মারিউপোলে ৫টার মধ্যে আত্মসমর্পণের সময় বেঁধে দিল রাশিয়া, ইউক্রেনের প্রত্যাখ্যান
মারিউপোল শহরকে আত্মসমর্পনের জন্য দেওয়া রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর একটি আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন। মস্কোর সময় ভোর ৫টার মধ্যে আত্মসমর্পনের সময় বেঁধে দিয়েছিল তারা।
অন্যদিকে, দেশটির রাজধানী কিয়েভে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
এরই মধ্যে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিষয়ে আলোচনার জন্য পোল্যান্ড সফরের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মারিউপোল প্রায় চার সপ্তাহ ধরে রুশ বাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ থাকা সত্ত্বেও, ইউক্রেনীয় সরকার সোমবার তাদের আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করে।
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেছেন, আত্মসমর্পণের প্রশ্নই উঠতে পারে না।
"কোনো আত্মসমর্পণের কথা বলা যাবে না, অস্ত্র নামিয়ে রাখা যাবে না। আমরা ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে রাশিয়ান পক্ষকে জানিয়েছি," বলেন তিনি। অনলাইন নিউজ সাইট ইউক্রেনস্কা প্রাভদা থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
"আট পৃষ্ঠার চিঠিতে সময় নষ্ট না করে, শুধু একটি [মানবিক] করিডোর খুলুন," বলেন তিনি।
এদিকে রোববার রাতে একটি ব্রিফিংয়ে রাশিয়ান জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের পরিচালক কর্নেল-জেনারেল মিখাইল মিজিনসেভ বলেন, "একটি ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। যারা নিজেদের অস্ত্র নামিয়ে রাখবে তাদের সবাই মারিউপোল থেকে নিরাপদে বের হওয়ার নিশ্চয়তা পাবে।"
মিজিনসেভ বলেন, সোমবার মস্কোর সময় সকাল ১০টায় মারিউপোলের বাইরে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মানবিক করিডোর খোলা হবে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই ধরনের করিডোর খুলতে ব্যর্থতার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে রাশিয়া এবং ইউক্রেন। এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ না থাকলেও মিজিনসেভ সেসময় বলেছিলেন, ইউক্রেনীয় 'দস্যু', 'নব্য-নাৎসি' এবং জাতীয়তাবাদীরা দেশটিতে 'গণ সন্ত্রাস' চালায়।
২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে মারিউপোল সবচেয়ে ভারী বোমা হামলার শিকার হয়েছে। শহরের ৪ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগই সেখানে আটকা পড়ে আছে।
মারিউপোল সিটি কাউন্সিলের দাবি অনুযায়ী, গত সপ্তাহে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে রাশিয়ায় 'নির্বাসিত' করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে; বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি রোববার সিএনএনকে বলেন, আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ করতে ব্যর্থ হলে এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। তিনি আশা করছেন, ব্রাসেলসে চলতি সপ্তাহের ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে তাকে আরও সমর্থন দেওয়া হবে।
ইউক্রেনকে সমর্থনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করতে ন্যাটো মিত্র, জি৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সাথে শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ইউরোপ সফরে যাবেন বাইডেন।
এরপর শুক্রবার পোল্যান্ডে যাবেন তিনি। ওয়ার্সতে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
শুক্রবার পোলিশ সীমান্ত রক্ষীরা জানিয়েছে, রুশ আক্রমণ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেন থেকে ২ মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থী পোল্যান্ডে প্রবেশ করেছে।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান