নারীর চেয়ে পুরুষের খরচই ১৬ শতাংশ বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের জন্য দায়ী
নানান ধরনের পণ্য ক্রয়ে পুরুষরা যে অর্থ ব্যয় করেন তার কারণে নারীদের চাইতে ১৬ শতাংশ বেশি জলবায়ু উষ্ণতা সৃষ্টিকারী গ্যাস নিঃসরণ হয়। খরচের পরিমাণ প্রায় একই হওয়ার পরও পণ্য নির্বাচনের ভিন্নতাই এক্ষেত্রে মূল কারণ। সবচেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে কারের ডিজেল ও পেট্রোলের জন্য পুরুষদের করা খরচ। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
জলবায়ু উষ্ণকারী গ্যাস নিঃসরণে লিঙ্গ ভিত্তিক প্রভাব ও পার্থক্য নিয়ে এর আগে খুব কম গবেষণাই হয়েছে। এব্যাপারে সাম্প্রতিক গবেষণার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, জলবায়ু সংকট সফলভাবে মোকাবিলা করতে হলে এই পার্থক্যকে অনুধাবন করে পদক্ষেপ নিতে হবে।
দুই লিঙ্গের মধ্যে পর্যালোচনামূলক এ গবেষনা করা হয় সুইডেনে। এতে দেখা যায়, খাদ্য ও ছুটি কাটাতে করা খরচে নারী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রেই তাদের সৃষ্ট মোট নিঃসরণের অর্ধেকের বেশি ঘটছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাংসের পরিবর্তে উদ্ভিদজাত খাদ্য গ্রহণ করলে এবং ছুটি কাটাতে বিমান বা ব্যক্তিগত গাড়িতে ভ্রমণের চাইতে ট্রেনের মতো গণপরিবহন ব্যবহার করলে মানবসৃষ্ট নিঃসরণ ৪০ শতাংশ কমে আসবে।
গবেষণা সংস্থা- সুইডিশ রিসার্চ কোম্পানি ইকোলুপের বিশেষজ্ঞ আনিকা কার্লসন কানায়েমা বলেন, "নারী ও পুরুষের মধ্যকার পার্থক্য আমলে নিয়ে সঠিক পরিবেশ নীতি গ্রহণ করা সম্ভব বলে আমরা মনে করছি,"
"উভয় পক্ষের ব্যয় প্রবণতা ছিল প্রচলিত ধ্যান-ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। যেমন; নারীরা গৃহসজ্জা, স্বাস্থ্য এবং পোশাকে বেশি অর্থ ব্যয় করেন। আর পুরুষরা করছেন গাড়ির জ্বালানি, ঘরের বাইরে খাদ্য গ্রহণ, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় এবং তামাকের পেছনে।"
বৈজ্ঞানিক সাময়িকী জার্নাল ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোলজিতে প্রকাশিত এ গবেষণায় অবশ্য কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত ভাড়া করা গাড়ি বা ট্যাক্সির জ্বালানি ব্যয়কে হিসাবে রাখা হয়নি। তবে এর আগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাড়িতে গাড়ি থাকলে সেটি চালিয়ে নারীদের তুলনায় পুরুষেরাই বেশি কর্মস্থলে যান। সে তুলনায় নারীরা গণপরিবহন বেশি ব্যবহার করেন।
এককভাবে সবচেয়ে বেশি বা এক- তৃতীয়াংশ দূষণ করছে ছুটির সময়ে করা ব্যয়। এক্ষেত্রেও নারী ও পুরুষ সমান অবস্থানে। "এটি প্রত্যাশিত মাত্রার চাইতেও অনেকগুণ" বলে উল্লেখ করেন কার্লসন কানায়েমা।
গবেষণায় পরিবার থাকা মানুষের খরচের তথ্য না থাকায় চাইতে একাকী জীবনযাপন করাদের তথ্যই গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ডায়েট পরিবর্তন ও ছুটি কাটানোর সময় করা নিঃসরণকে কমানর উপর গুরুত্ব দিয়েছি, কারণ এতে করে কাউকে নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি ক্রয়ের মতো বাড়তি খরচ করতে হবে না। শুধু একটু সতর্ক থাকলেই পরিবেশে বিরূপ প্রভাব অনেক কমাতে পারবেন তারা। তাছাড়া, এই লক্ষ্যটি আমরা চাইলেই এ মুহূর্তে অর্জন করতে পারি। এজন্য একই পরিমাণ টাকা দিয়ে কম দূষণকারী পণ্য কিনলেই চলবে।"
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান