কেরালায় গর্ভবতী হাতিকে হত্যার ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
গর্ভবতী হাতিকে আতশবাজি ভরা আনারস খাইয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে সামাজিক গণমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠছে। এই প্রেক্ষিতে এই ঘটনায় জড়িত তিন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখমন্ত্রী পিনারায়ি বিজয়ন স্বয়ং। এরপরেই এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী কে. রাজু।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো।
হাতিটিকে হত্যা করা হয় কেরালার পালাক্কাদ জেলায়। জেলা পুলিশ প্রধান জি. শিবা বিক্রম জানান, পুলিশ আরও সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করতে অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া, আজ যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে পেশায় একজন রাবার সংগ্রহকারী শ্রমিক।
এদিকে কেরালার বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিস্ফোরকভর্তি আনারসটি মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা বিস্ফোরিত হলে, মাদী হাতিটি মুখে প্রচণ্ড জখম সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায়ও সে কাউকে আঘাত না করে পাশের একটি নদীতে নেমে পড়ে। মৃত্যুর আগে সেখানেই সে পানিতে তিনদিন ধরে দাঁড়িয়েছিল। এসময় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করা হলেও, হাতিটি পানি ছেড়ে উঠে আসেনি। সে মানুষের প্রতি তার সকল বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল। তিনদিন নরক যন্ত্রণা সহ্য করার পর গত ২৭ মে হাতিটি মারা যায়।
তারা আরও জানান, বন্য শূকরদের তাণ্ডব থেকে ফসলের ক্ষেত রক্ষা করতে খাদ্যের সঙ্গে বিস্ফোরক রেখে হত্যা করার চল রয়েছে। ঠিক সেভাবেই গর্ভবতী হাতিটিকে যেভাবে হত্যা করা হয়।
কেরালার মুখ্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষক সুরেন্দ্র কুমার জানান, বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি যিনি বিস্ফোরক সরবরাহ করে অন্যদের হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেছিল তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুরেন্দ্র কুমার আরও বলেন, গ্রামবাসী যেভাবে প্রাণীর চর্বি বা ফলের সঙ্গে বিস্ফোরক মিশিয়ে তা দিয়ে বন্য শূকর হত্যা করতো তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা চলছিল। কিন্তু এই প্রথম কোনো হাতিকে এভাবে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এটা অত্যন্ত গর্হিত এক রেওয়াজ।
এর আগে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন যে, তার সরকার এই ঘটনার তদন্ত করে বন্যপ্রাণী এবং মানুষের মাঝে সংঘাত কমিয়ে আনার দিকে বিশেষ জোর দেবে।
এক টুইট বার্তায় তিনি জানান, স্থানীয় গ্রামবাসী এবং বন্য প্রাণীকুল উভয়েই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নানা প্রকার নেতিবাচক পরিবর্তনের মুখে পড়েছে।