লেবাননের বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৭৮, আহত ৪ হাজার
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জোড়া বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মানুষ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনুসন্ধান চালালে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকালে বন্দর এলাকার এই বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে।
লেবাননের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান বলেছেন ,অত্যন্ত বিস্ফোরক রাসায়নিক পদার্থের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছে এই বিস্ফোরণ দুর্ঘটনা। পরিকল্পিতভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি। তারা বলছেন গুদামে ছয় বছর ধরে মজুত রাখা অত্যন্ত বিপদজনক বিস্ফোরক থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এই ঘটনাকে বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন।
প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক টু্ইট বার্তায় বলেছেন কোন গুদামে ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিস্ফোরক অনিরাপদভাবে মজুত রাখার বিষয়টি 'অগ্রহণযোগ্য'।
বন্দর এলাকা থেকে পাওয়া ভিডিওতে প্রথম বিস্ফোরণ স্থল থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায়। টুইটারে অনেকে মোবাইল ফোনে তোলা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ভিডিও শেয়ার করেন। টুইটারে পোস্ট করা এই ভিডিওর সাথে বলা হয়, তারা বিস্ফোরণস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে থাকেন এবং বিস্ফোরণে তাদের ভবনের কাঁচ ভেঙে গেছে।
প্রথম বিস্ফোরণের পর আরেকটি আরও বড় বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় আশপাশের ভবনগুলো ঢেকে যেতে দেখা যায়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, বিস্ফোরণ এত শক্তিশালী ছিল যে তার মনে হয়েছিল তিনি মারা যাবেন। হাসপাতাল আহতদের ভিড়ে উপচে পড়েছে বলে বলা হচ্ছে।
বিবিসির একজন সংবাদদাতা জানান, কাছাকাছি হাসপাতালে এত বেশি আহত মানুষকে আনা হয়েছে যে সেখানে স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। দমকল কর্মীরা অনেকগুলো আগুন নেভাতে হিমশিম খেয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সভাপতিত্বে সুপ্রিম ডিফেন্স কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়েছে এবং সরকারকে রাজধানী বৈরুতে দু সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা জারির সুপারিশ করা হয়েছে। বুধবার জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।