বসতবাড়িতে আগুন লাগিয়ে কারাবাখ ছাড়ছে আর্মেনিয়রা
দক্ষিণ ককেশাসের পার্বত্য ভূখণ্ড নগোরানো-কারাবাখের অধিকার নিতে সক্ষম হয়েছে আজারবাইজান। বৈরি প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধ করেই তারা এ সফলতা লাভ করে।
আর্মেনিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে এ যুদ্ধের অবসান হয়েছে এবং আলোচিত অঞ্চলের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে দেশটি।
গত শনিবার ছিল আজারবাইজানের কাছে কালবাজার-সহ বেশকিছু দখলকৃত এলাকা হস্তান্তরের দিন। তার আগেই নিজ বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে কারাবাখ ছেড়ে চলে গেছে হাজার হাজার আর্মেনিয় নাগরিক।
৯০' এর দশকে কারাবাখ নিয়ে প্রথম যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক আজারবাইজানিকে হত্যা ও নির্যাতনের মাধ্যমে কারাবাখ ছাড়তে বাধ্য করেছিল আর্মেনিয়ে বাহিনী। তারপর থেকে এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে তারা একটি স্বতন্ত্র আঞ্চলিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
ওই যুদ্ধে কারাবাখের আশেপাশে কালবাজার জেলার মতো কিছু অঞ্চল আর্মেনিয়া দখল করে নেয়। আজ রোববার থেকেই এসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে আজারবাইজান।
আজারবাইজানের প্রতি ঘৃণা এবং ভীতি থেকেই শনিবার নাগাদ অধিকাংশ আর্মেনিয় বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে এসব অঞ্চল ত্যাগ করে।
বার্তা সংস্থা এএফপি'র একজন সাংবাদিক মার্তাকার্ত জেলার চারেকতার গ্রামে অন্তত ছয়টি বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। পার্বত্য অঞ্চলের অনেক স্থানে এমন আগুন লাগানোর ঘটনায় আকাশে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখেছেন তিনি।
চারেকতার গ্রামের এক আর্মেনিয় দাহ্য তেল আর কাঠের মশাল ছুড়ে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার সময় ওই সাংবাদিককে বলেন, 'আমার বাড়ি তুর্কিরা ব্যবহার করবে সেটা আমি মেনে নিতে পারব না।'
তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক- নৃতাত্ত্বিক যোগাযোগ এবং ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে আর্মেনিয়রা আজারবাইজানিদের তুর্কি বলেই ডাকে।
ওই ব্যক্তি আরও জানান, 'আজ সবাই নিজ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে চলে যাবে। আমাদের মধ্যরাত পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। সবকিছু জ্বালিয়ে তুর্কিদের জন্য শুধু ছাই রেখে যাব।'
শুক্রবারও চারেকতার গ্রামে ১০টি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। আজারবাইজানের ফিরে পাওয়া সব অঞ্চলেই এভাবেই ধবংসের চিহ্ন পিছু রেখে যাচ্ছে আর্মেনিয়রা। উভয় পক্ষের মধ্যে শতাব্দী প্রাচীন ঘৃণা ও বৈরিতা যা স্পষ্ট করেই প্রকাশ করে।