বুল্লি বাই: বন্ধ করা হল ভারতে মুসলিম নারীদের হয়রানিমূলক ভুয়া অ্যাপ
ভারতে মুসলিম নারীদের হেনস্তায় 'বুল্লি বাই' অ্যাপ কাণ্ডে দেশটির দুইটি পৃথক রাজ্যের পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাপটির ডেভেলপার ও টুইটারে নারীদের ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ারকারী ব্যক্তিরা।
অভিযুক্তরা প্রায় ১০০ জনেরও বেশি মুসলিম নারীর ছবিসহ তাদের 'বিক্রির' বিজ্ঞাপন দিয়ে 'বুল্লি বাই' নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে নিলামে তুলেছিলেন। ভুক্তভোগী নারীদের মধ্যে খ্যাতনামা অভিনয়শিল্পী শাবানা আজমিসহ দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতির স্ত্রী, বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদদের মতো সুপরিচিত ব্যক্তিত্বও রয়েছেন।
এ ধরনের অ্যাপের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের হয়রানির ঘটনা এটিই প্রথম নয় ভারতে। প্রায় ছয় মাস আগে 'সুল্লি ডিলস' নামের আরেকটি অ্যাপের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের একইভাবে নিলামে তোলার ঘটনা ঘটেছিল। দ্বিতীয়বারের মতো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির পর ওয়েব প্ল্যাটফর্ম 'গিটহাবের' হোস্টকৃত 'বুল্লি বাই' নামের ওপেন সোর্স অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, আটককৃত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে কেবল জানানো হয়েছে, 'বুল্লি বাই' অ্যাপ কাণ্ডে বেঙ্গালুরু থেকে ২১ বছরের এক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াকে আটক করেছে মুম্বই পুলিশের সাইবার সেল।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সতেজ পাতিল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গিটহাবকে 'দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষে পরিপূর্ণ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সেইসঙ্গে, ফেডারেল সরকারের কাছে 'সুল্লি ডিলস' মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েও তিনি প্রশ্ন করেছেন টুইটারে।
সমালোচকদের মতে, ভারতের এককেন্দ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে ইন্টারনেট ট্রলিং বৃদ্ধি পাচ্ছে।
লেখিকা ও ভারতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মুখপাত্র নাজিয়া ইরুম বলেন, "শিক্ষিত মুসলিম নারীদের ওপর এ ধরনের অযাচিত আক্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য একটাই; তাদের কাছ থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া, যেন তারা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে না পারেন এবং ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারেন।"
- সূত্র: বিবিসি, হিন্দুস্তান টাইমস