তেলের উৎপাদন বাড়ানোর বাইডেনের ফোনালাপের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি সৌদি আরব, ইউএই
বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তেল উৎপাদক সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে যোগাযোগে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের কাছে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার অনুরোধ জানালেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আলোচনার পরিকল্পনার বিষয়ে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, "আমরা একটি ফোনকলের আশা রাখলেও তা আর আসেনি।"
"এটি [সৌদি তেলের] স্পিগট চালু করার অংশ ছিল," তিনি যোগ করেন।
গত সপ্তাহে, পশ্চিমা অনুরোধ সত্ত্বেও তেলের উৎপাদন বাড়ায়নি ওপেক প্লাস।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিবাদ হিসেবে বাইডেন প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ান তেল আমদানি নিষিদ্ধ করে। এরপরই দ্রুত বাড়তে থাকে তেলের দাম। বর্তমানে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৩০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছে, যা ১৪ বছরে সর্বোচ্চ।
এ অবস্থায় তেলের সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
উপসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকান নীতির ফলে বাইডেন প্রশাসন চলাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে ওঠে।
এর পিছনের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরান পরমাণু চুক্তির নবায়ন, ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি হস্তক্ষেপের জন্য মার্কিন সমর্থনের অভাব এবং হুথিদেরকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায় যুক্ত করতে অস্বীকৃতি, সৌদি বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে মার্কিন সহায়তা। এছাড়া, চার বছর আগে ইস্তাম্বুল কনস্যুলেটে সৌদি হিট-টিম দ্বারা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার জন্য মামলার সম্মুখীন হওয়া প্রিন্স মোহাম্মদের ইস্যুতেও তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেল, গ্যাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
এছাড়া, বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেন, "সৌদি আরবের বর্তমান সরকারের মধ্যে খুব কমই সামাজিক মূল্যবোধ রয়েছে।"
চলতি সপ্তাহের শুরুতে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, বাইডেন এবং প্রিন্স মোহাম্মদের শীঘ্রই কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই এবং রাষ্ট্রপতির রিয়াদে ভ্রমণের কোনো পরিকল্পনা নেই।
অন্যদিকে, সৌদি আরব ইঙ্গিত দিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ওয়াশিংটনের সাথে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে তারা ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে নিজেদের হস্তক্ষেপের জন্য আরও সমর্থন চায়। এছাড়া, তাদের নিজস্ব বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রিন্স মোহাম্মদের জন্য আইনি সুবিধা চায় তারা।
২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত প্রিন্স মোহাম্মদ।
এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি জঙ্গিদের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংযত প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে উদ্বিগ্ন তারা।
বর্তমানে, মার্কিন তেলের বাজারের ঊর্ধগতি থামাতে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে উৎপন্ন তেল ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
- সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল