ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের আদলে স্থাপনা বানাল চীন
দেশের উত্তর-পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলের একটি মরুভূমিতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের আদলে স্থাপনা তৈরি করেছে চীন। গত রোববার স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে দেখা গেছে সেইসব স্থাপনা।
মার্কিন মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি ম্যাক্সারের তোলা ছবিগুলোর একটিতে দেখা যায়, মরুভূমির রেলপথের ওপর বসানো হয়েছে মার্কিন সামরিক বিমানবাহী রণতরীর আদলে তৈরি কিছু কাঠামো।
মার্কিন নৌবাহিনীর বিশেষ সাইট 'ইউএসএনআই নিউজ' বলছে, 'কাঠামোগুলোকে সামরিক লক্ষ্যবস্তু বলে মনে হচ্ছে।'
মার্কিন বিশ্লেষকদের ধারণা, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিশানা হিসেবে ব্যবহারের জন্য চীন, মার্কিন যুদ্ধজাহাজের আকৃতি দিয়ে বানিয়েছে এইসব কাঠামো।
বেইজিং অনেক বছর ধরেই জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ও পরীক্ষা চালিয়ে আসছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় চীন তার সামরিক ও পারমাণবিক শক্তি দ্রুত সম্প্রসারণ করছে বলে সতর্কও করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার ইউএসএনআই নিউজ জানায়, তাকলামাকান মরুভূমিতে একটি বিমানবাহী রণতরী ও দুটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারের মডেল বানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে ৬ মিটার চওড়া একটি রেল স্থাপনার ওপর বসানো রয়েছে জাহাজ আকৃতির একটি নিশানা। স্যাটেলাইটের ছবিতে ধরা পড়েছে এইসব কাঠামো।
বিশেষ সাইট ইউএসএনআই-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, "চীন মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের ওপর জোর দিয়ে জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে।"
সম্প্রতি চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক ক্ষমতা মার্কিনীদের বিশেষ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, চলতি বছরের শুরুতে শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে উড়তে পারে এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। তবে বেইজিং এমন ধারণাকে অস্বীকার করে জানায়, এটি তাদের নিয়মিত মহাকাশযান পরীক্ষা ছিল।
বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন নৌবাহিনী নিয়মিতভাবে সামরিক টহল দিয়ে থাকে; যুক্তরাষ্ট্রের দাবি এটি তাদের 'রুটিন মিশন'। অন্যদিকে, চীন ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশের দাবিদার। তবে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের দাবির সঙ্গে একমত নয়। ফলে চীনা সীমান্তবর্তী অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী ও মার্কিন মিত্ররাষ্ট্রগুলোর সুরক্ষার খাতিরে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিশ্রুতিতে ক্ষুব্ধ হয় চীন।
ওই অঞ্চলের প্রধান শিপিং রুট দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে বছরে ৩ ট্রিলিয়ন (২.২ ট্রিলিয়ন ইউরো) ডলার মূল্যের বাণিজ্য সম্পন্ন হয়।
এ কারণের দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের সার্বভৌমত্বের দাবিতে ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের সঙ্গে কয়েক দশক ধরেই দ্বন্দ্ব চলছে চীনের। তবে এই দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সংশ্লিষ্টতা উত্তেজনাকে ক্রমাগত বাড়িয়ে তুলছে।
- সূত্র- বিবিসি ও রয়টার্স