জলদস্যুর জাহাজ: কাপ্তান থেকে খালাসি ঘাম ঝরাত সবাই
চলচ্চিত্র দেখে বা বই পড়ে চট করে মনে হতে পারে, জলদস্যু হইতাম থাকতাম সুখে! যখন-তখন জাহাজ লুট করে হাতিয়ে নেওয়া যেত হিরে-জহরত। তারপর বুনো উৎসবে মেতে উঠতে বাধা দেওয়ার আর কেউ ছিল না। কথাটা আংশিক সত্য। বাকি অংশ ঘাটতে গেলে মিলবে কেবল কঠোর পরিশ্রম। ওয়ার্ল্ড হিস্টোরি এনসাইক্লোপেডিয়ায় এ নিয়ে আরও লিখেছেন মার্ক কাটরাইট।
জলদস্যুদের প্রথম পরিচয় তারাও নাবিক। জলদস্যুর সোনালি যুগে (১৬৯০-১৭৩০) জাহাজ চালানোর জন্য দক্ষতার প্রয়োজন ছিল। একই সাথে জাহাজসহ সাজসরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণেও ঘাটতি হওয়ার উপায় ছিল না। জলদস্যুকে দক্ষ নাবিক হতেই হবে। তাড়া করে বাণিজ্য জাহাজ পাকড়াও করা। কিংবা সাগরের বুকে দ্রুত ধাবমান সশস্ত্র নৌবাহিনীর জাহাজের কবল থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষ নৌচালনার ফলিতবিদ্যার বিকল্প কিছুই ছিল না। ১৭ বা ১৮ শতকের সাগরগামী জাহাজের তনদুরস্তির জন্য জলদস্যুর জাহাজের কাপ্তান থেকে খালাসি পর্যন্ত সবারই গতর খাটাতে এবং হাতে হাতে মিলিয়ে কাজ করতে হতো।
জলদস্যু জাহাজের কাপ্তানই প্রায় সময়ই সব অভিযানের নীলনকশা করত। জলদস্যুকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার আগে তার অতীত খুঁজতে গেলে দেখা যাবে, হয়তো জাহাজটি সেই কিনেছে। বৈধভাবেই জাহাজের কাপ্তানের পদ পেয়েছে। ভাড়াটে নৌসেনা বা প্রাইভেটিয়ারের জাহাজের কর্মকর্তা ছিল। জলদস্যুরা তাদের জীবনে স্বাধীনতাকে সবচেয়ে প্রিয় করে তুলেছিল। অবাধ স্বাধীনতার জোরেই বেশির ভাগ জলদস্যু-জাহাজের কাপ্তানকে নির্বাচন করত জাহাজের নাবিকেরা। হরদম মাতব্বরি বা মেজাজ দেখায় এ রকম কাপ্তানকে মোটেও পছন্দ করত না জলদস্যুরা। বাণিজ্যিক জাহাজ বা নৌবাহিনীর কঠোর জীবনযাত্রা থেকে মুক্তির শ্বাস নেওয়ার আশায় অনেকে জলদস্যুর ঢুকেছিল।
এ কথাও ঠিক, জলদস্যুদের জাহাজেও নানা আইনকানুন থাকত। বার্থলোমিউ রবার্টসের (১৬৮২-১৭২২) মতো সফল জলদস্যু কাপ্তানরা নিজেদের জাহাজে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে সবাইকে বাধ্য করত। তার নেতৃত্বাধীন জাহাজে জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কাপ্তান পদকে চিরস্থায়ী বলে ধরে নেওয়া ঠিক হতো না। 'খ্যাতিমান' জলদস্যু চালর্স ভেইন ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজে হামলা করতে অস্বীকার করেছিল। তার জাহাজের নাবিকেরা তা সুবোধ বালকদের মতো মেনে নেয়নি। বরং তার বিরুদ্ধে কাপুরুষতার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ভেইনকে সরিয়ে 'ক্যালিকো জ্যাক'কে কাপ্তান বানানো হয়। ভেইন পরবর্তীকালে জাহাজডুবি থেকে রক্ষা পেলেও ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। ফাঁসিকাষ্ঠে প্রাণ দিতে হয়েছিল তাকে।
কাপ্তান
সোনালি যুগের জলদস্যু কাপ্তানরা নজরকাড়া পোশাক-আশাক পরত। আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দাড়িতে রিবন লাগাত ব্ল্যাকবিয়ার্ড। টুপি থেকে ঝুলিয়ে রাখত ধীরলয়ে জ্বলন্ত তিন-তিনটা মোটা দড়ি বা ফিউজ। এতে মাথার চারপাশে সৃষ্টি হতো ধোঁয়াশা। মানুষটিকে দৈত্য-দানব বা অতিপ্রাকৃতিক চেহারাধারী কিছু বলে মনে হতো। লড়াইয়ের আগে দুশমনের মনের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবেই এ কাজ করত ব্ল্যাকবিয়ার্ড। অন্যদিকে জলদস্যু কাপ্তান রবার্টস পরত লাল সিল্ক, পাখির পালকের টুপি এবং হিরের নেকলেস। সফল জলদস্যু নেতার প্রতীক হয়ে উঠেছিল লম্বা কোট এবং দামি পিস্তল। নেতৃত্ব, নৌচালানোর দক্ষতা এবং ব্যক্তিত্বের জন্য অন্যদের তুলনায় লুটের দ্বিগুণ বখরা জুটত কাপ্তানের। সাধারণ জলদস্যু ধরা পড়লে তার ফাঁসি হওয়ার আশঙ্কা থাকত। কিন্তু কাপ্তান ধরা পড়লে ফাঁসিতে ঝোলা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। এদিকে কাপ্তান কিডের (১৭০১) মতো দুর্ধর্ষ জলদস্যু সরদার ধরা পড়ার পর কেবল ফাঁসি দেওয়া হয়নি। অন্যদের প্রতি হুঁশিয়ারি হিসেবে তার লাশও শিকলে বেঁধে বছরে পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। শিকল বাধা অবস্থায়ই তার লাশ পচে-গলে কঙ্কাল হয়ে থেকেছে।
কোয়াটার মাস্টার
জলদস্যু জাহাজে কাপ্তানের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হলো কোয়াটারমাস্টার। জাহাজ ঠিক পথ ধরে চলছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব কোয়াটারমাস্টারের। নাবিকদের তদারকিরও ভার তার কাঁধেই থাকত। হামলার নেতৃত্ব দেওয়া, জলদস্যুদের শিকার হয়েছে এমন জাহাজ থেকে কী কী লুটপাট করতে হবে, তা-ও ঠিক করা ছিল কোয়াটারমাস্টারের কাজ। লুটের মালামাল সাধারণ নাবিকদের মধ্যে সমভাবে ভাগের ব্যবস্থাও তাকেই নিতে হয়। অন্যদিকে কাপ্তানের মতোই তার ভাগে লুটের মালামাল সাধারণ নাবিকদের তুলনায় দ্বিগুণই জুটত। নাবিকেরা যদি কাউকে শাস্তি দেওয়ার জন্য ভোট দিত, তবে তা-ও কার্যকর করত কোয়াটারমাস্টার। জলদস্যু-কাপ্তান যদি আরেকটি জাহাজ দখল করতে পারত, তবে সচরাচর নতুন জাহাজের কাপ্তানের পদের ছিকাও ছিঁড়তে পারত তারই বরাতে।
নেভিগেটর
জলদস্যুর জাহাজে অনেক সময়ই বিশেষজ্ঞ নেভিগেটর বা সাগরপথ সন্ধানীকের রাখা হতো। জাহাজের কাপ্তান এবং কোয়াটারমাস্টার সাগরপথে চলাচলের দুর্গম কাজ অবশ্যই জানে। তবে এ কাজে একজন বিশেষজ্ঞকে বসানো হলে বেশি সুফল মেলে। মানচিত্র, তটরেখা, বাতাসের গতি এবং আবহাওয়াসংক্রান্ত বিষয়ে দক্ষতা নেভিগেটরের থাকে। সে যুগে দ্রাঘিমাংশ নির্ভুলভাবে মাপা সহজ ছিল না; তাই এ কাজের জন্য অভিজ্ঞতার বিকল্প ছিল না। সাগরপথ নির্ণয়ে ঝানু ব্যক্তিরই কেবল সঠিকভাবে ব্যবসায়ী জাহাজের চলাচলের পথ ভালোভাবে জানা থাকত। গোপনে কোথায় ওত পেতে থাকতে হবে বুঝতে পারত। কোন পথে ঝুঁকি রয়েছে, তারা টের পেত। এমন সব কাজে রহস্যময় দক্ষতার জন্য কখনো কখনো নেভিগেটরকে সম্মান দেখিয়ে শিল্পী নামেই ডাকা হতো।
সারেং বা বোটসওয়েন (বোসুন)
সারেং বা বোটসওয়েনকে (বোসুন) জাহাজ চালানোর কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাল, পালসংক্রান্ত দড়াদড়ি এবং নোঙরের মতো সাজসরঞ্জাম ঠিকঠাক আছে কি না, দেখার দায়িত্ব তার। সাধারণ নাবিকের তুলনায় লুটের দেড় গুণ অংশ জুটত তার। বড় বড় জাহাজে সারেঙের সহযোগী থাকত। বোসুন মেট বা সারেং সহযোগী নামে ডাকা হতো তাদের।
কর্মকর্তা
জলদস্যু জাহাজে নির্দিষ্ট পদবি না থাকলেও অভিজ্ঞ নাবিকেরা নেতা হিসেবে কাজ করত। সাধারণ নাবিক বা মাঝিমাল্লাদের দৈনিকের কাজগুলো সংগঠিত করা তার দায়িত্বের অংশে পরিণত হতো। সাধারণ নাবিকদের তুলনায় কর্মকর্তারা লুটের মালামালের এক-চতুর্থাংশ অংশ বেশি পেত।
ডাক্তার এবং কাঠমিস্ত্রি
জলদস্যু জাহাজের ডাক্তার থাকলে সুবিধার শেষ নেই। কিন্তু সে রকম ঘটনা একেবারেই বিরল। ডাক্তারহীন অবস্থায় জাহাজের কাপ্তানকেই সবার অসুখ-বিসুখ সারাবার জন্য জাহাজের ওষুধের বাক্সের ওপর নির্ভর করতে হতো। চোট সামলানোর কাজে জরুরি পরিস্থিতিতে কাঠমিস্ত্রির সহায়তাও নিতে হতো। গুরুতর অস্ত্রোপচারের কাজটি করত কাঠমিস্ত্রি।
সাধারণভাবে জাহাজ মেরামত করাই ছিল কাঠমিস্ত্রির প্রধান দায়িত্ব। ঝড়, শত্রুর আক্রমণ বা সামুদ্রিক প্রাণীর হামলায় জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি সারিয়ে তোলার কাজই করত কাঠমিস্ত্রি। এদিকে জলদস্যুরা যদি কোনো নতুন জাহাজ দখল করত, তাকে দ্রুততর করে তোলা এবং প্রয়োজনে জলদস্যুদের উপযোগী করে শক্তিশালী করার জন্য পরিবর্তন ঘটত কাঠমিস্ত্রির হাতে। জাহাজে কামান বসানোর ব্যবস্থা করা, বাড়তি ওজন কমানোসহ আরও কিছু কাজ করতে হতো। দক্ষ কাঠমিস্ত্রি বেশির ভাগ সময়ই স্বেচ্ছায় যেত না। তাকে জোরজবরদস্তি করে জাহাজের সঙ্গী করা হতো। সাধারণ নাবিকের তুলনায় লুটের মালের দেড় গুণ পেত সে।
পিপে নির্মাতা এবং পাল নির্মাতা
পিপের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। জাহাজের নানামুখী পাত্র হিসেবে কাজে লাগানো হতো পিপেকে। এতে শুকনো খাবারদাবার রাখা হতো। পানি রাখা হতো। রাম এবং বারুদও রাখার জন্য ব্যবহার হতো পিপে। পিপেতে যেন বাতাস না ঢোকে। যথাসাধ্য পানিরোধীও করা হতো। জাহাজে পাল নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। বিশেষ করে সংঘর্ষের সময় এ ক্ষতির মাত্রা বাড়তে পারত। এই পাল ঠিক রাখা, ছিঁড়ে যাওয়া পালকে সেলাই করাসহ নানা কাজ করতে হতো পাল নির্মাতাকে। তার সেলাইয়ের বিদ্যায় দক্ষতাকে অন্যভাবেও কাজে লাগানো হতো। শল্যচিকিৎসক না থাকায় জাহাজের নাবিকদের ক্ষত সেলাই করার জন্য পাল নির্মাতাকে স্মরণ করতে হতো। পালের জাহাজের যুগে পাল নির্মাতাকে প্রধান প্রকৌশলীয় ভূমিকা পালন করতে হতো।
গানার
জলদস্যু জাহাজের কামানচালকদের গুলি ছোড়ার নির্দেশ দিত গানার। তার সহযোগীকে গানার মেট বলা হতো। জলদস্যু জাহাজের একটি কামান চালাতে ৪ থেকে ৬ জন লাগত। নানা মাপের গোলা ছোড়া হতো। কতটা দূরে ছোড়া হবে, গোলার মাপ এবং ওজন অনুযায়ী কামানে বারুদপূর্ণ করতে হতো। লক্ষ্যবস্তু সাধারণভাবে চলমান থাকত। এসব বিবেচনায় নিয়ে কামান দাগার সিদ্ধান্ত নিতে হতো গানারকে। এদিকে জলদস্যুরা কখনোই চাইত না বাণিজ্যিক জাহাজের মারাত্মক ক্ষতি হোক। তাতে জাহাজের মালামালের ক্ষতি হবে। আখেরে জলদস্যুদের লাভও কমে যাবে। সংঘাতের সময় ছাড়া অন্য সময়ে জলদস্যুর জাহাজের কামানচালককেও নানা কাজ করতে হতো। একজন সাধারণ নাবিকের তুলনায় গানার লুটের মালামালের ভাগ দেড় গুণ বেশি পেত।
রাঁধুনি
জলদস্যুরা সাধারণভাবে আটক জাহাজের খাবারদাবার সাবাড়ে দিত। ডাঙায় থাকার সময় মদ্যশালায় খাবারের কাজ সারত। কিন্তু সাগরে শিকার তাড়া করার সময়টিতে রাঁধুনির দরকার পড়ত। রাঁধুনির কাজ সাধারণভাবে করত অভিযানে অঙ্গ হারানো জলদস্যু। জলদস্যুদের এ বিষয়টি রবার্ট লুইস স্টিভেনসনের নজর এড়ায়নি। ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রকাশিত ট্রেজার আইল্যান্ডে দেখা যায় লং জন সিলভার জলদস্যু হওয়ার আগে রাঁধুনির কাজ করেছিল।
যন্ত্রশিল্পী
সব ধরনের জাহাজ এমনকি জলদস্যুদের জাহাজেও বেহালাবাদক এবং শিঙাবাদক থাকত। দড়ি টানা বা পাল তোলার সময় কাজে ছন্দ আনার জন্য তারা বেহালা বাজাত বা শিঙা ফুঁকত। টাইটানিক যখন ডুবছে, বাদকদল তখনো বাদ্য বাজিয়ে তুলছেÑচলচ্চিত্রটির এ দৃশ্যের কথা অনেকেরই মনে উঁকি দিতে পারে। এদিকে আক্রমণের সময়ও ভয়াল পরিবেশ তৈরির জন্য যন্ত্রশিল্পীরা তৎপর থাকত। এ ছাড়া জাহাজের নাবিকদের ইচ্ছাতে বিনোদন দেওয়ার জন্যও তৎপর হতো যন্ত্রশিল্পীরা।
সাধারণ নাবিক
জলদস্যুর খাতায় কারা নাম লেখাত? সাধারণ নাবিক হতো কারা? সাবেক নৌসেনা, প্রাইভেটিয়ার নামে পরিচিত ভাড়াটে নৌসেনা সাধারণভাবে জলদস্যু হয়ে উঠত। এদিকে জলদস্যু জাহাজের সাধারণ নাবিকের বেশির ভাগই ছিল বিদ্রোহী, বন্দী নাবিক এবং কম বেতন কিন্তু কঠিন কিংবা শক্ত কাজে অতিষ্ঠ হয়ে পালিয়ে আসা লোকজন। দুঃসাহসিক সাগরজীবনের টানেও কিছু তরুণ বয়সী ছেলে যোগ দিত। আর যোগ দিত পালিয়ে আসা কিছু দাসও।
ক্যারিবিয়ানের সোনালি যুগের জলদস্যু দলে বিভিন্ন দেশের লোকজন পাওয়া যেত। বেশির ভাগই ব্রিটিশ বা মার্কিন উপনিবেশ থেকে আসা মানুষ ছিল। দাস বিশেষ করে কালো দাসদের জাহাজ চালানোর কোনো অভিজ্ঞতা থাকত না। তাদের দিয়ে কায়িক শ্রমের কাজ করানো হতো। কিন্তু জলদস্যুদের বিচারের নথিপত্র থেকে দেখা যায় যে সময়ের সাথে সাথে দাসদের মধ্যে কেউ কেউ জাহাজ চালানোর কাজে দক্ষ হয়ে উঠেছে। দলের অন্যদের সাথে পাল্লা দিতে পারত তারা।
কিসের টানে মানুষ জলদস্যুর জীবনের দিকে ঝুঁকত? ভালো খাবারদাবার। ভালো দান মারতে পারলে একবারেই কয়েক বছরের সমপরিমাণ কামাই। লালসা মিটিয়ে মদ্যপান, স্বাধীনতা এবং দুঃসাহসিক তৎপরতায় ঝাঁপ দেওয়ার সুযোগ। নিজে কিছু করছি এ বোধটুকুও তৈরি হতো। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এবং লুটের মালামাল ভাগাভাগির সময়ে সবার মতামত নেওয়া হতো। বলা যায়, গণতান্ত্রিক আবহাওয়া বিরাজ করত।
পাশাপাশি এ জন্য মূল্যও কম দিতে হতো না। ঝুঁকিও কম ছিল না। কারান্তরালে জীবন কাটানোর আশঙ্কা, ফাঁসির মতো চরম শাস্তির মুখোমুখি হওয়া কিংবা মারাত্মকভাবে আহত হওয়া। জলদস্যু পেশার গড় মেয়াদ দুই বছর। চরম কথাটি হলো, একবার জলদস্যুর জীবনে নেমে পড়লে পরিবারের সাথে জন্মেও দেখা না হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যেত।