কারাবাখের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী দখলের কথা জানালো আজারবাইজান
সংঘাতময় নগোরানো-কারাবাখ ভূখণ্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শুসা দখলের কথা জানিয়েছেন আজারবাইজেনের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। আর রোববার (৮নভেম্বর) এই ঘোষণার পর হাজার হাজার আজেরি মহাসড়কে নেমে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। তবে আর্মেনিয়ার সরকার এই দাবি অস্বীকার করেছে।
আজারবাইজানিরা শুসা বললেও, আর্মেনিয়দের কাছে শহরটির নাম শুসি। উভয়পক্ষের কাছেই নগরীর সাংস্কৃতিক এবং কৌশলগত গুরুত্ব অনেক।
আর্মেনিয় শাসিত কারাবাখ সরকারের রাজধানী শহর স্তেপনাকার্ট থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৯ মাইল। অর্থাৎ, শুসা থেকে এখন সেখানে হামলা চালাতে পারবে আজেরি সেনাবাহিনী। খবর রয়টার্সের।
কারাবাখ এবং এর আশেপাশের এলাকায় চলমান যুদ্ধে কমপক্ষে ১,০০০ জন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন। অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত হলেও, ১৯৯০ এর দশক থেকে এটি আর্মেনিয় জাতিগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ওই সময়ে আর্মেনিয়া সমর্থিত জাতীয়তাবাদীরা স্থানীয় আজারবাইজানিদের হত্যা ও নির্যাতনের মাধ্যমে কারাবাখ ত্যাগে বাধ্য করে।
রোববার আজারবাইজানি প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ বলেন, ''আমাদের দেশের ইতিহাসে আজকের দিনটি একটি মহান দিবসের মর্যাদা পাবে।''
ঘোষণার পর রাজধানী বাকুতে হাজার হাজার মানুষের উৎসব করেছে জাতীয় পতাকা হাতে। গাড়ি চালকেরাও হর্ন বানিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
আলিয়েভের বক্তব্য অস্বীকার করেছে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং নগোরানো-কারাবাখ অঞ্চলের প্রশাসন।
নগোরানো-কারাবাখ ত্রাতা সংস্থা জানায়, ''আজারবাইজানের কাছে শুসি দখল করা অবাস্তব এক স্বপ্ন। প্রচণ্ড ধ্বংসলীলা চালানোর পরও তারা এটি দখল করতে পারেনি। আমাদের অভেদ্য দুর্গ শহর শত্রুর সকল আঘাত সামলে বুক চিতিয়ে প্রতিরোধ করে যাচ্ছে।''
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, কৌশলগত এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে।
কারাবাখ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, আজেরি সেনাদের একাধিক দখলের চেষ্টা তারা নস্যাৎ করে দিয়েছে।
এই যুদ্ধে তুরস্কের সমর্থনে শুরু থেকেই সুবিধাজনক অবস্থায় আছে আজারবাইজান। ১৯৯০ সালের যুদ্ধে যে ভূখণ্ড দেশটি হারিয়েছিল, তার অধিকাংশই গত এক মাসে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
শুসা জয়ের ঘোষণায় অভিনন্দন জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান। তিনি বলেন, ''এ জয়ের জন্য আমার আজেরি ভাইদের অভিনন্দন জানাই। খুব শিগগির দখলে থাকা বাকি ভূখণ্ডও শত্রুমুক্ত হবে, বলে আশা করছি।''
এদিকে শুসা ব্যবহার করে স্তেপনাকার্টে ভারি গোলাবর্ষণ করতে পারবে আজেরি বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়য়, দুটি শহরেই ব্যাপক গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। তবে এর মাধ্যমে বেসামরিক এলাকাতে হামলা চালানো হয়েছে; এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়য়।
১৯৯০এর দশকের আগে শুসা আজেরি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত শহর ছিল। আবার এই শহরেই আছে আর্মেনিয় খ্রিস্টানদের পবিত্র কারাবাখ ক্যাথেড্রাল।