নিজের ইচ্ছামতো পোশাক পরা নারীদের অধিকার: প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
ভারতের কর্ণাটকে ছাত্রীদের হিজাব পরিধান ইস্যুতে চলমান বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন ভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একজন নারী কি পোশাক পরবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সম্পূর্ণ তার নিজের।
কংগ্রেস নেত্রী আরও বলেন, নারীদের তাদের ইচ্ছামতো পোশাক পরার অধিকার ভারতীয় সংবিধান তাদের দিয়েছে। তাই বিকিনি অথবা ঘোমটা কিংবা হিজাব বা জিনস, যাই হোক না কেন; একজন নারী তার ইচ্ছামতো যেকোনো পোশাক পরতে পারে। হিজাব বিতর্কে উত্তপ্ত কর্ণাটকে গত তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের নারী ক্ষমতায়ন বিষয়ক 'লাড়কি হু, লড় সাকতি হু' (আমি নারী, আমি লড়াই করতে জানি) স্লোগানের সাথে হিজাবের ইস্যুকে যুক্ত করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
এদিকে কর্ণাটকের গুটিকয়েক কলেজে শুরু হওয়া এ আন্দোলন এখন বিতর্কিত ইস্যু হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভারতে। শ্রেণীকক্ষে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার অধিকার চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শুরু করবেন হাইকোর্ট।
হিজাব বিতর্কে কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়াহ, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও শশী থারুরের মতো ব্যক্তিত্বদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস।
এর আগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক টুইট বার্তায় লেখেন, "শিক্ষাব্যবস্থার মাঝে হিজাবের মতো বিষয়কে এনে আমরা ভারতকন্যাদের ভবিষ্যত নষ্ট করে দিচ্ছি। মা সরস্বতী আমাদের সবাইকেই জ্ঞান দেন। তিনি কোনো ভেদাভেদ করেন না।"
চলমান বিতর্কের মাঝেই হিজাব পরিহিত এক নারী শিক্ষার্থীকে একদল পুরুষের হেনস্থা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নোবেলজয়ী নারী অধিকারকর্মী মালালাইউসুফজাই বলেছেন, নারীদেরকে হিজাব অথবা শিক্ষার মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা খুবই ভয়ঙ্কর।
বিজেপি নেতা অমিত মালভিয়া বুধবার এক টুইট বার্তায় বলেন, "হিজাব পরা কি কোনো সাংবিধানিক অধিকার? আর্টিকেল ২৫ এর আওতায় ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি সাংবিধানিক নৈতিকতার অধীনস্ত এবং সরকার চাইলেই আইনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা বজায় রাখতে এ ব্যাপারে বিধিনিষেধ জারি করতে পারে। এখন যদি জনসেবা খাতে নিয়োজিত, ইউনিফর্মধারী নারীরাও এসে হিজাব পরার দাবি জানায়, তখন কি হবে?"
মালভিয়া আরও মন্তব্য করেন, "কোরানের প্রথম শব্দ হচ্ছে 'ইকরা', যার অর্থ 'পড়'। কিন্তু কর্ণাটকে আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তা আর যাই হোক, জ্ঞানার্জনের ইচ্ছা তো নয়। বিশ্বাসের দোহাই দিয়ে তরুণীদের শিক্ষার বদলে হিজাবকে বেছে নিতে বলা হচ্ছে। সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নারীদেরকে আবদ্ধ করে রাখার এই প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।"