দাবা: চাল-বেচাল, সেকাল-একাল
খোলা জায়গায় প্রতিদিনই দাবা খেলা হচ্ছে। একদল দর্শক ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করছেন। এদের মধ্যে এক বৃদ্ধ খাঁটি দর্শক। প্রতিটি খেলা দেখছেন। খেলা শেষে চাল নিয়ে কথা বলেন। ভুল বা চমৎকারিত্ব কোথায়, তা-ও আলোচনা করছেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত খেলা দেখায় তাঁর উৎসাহের এক বিন্দু কমতি নেই। মানুষটি দাবা খেলা ভালোভাবেই বোঝেন, কথাবার্তা থেকে ধারণা করা যাচ্ছে। একদিন দেখা গেল নির্দিষ্ট খেলোয়াড় আসেনি। খেলা হয়তো হবেই না। ওই দাবাপ্রিয় মানুষটিকে বলল, আপনিই খেলুন না তাহলে আজকে! বৃদ্ধ আঁতকে উঠলেন, বাপ রে, খুবই ধৈর্যের খেলা! অত ধৈর্য নেই আমার!
দাবা খেলা নিয়ে এমন গল্প যিনি আমাদের শুনিয়েছেন, তিনি সৈয়দ মুজতবা আলী ছাড়া আর কেউই হতে পারেন না!
এ গল্প থেকে বুঝতে পারছি দাবা খেলায় অন্তত দুই রকম ধৈর্য আছে। একটি খেলোয়াড়ের ধৈর্য। অপরটি দর্শকের। ধৈর্যের পরীক্ষায় উতরে গেলেও বোদ্ধা দর্শক কখনোই খেলোয়াড়ের ভূমিকায় নামতে চান না।
আমাদের ছোটবেলায় শুনতাম, দাবা খেললে হাবা হয় না, বা এ জাতীয় একটি কথা। ব্যাখ্যায় বলা হতো, এ খেলায় মাথা খাটাতে হয়। খেললে ঢের বুদ্ধি বাড়ে। সে সময় দাবার দুটি নিয়মের কথা বলা হতো। আন্তর্জাতিক এবং ভারতীয়। বয়সীরা সাধারণত আন্তর্জাতিক নিয়মে খেলতেন না। আরেকটা কথাও শুনেছি হরহামেশা। তা হলো, সোভিয়েত ইউনিয়নে দাবা ছিল বাধ্যতামূলক খেলা। স্কুলে সবাইকে দাবা খেলতেই হতো।
১. দাবার জন্মস্থান কোথায়, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে ভারতেই খেলাটির জন্ম হয়েছে বলে বেশির ভাগ তার্কিক মনে করেন। 'বার্থ অব দ্য চেস কুইন' গ্রন্থে তেমন দাবি করেছেন মেরিলিন ইয়ালোম। ভারতে ষষ্ঠ শতকের পরই এর উদ্ভব ঘটেছে। সংস্কৃত ভাষায় দাবাকে বলা হতো চতুরঙ্গ। এ নাম দিয়ে রথ, হাতি, অশ্বারোহী এবং পদাতিক—এই চার সদস্যকে বোঝান হতো। এর সাথে রয়েছে রাজা, তার সেনাপতি—আর এই হলো দাবার মূল ঘুঁটি। প্রথম সাহিত্যে দাবার বর্ণনা পাওয়া গেছে ভারতে নয় পারস্যে। ৬০০ খ্রিষ্টাব্দে পাহলবিতে (ইসলাম পূর্ব পারস্যের লিখন পদ্ধতি) রচিত কারনামাক নামের প্রেমকাহিনিতে দাবার উল্লেখ পাওয়া যায়। তৎকালেই দাবা খেলা সম্মানের আসন করে নিয়েছে এবং সে আসন অনাগত শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বজায়ও রেখেছে।
পারস্য এ খেলাকে গ্রহণ করার সময় ঘুঁটিগুলোর নাম ফার্সিতে রূপান্তরিত করেছে। রাজা বদলে হয়ে গেল শাহ। এই শাহ কয়েকটি ইউরোপীয় ভাষায়ও গ্রহণ করা হয়। শাহ থেকেই লাতিন 'স্কাচুস' ইতালীয় 'স্কাকি', জার্মান 'শাহখ্', ফরাসি 'ইশেক' এবং ইংরেজি 'চেস'সহ অন্যান্য শব্দের জন্ম নিয়েছে।
দাবা ভারত থেকে কীভাবে পারস্যে গেল, তারও চমকপ্রদ বর্ণনা 'শাহনামা'য় দিয়েছেন পারস্যের কবি ফেরদৌসি। ভারতের এক রাজা ষষ্ঠ শতকে গজদন্ত এবং সেগুন কাঠের তৈরি দাবার ছক ও দাবা খেলার ঘুঁটিগুলোপাঠান পারস্যের সম্রাটের কাছে। রাজবার্তায় বলা হয়, খেলাটি যুদ্ধের প্রতীক। বার্তায় পারস্য সম্রাটকে ঘুঁটিগুলোর ভূমিকা নির্ণয় করার আহ্বান জানান ভারতের রাজা। পারস্যের কাহিনিতে পারস্যবাসীরা বিজয়ী হবেই এবং দরবারের এক জ্ঞানী ব্যক্তি দ্রুত দাবা খেলার প্রকৃতি বের করে ফেলতে সক্ষম হন। এবারে পারস্য সম্রাটের আদেশে দরবারের জ্ঞানী ব্যক্তিরা দ্রুততার সাথে পাশাজাতীয় একটি খেলা বের করেন এবং তার প্রকৃতি নির্ণয় করার জন্য ভারতের রাজার কাছে পাঠিয়ে দেন।
দাবার তুলনায় সরল হওয়া সত্ত্বেও রাজা বা তার সভাসদরা এ খেলার প্রকৃতি নির্ণয়ে ব্যর্থ হন। এ জন্য রাজাকে চড়া মূল্য দিতে হয়। দুই হাজার উট ভর্তি করে সোনা, কর্পূর, তিমির অন্ত্রজাত অ্যাম্বারগ্রিস এবং সুগন্ধী কাঠের পাশাপাশি পোশাক-পরিচ্ছেদ, রুপা-মুক্তা এবং রত্নাদিসহ এক বছরের ব্যয় নির্বাহের অর্থ শাহের কাছে প্রেরণ করতে বাধ্য হন ভারতের রাজা।
এদিকে শাহনামায় দাবার উৎপত্তি নিয়েও কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে:
এই গল্পে, ভারতীয় এক রানি তার দুই সৎপুত্র তালহান্দ এবং গাভের মধ্যে বৈরিতায় যারপরনাই বিরক্ত ছিলেন। সিংহাসনের ওপর নিজ নিজ দাবি নিয়ে এ শত্রুতার জন্ম। রানির কাছে খবর গেল যে তালহান্দ যুদ্ধে মারা গেছে। গাভ তাকে হত্যা করেছে বলেই ধরে নেওয়ার মতো কারণ রানির ছিল। কিন্তু রাজ্যের জ্ঞানী ব্যক্তিরা এবারে যুদ্ধক্ষেত্রের অনুরূপ ছক তৈরি করলেন। তারা রানির কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন যে তালহান্দ তার ভাইয়ের হাতে না যুদ্ধজনিত ক্লান্তিতে মারা গেছেন। 'শাহনামা'র এ পর্বে ব্যবহৃত ফার্সি শব্দ 'শা'হ মা'ত অবশেষে আসে আমাদের কাছে 'চেক মেট' হয়ে এসেছে। এই দুই আসল শব্দের আক্ষরিক অথর্ রাজা হতবাক হলেন বা ক্লান্ত হলেন। তবে শব্দগুচ্ছটি সাধারণভাবে 'রাজা মারা গেছেন' হিসেবে অনুবাদ করা হয়।
দাবা খেলার আবিষ্কারককে পুরস্কৃত করতে গিয়ে রাজার নাকাল হওয়ার কাহিনি আরেক দফা শুনি। এ গল্পটি বর্ণনা করা হয়েছে ফেরদৌসির 'শাহনামা'য়। এতে বলা হয়েছে ভারতীয় এক রাজার জন্য দাবা খেলার আবিষ্কার করেন সিসা ইবনে দাহির নামের এক ব্যক্তি। খেলাটিকে এতই ভালো লাগল যে প্রতিটি হিন্দু মন্দিরে দাবার ছক রাখার নির্দেশ দিলেন রাজা।
এবারে রাজদরবারে সিসার তলব পড়ল। রাজা তাঁকে বললেন, পুরস্কার হিসেবে যা চাইবে তাই পাবে। কিন্তু হিরে-জহরত, মণি-মাণিক্য-রত্ন, সোনা-রুপা, লাখেরাজ সম্পত্তি, জমিদারি কিছুই চাইলেন না সিসা।
সেই আবিষ্কারকের চাহিদা শুনে হতবাক হলেন রাজাধিরাজ। দাবায় ৬৪টি ঘর রয়েছে। তিনি চেয়েছেন, প্রথম ঘরে একটি গমের দানা দিতে হবে। তার পরের ঘরে দিতে হবে এর দ্বিগুণ, মানে দুটো। এভাবে প্রতি ঘরে আগের তুলনায় দ্বিগুণসংখ্যক গমের দানা দিয়ে ভরে দিতে হবে এই চৌষট্টিটি ঘর। ব্যস, এই কেবল তার চাহিদা।
রাজা যারপরনাই হতাশ হলেন শুনে। এমন বুদ্ধিমান লোকের এত সামান্য চাওয়া!
কিন্তু রাজগণিতবিদেরা কয়েকদিন এক নাগাড়ে হিসাব কষে রাজাকে জানালেন, আবিষ্কারকের চাহিদা মোতাবেক শস্যদানা পরিশোধ করার ক্ষমতা গোটা রাজত্বের নেই। এমনকি দুনিয়ার সব রাজা মিলেও তা পরিশোধ করতে পারবেন না! সারা পৃথিবী জুড়ে শস্য চাষ করেও ফলানো যাবে না এত শস্য। বুদ্ধির দাবায় রাজা ভালোভাবেই হেরেছিলেন সেদিন। রাজা বুঝলেন, দাবা খেলতে যত বুদ্ধি লাগবে তার চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান এই দাবার আবিষ্কারক সিসা বিন দাহির!
২. দাবা নিয়ে কৌতুকে ফিরি। সোভিয়েত জমানার গপ্প। পার্কে বসে এক ছেলে তার কুকুরের সাথে দাবা খেলছে। অবাক হয়ে একজন বললেই বসলেন, বাহ, এত বুদ্ধি কুকুরের! জবাবে ছেলেটি বলল, না না, অত বুদ্ধি নেই ওর। আমি এখনো তিন-এক গেমে এগিয়ে আছি।
স্বামী দেরি করে বাসায় ফিরলে স্ত্রী জানতে চাইলেন:
—কোথায় ছিলে এতক্ষণ?
—বন্ধুর বাসায়।
—কী করছিলে?
—দাবা খেলছিলাম।
—তাহলে তোমার শরীরে মদের গন্ধ কেন?
—তবে কিসের গন্ধ থাকবে? দাবার?
ছাত্র এসে জানাল অধ্যাপককে, দারুণ এক কম্পিউটার তৈরি করেছি—যা প্রায় মানুষের মতোই দাবা খেলতে পারে।
অধ্যাপক উত্তেজিত হয়ে বললেন, বাহ! ও কি নিজে নিজে দাবা খেলা শিখতে পারে এবং মানুষের মতো চিন্তাভাবনা করতে পারে?
—ঠিক তা নয়। খেলায় হারলে এই কম্পিউটার একেবারে মানুষের মতো অজুহাত দেখাতে পারে!
৩. ট্রেন থেকে তড়িঘড়ি নেমে গেলেন কাজী মোতাহার হোসেন
নাই টেলিগ্রাম (নামের অ্যাপ), নাই হোয়াটসঅ্যাপ, নাই জুম, নাইরে ইন্টারনেট। মানে চিঠিই যখন যোগাযোগের মাধ্যম, সে যুগের কথা। তখন দেশ-বিদেশের দাবাড়ুদের সাথে খেলা চলত চিঠিতে। চিঠিতে চাল জানিয়ে দেওয়া হতো। উত্তরে দেওয়া হতো পাল্টা চাল। চলত এরকম। মাসের পর মাস, কিংবা বছরব্যাপী।
অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন এ রকম পোস্টকার্ড চালাচালি করে দেশ-বিদেশের অনেক দাবাড়ু বন্ধুর সঙ্গে এভাবে খেলা চালিয়ে যেতেন। একবার ট্রেনে তিনি ভারত সফর করছেন। ট্রেনটা এক জংশন স্টেশনে থামতেই কাউকে কিচ্ছু না বলেই তড়িঘড়ি নেমে গেলেন তিনি। ফেরার নামগন্ধ নেই। ট্রেন ছাড়ার শেষ বাঁশি বেজে উঠতেই ছুটতে ছুটতে এসে নিজ কামরায় উঠলেন।
কী ব্যাপার? কোথায় গিয়েছিলেন? জানতে চাইলেন সহযাত্রী।
অধ্যাপক জবাব দিলেন, পোস্টকার্ডে যাদের সঙ্গে দাবা খেলি, তাঁদেরই একজন থাকেন এ শহরে। মওকা যখন পাওয়া গেল, তখন সশরীরেই গিয়ে দুটো চাল দিয়ে এলাম!
৪. দাবার জগতে হাওয়া বদলে গেছে
এবারে দাবার জগতে প্রতারণা বা জালিয়াতি করে খেলায় জেতার অভিযোগ উঠেছে। উদীয়মান দাবা তারকা ১৯ বছর বয়সী হ্যান্স নাইম্যান এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মাগনুস কার্লসনের নাম এবারে সংবাদমাধ্যমে শুধু খেলাকে কেন্দ্র করে আসছে না। নাইম্যানের কাছে হেরে যাওয়ার পর কার্লসনের মনে হয়, নাইম্যান প্রতারণা করেছেন।
কিন্তু এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নাইম্যান চেস ডটকমে অনলাইন ম্যাচে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। চেস ডটকম এ নিয়ে তদন্ত করেছে। তাদের প্রতিবেদন অনুসারে মনে করা হয় যে নাইম্যান সম্ভবত কমপক্ষে ১০০টি অনলাইন ম্যাচে প্রতারণা করেছেন। তবে এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে কার্লসনের সাথে ম্যাচে নাইম্যান প্রতারণা করেননি। তারপরও অনলাইনে নাইম্যানের সাথে এক চাল দেওয়ার পর প্রতিযোগিতা থেকে সরে যান কার্লসন।
নাইম্যান দাবি করেন, ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সে অনলাইন প্রতিযোগিতায় তিনি প্রতারণা করেছেন।
জিনজার জিএম নামে পরিচিত জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সাইমন উইলিয়াম প্রশ্ন তোলেন, যৌনক্রীড়া পণ্যের মতো বস্তু ব্যবহার করে দাবা প্রতিযোগিতাতেও প্রতারণা করা কী সম্ভব? বিস্তারিত ব্যাখ্যা না করে তিনি ইঙ্গিত করেন, যৌনক্রীড়া পণ্যে মানে ভাইব্রেটরে যে কম্পনের সৃষ্টি হয় তাকে কাজে লাগিয়ে দাবায় প্রতারণার তথ্য জোগানো হয়তো সম্ভব।
এখানে উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক প্রথমে এমন দাবি করেছিলেন। এবার ইলনের সে দাবি খতিয়ে দেখেন ক্রীড়া ভাষ্যকার। এরপর এ দাবিকে সোজাসুজি উড়িয়েও দেন। তিনি একে হাস্যকর বলেন। এ অভিযোগে চমৎকারিত্ব আছে—এ কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, না, এভাবে প্রতারণা করতে গেলে তা কাজ করবে না।
এদিকে নিজেকে 'পরিচ্ছন্ন' প্রমাণ করতে বিবস্ত্র হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে রাজি আছেন বলে ঘোষণা করেন নাইম্যান।
আর নাইম্যানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ নিয়ে যখন আসর সরগরম, তখন বোঝা গেল আরেক কাহিনি। দাবা খেলার ধরন বদলে গেছে। বদ্ধ জায়গায় খেলা হচ্ছে না। হাতে গোনা কিছু দর্শক অতিশয় আগ্রহ নিয়ে খেলা দেখছেন না। সমাজে খানিকটা আলাদা হিসেবে পরিচয় পেয়েছেন এমন ব্যক্তি বা বালকরা দাবা খেলায় মেতে উঠছেন না। এবারে দাবায় আসছেন উদ্দীপ্ত, হইচই করে মাতিয়ে তোলায় পটু, হুল্লোড়বাজ একদল তরুণ। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানে এক প্রতিবেদনে সিন ইংগেল লিখেছেন, অনলাইনে, চটকদার দাবা 'স্ট্রিমারদের' একটি নতুন প্রজন্মের উদ্ভব ঘটেছে; যাদের মধ্যে কেউ কেউ বছরে কয়েক হাজার স্টারলিং পাউন্ড উপার্জন করেন। আরও লাখ লাখ মানুষ এখন অনলাইনে খেলছে। খেলা দেখছে। এদিকে শীর্ষ স্তরে প্রতারণা, অত্যধিক মদমত্ততা, যৌনলিপ্সা অভিলাষী, এমনকি মৃত্যুর হুমকি দেওয়ার গালগল্পও শোনা যায়। দাবার অনলাইন জগৎ বিশাল অর্থের দুনিয়া হয়ে উঠেছে। সেখানে অর্থ সেখানে অনর্থ থাকবেই। দাবার আসরে তাই আজ সবকিছুরই দেখা মেলে।
৫. কাজী আনোয়ার হোসেন কেন দাবা থেকে সরে গেলেন!
কাজী মোতাহার হোসেনের সন্তান, বাপ কা বেটা হিসেবে প্রথম জীবনে তুখোড় দাবা খেলতেন কাজী আনোয়ার হোসেন, বাংলা থ্রিলার সাহিত্যের দিকপাল। স্থানীয় নানা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন অনেকবার। হঠাৎই একদিন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন কাজী আনোয়ার। কেন এমন সিদ্ধান্ত, তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন রহস্য পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ও দুর্দান্ত অনুবাদক আসাদুজ্জামান।
কাজী আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, খেলতে ভালোই লাগত, জিততেও। কিন্তু বিজয়ের অন্য প্রান্তে থাকে আরেকজনের পরাজয়। পরাজিত প্রতিপক্ষের করুণ মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেকে অপরাধী মনে হতো আমার। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসার।