কলকাতায় রেল ভবনে আগুন, নিহত ৯
ভারতের কলকাতায় স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে সোমবার সন্ধ্যায় অগ্নিকান্ডে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহগুলো ভবনের লিফট থেকে উদ্ধার করা হয়।
মৃতদের সবাইকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে মৃতদের মধ্যে আছেন পূর্ব রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল, দমকলের চার কর্মী, হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই, আরপিএফের এক কনস্টেবল। বাকি দু'জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসের ১৩ তলায় আগুন লাগে। সেই সময় অফিসে প্রায় ৫০০ জন ছিলেন। আগুনের লেলিহান শিখা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে ১২ তলায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ২৫টি গাড়ি। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় দমকলকে। ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কিন্তু রাতের দিকে ফের কয়েক দফায় নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শেষপর্যন্ত ভোর ৪টা ১০ মিনিট নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে এই বিধ্বংসী আগুনের মধ্যে কেন লিফট ব্যবহার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। লিফটের ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ প্রয়োজন। কিন্তু এরকম আগুন লাগলে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। নাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে।
অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল। পৃথকভাবে তদন্ত করবে কলকাতা পুলিশ এবং দমকল বাহিনীও।
রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আগুনে ঝলসে যাওয়ায় দেহগুলো শনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দু'তিনজনের দেহ চিহ্নিত করেছেন সহকর্মীরা। ময়নাতদন্ত রাতেই করা হয়। যা বাধ্যতামূলক। কিন্তু শনাক্তকরণ ছাড়া কি আমরা পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিতে পারি?'
তিনি জানান, মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে এবং পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।
সেই সাথে রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, রেলের থেকে ভবনের নকশা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। সেই নকশা পেলে দমকলের কাজে সুবিধা হত বলে জানান তিনি।