইনে পড়াশোনা করতে। কিন্তু দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী বা অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য ইন্টারনেটের সংযোগ নিশ্চিত করতে পারেনি দেশটির সরকার।
রাজধানী জাকার্তা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি অঞ্চল বোগোর। সপ্তাহে একদিন গাড়িতে ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিটার যন্ত্রপাতি নিয়ে যায় একদল স্বেচ্ছাসেবী। তাদের স্থানীয়রা ডাকেন 'স্কুল ভলান্টিয়ার' বলে। শিশুদের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের সুবিধাও দেয় তারা।
২০১৯ সালের মাঝামাঝি নাগাদ করা এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার প্রতি ছয়টি বাড়ির মধ্যে মাত্র একটি বাড়িতে ইন্টারনেটের সংযোগ আছে।