সামনে আসছে বড় মন্দা, সতর্কতা ডয়েচে ব্যাংকের
চলতি মাসের শুরুর দিকে আসন্ন মার্কিন মন্দার পূর্বাভাস দেয় ডয়েচে ব্যাংক। এবার, ফেডারেল রিজার্ভের একগুঁয়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে ঠেকানোর জন্য সৃষ্ট একটি বড় মন্দার বিষয়ে সতর্ক করলো তারা।
ডয়েচে ব্যাংকের অর্থনীতিবিদরা মঙ্গলবার ক্লায়েন্টদের কাছে একটি প্রতিবেদনে লিখেন, "আমরা সামনে একটি বড় মন্দার সম্মুখীন হবো।"
ব্যাংকের মতে, বর্তমানে বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতি ফেডের ২ শতাংশ লক্ষ্যে ফিরে আসতে 'দীর্ঘ সময়' নেবে। তারা আরও সতর্ক করে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার এত বেশি বাড়াবে যে তা অর্থনীতিতে আঘাত করবে।
'আসন্ন মন্দা কেন প্রত্যাশার চেয়েও বাজে হবে' শিরোনামের এক প্রতিবেদনে ডয়েচে ব্যাংক এই দাবি করে।
ডয়েচের বিশ্লেষণ
ভোক্তাদের খরচ মার্চ মাসে ৮.৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত। অন্যদিকে, মুডি'স অ্যানালিটিক্স জানিয়েছে, বেকারত্বের হার শীঘ্রই পঞ্চাশের দশকের প্রথম দিকের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে আসবে।
এসব বিবেচনায় রেখে ডয়েচে ব্যাংক একটি সূচক তৈরি করেছে যা গত ৬০ বছরে মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের মধ্যকার তফাত এবং এই বিষয়ে ফেডের উল্লিখিত লক্ষ্যগুলো ট্র্যাক করে।
সেই গবেষণা অনুযায়ী, ফেড আজ ১৯৮০-র দশকের গোড়ার দিকের তুলনায়ও পিছিয়ে আছে। আশির দশকে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার রেকর্ড পরিমাণ বাড়াতে বাধ্য হয়।
তবে এক্ষেত্রে আশার বিষয় হলো, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে অর্থনীতি পুনরায় উঠে দাঁড়াতে পারবে বলে দেখা গেছে ডয়েচের গবেষণায়।
মন্দা অনিবার্য নয়: গোল্ডম্যান স্যাকস
ডয়েচে ব্যাংক যেখানে হতাশাবাদী, সেখানে অন্যান্য ব্যাংক রয়েছে বিপরীত অবস্থানে।
গোল্ডম্যান স্যাকস এটি স্বীকার করে যে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা 'খুবই চ্যালেঞ্জিং' হবে, কিন্তু তাদের মতে, মন্দা 'অনিবার্য নয়'।
"আমাদের মন্দার প্রয়োজন নেই। তবে, প্রবৃদ্ধির গতি কমাতে হবে আমাদের। এটিও মন্দার ঝুঁকি বাড়ায়," বলা হয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে।
অন্যদিকে, ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার মার্ক হেফেলে সোমবার একটি প্রতিবেদনে লিখেন, "বর্তমান লেভেল থেকে মুদ্রাস্ফীতি সহজ হওয়া উচিত, এবং আমরা মন্দার আশা করছি না।"
যুদ্ধ এবং কোভিড লকডাউনে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি
ডয়েচে ব্যাংক জানিয়েছে যে, বেশকিছু বিষয় মুদ্রাস্ফীতিতে
বিশ্বায়নের স্থিতিশীলতা না থাকা, জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে সাপ্লাই চেইন বিঘ্নিত হওয়া এবং চীনে কোভিড লকডাউন ইত্যাদি কারণে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি।
"মুদ্রাস্ফীতির অভিশাপ ফিরে এসেছে এবং এটি চলতে থাকবে," বলে ডয়েচে ব্যাংক।
মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকলে সুদের হার বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করতে বাধ্য হবে ফেড। মার্চে সুদের হার এক-চতুর্থাংশ বাড়িয়েছে তারা।
- সূত্র- সিএনএন