ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ কী কী?
সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া সার্স-কোভ-২ এর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এর উপসর্গ এবং প্রতিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন সকলেই। এছাড়াও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সাথে এই ভ্যরিয়েন্টের রয়েছে বেশ কিছু পার্থক্যও।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সনাক্তের ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য হওয়ায় এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষরা।
তাছাড়া, এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনগুলোর প্রতিরোধ ব্যবস্থা ওমিক্রন ছাড়িয়ে যেতে পারে ধারণা করছেন অনেকে। তবে ফাইজার জানিয়েছে, তাদের এমআরএনএ ভ্যাকসিনের তিন ডোজ ওমিক্রনকে নিরপেক্ষ করতে সক্ষম এবং দুই ডোজ ভ্যাকসিন এই ওমিক্রনের প্রভাব কমাতে সক্ষম।
ওমিক্রনের বিস্তার রোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। তবে বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পূর্ববর্তী ভ্যারিয়েন্টগুলোর চেয়ে ওমিক্রনের লক্ষণ বেশ হালকা।
ওমিক্রনের উপসর্গ
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) থেকে প্রকাশিত করোনার উপসর্গগুলো হলো:
- জ্বর বা সর্দি
- কাশি
- শ্বাসকষ্ট
- ক্লান্তি
- পেশী বা শরীরের ব্যথা
- মাথাব্যথা
- স্বাদ বা গন্ধের নতুন ক্ষতি
- গলা-ব্যথা
- সর্দি
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
- ডায়রিয়া
তবে, সিডিসি জানিয়েছে এই তালিকাটি নির্দিষ্ট নয়। এর বাইরেও নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে রোগীদের।
যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সংস্থা জো কোভিড স্টাডি এ বিষয়ে একটি গবেষণা চালায়। গবেষণায় ৪০ লাখেরও বেশি অংশগ্রহণকারীদের ডেটা ব্যবহার করা হয়।
জো কোভিড-১৯ স্টাডি অ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্ট করা উপসর্গের তুলনা করে দেখা যায়, ওমিক্রন ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণগুলোর মধ্যে বেশ কিছু মিল রয়েছে।
প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওমিক্রন ও ডেল্টা দুই ভ্যারিয়েন্টের ফলেই রোগীদের সর্দি, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, হাঁচি এবং গলা ব্যথা হয়। এছাড়া, দুটি ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গ গুলোর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্যই দেখা যায় নি।
তবে, জো এর বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, সম্প্রতি করোনা আক্রান্তদের মধ্যে স্বাদ ও গন্ধের সক্ষমতা কমে যাওয়ার হার বেশ কম।
ওমিক্রন কি ফুসফুসকে প্রভাবিত করে?
ওমিক্রন সংক্রমণের উপসর্গের বিষয়ে ডাক্তারদের পরামর্শ সম্পর্কে জানতে সান্তা মনিকার সেন্ট জনস ফিজিশিয়ান পার্টনারস-এর ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান ডাঃ ডেভিড এম. কাটলারের সাথে কথা বলে মেডিকেল নিউজ টুডে।
ডাঃ কাটলার বলেন, রোগীদের মধ্যে প্রায়ই ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। তবে সেগুলো বর্তমানে প্রচলিত উপসর্গের চেয়ে তেমন আলাদাও নয়।
"ওমিক্রনের উপসর্গগুল সার্স-কোভ-২ এর অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতোই," তিনি বলেন।
তবে, ওমিক্রন মানুষের ফুসফুসে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওমিক্রন মূলত শ্বাসযন্ত্রের ওপরের ট্র্যাক্টকে সংক্রামিত করে বলে এটি হতে পারে বলে জানান তিনি। ডব্লিউএইচও এর ইনসিডেন্ট ম্যানেজার আবদি মাহামুদের মতে, এই কারণেই ওমিক্রনের উপসর্গ অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় হালকা।
তিনি বলেন, "আমরা অনেক গবেষণায় দেখেছি, ওমিক্রন শরীরের উপরের অংশকে সংক্রামিত করছে। ফলে, এর সংক্রমণে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; যা অন্য ভ্যারিয়েন্টে দেখা যায় না।" এ বিষয়ে আরও বিশদ গবেষণা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।