খেজুর: সুস্বাদু ঐতিহ্যের ছয় হাজার বছরের ধারাবাহিকতা
ইরানে খেজুর চাষের ঐতিহ্য অনেক প্রাচীন। খ্রিষ্টের জন্মেরও চার হাজার বছর আগে দেশটিতে খেজুর চাষের শুরু হয়। দেশটিতে খেজুর চাষের উৎপত্তি কীভাবে হলো, সে হদিস ইতিহাসের অন্ধকার জগতেই রয়ে গেছে। ইরানের খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য বলছে, দেশটিতে মাথাপিছু খেজুর খাওয়ার পরিমাণ ৭ কেজি। তবে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে মাথাপিছু সবচেয়ে বেশি খেজুর খাওয়া হয়। ওই অঞ্চলে মাথাপিছু খেজুর খাওয়ার পরিমাণ ২৫ কেজি।
ইরানিদের এত ব্যাপক পরিমাণে খেজুর খাওয়া রহস্য কী, এমন প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, দেশটিতে খেজুর তুলনামূলকভাবে সস্তা। দুনিয়ায় খেজুর উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে শীর্ষ স্থান অধিকার করেছে মিসর। তারপর যথাক্রমে রয়েছে ইরান, আলজেরিয়া, সৌদি আরব, ইরাক ও পাকিস্তান। ইরানে সারা বছর সহজেই মেলে খেজুর। দ্বিতীয় যে কারণের কথা বলা হয়, তা হলো ঐতিহ্যবাহী দেশীয় চিকিৎসাপদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দেয় ইরানবাসীরা। ভেষজ গুণে গুণান্বিত খেজুরও তাই প্রতিদিন খাওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেয় আপামর ইরানি। ইরানের সাথে ইসলামের গভীর সম্পর্কও খেজুর খাওয়ার ক্ষেত্রে পারস্যবাসীদের উৎসাহিত করে। পবিত্র কোরআনে ২২ দফা খেজুর বা খেজুরগাছের কথা বলা হয়েছে। এই বর্ণনা ইরানিদের খেজুরপ্রীতির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বা 'হু'র হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে ১০০ কোটি ৩ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর খেজুরবাগান আছে। এ বাগান থেকে বছরে ১০০ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার টন খেজুর উৎপাদিত হয়। বিশ্বে হেক্টরপ্রতি গড় খেজুর উৎপাদনের হার ৬ হাজার ২৫২ কেজি হলেও উৎপাদনে টেক্কা দিয়েছে মিসরসহ কয়েকটি দেশ। খেজুর চাষে আধুনিক প্রযুক্তি খাটিয়ে হেক্টরপ্রতি মিসরের উৎপাদন বিশ্বে গড় উৎপাদনেরও প্রায় ৬ গুণ।
ফার্সিতে পাকা খেজুর বোঝাতে 'খোর্মা' শব্দটি ব্যবহার করা হয়। অবশ্য বাংলাদেশে শুকনা এক বিশেষ ধরনের খেজুরকেই খোর্মা নামে ডাকা হয়। ফার্সিতে কাঁচা খেজুরকে বলে 'খার্গ'।
ইরানের ১৫ প্রদেশের আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে খেজুর চাষ হয়। দেশটির উৎপাদিত খেজুরের ৯৯ শতাংশেরও বেশি এই ১৫ প্রদেশ থেকে আসে। গত সেপ্টেম্বরে ইরানের জাতীয় বার্তা সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদনের বক্তব্য এটি। দেশটিতে খেজুর উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশ। এই দুই প্রদেশ বাদে ব্যাপক হারে খেজুর উৎপাদনকারী অন্য প্রদেশগুলো হলো কেরমান, খুজেস্তান, বুশেহর, ফারস ও হরমুজগান।
ইরানে হেক্টরপ্রতি খেজুর উৎপাদনের গড় হার ৫ হাজার ১৩২ কেজি থেকে ৬ হাজার ৬৭০ কেজি। প্রদেশ ভেদে উৎপাদনের হেরফের ঘটে। ঐতিহ্যবাহী পুরোনো পদ্ধতির অনুসরণ, যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের ঘাটতি এবং আধুনিকায়ন না করা—খেজুর উৎপাদন বাড়ানোর পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে। মিসরের চেয়ে চার গুণ বেশি জমিতে খেজুর চাষ করে ইরানের বার্ষিক গড় উৎপাদন ১০ লাখ ৬৬ হাজার টন।
সাবেক প্রযোজক, সাবেক সাংবাদিক এবং বর্তমানে ইরানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবির অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা স্যাইয়েদে হাজারে হোসাইনি টিবিএসকে জানান, ইরানে চার শর বেশি প্রজাতির খেজুর চাষ হয়। খেজুর উৎপাদনের দিক থেকে ইরান বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, বেশির ভাগ ইরানিরই কেবল ২০ থেকে ৩০ বেশি খেজুর প্রজাতি সম্পর্কে জানা শোনা আছে।
ইরানে সম্মানজনক সম্বোধন হিসেবে পুরুষের ক্ষেত্রে 'আগা' এবং নারীর ক্ষেত্রে 'খানম' ব্যবহার করা হয়। বয়সী বা পদে ভারী পুরুষকে 'হাজি আগা' নারীকে 'হাজ খানম' কিংবা 'সরকার খানম'ও বলা হয়। তবে 'আগা' এবং 'খানম' এ শব্দ দুটি দেশের সবচেয়ে সম্মানীয় ব্যক্তি থেকে শুরু করে এক্কেবারে 'গলির পাশের 'কুলি' বা 'কুলিনি' পর্যন্ত সবার জন্য সমভাবেই ব্যবহার করা যায়। তাতে জাত যায় না কারও। বা পায়াভারিও হয় না। স্যাইয়েদে হাজারে হোসাইনিকে খানমে হোসাইনি হিসেবেই সম্বোধনের ভণিতা হিসেবেই এত কথা।
ইরানে সবচেয়ে দামি এবং গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিকারী খেজুরগুলোর অন্যতম হলো পিয়ারোম, মাজুল ও মাজাফাতি। শেষোক্ত প্রজাতিটি ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত খেজুরের অন্যতম।
সৌখিন পর্বতারোহী খানমে হোসাইনি আরও জানান, চিরসবুজ গাছের ফল খেজুরকে লোককাহিনিতে পুনরুত্থানের প্রতীক এবং এর ফলকে প্রাণশক্তিদায়ী হিসেবে মনে করা হয়। এই লোকবিশ্বাস অনুসারে, খেজুরই মৃত উপত্যকার দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দেওয়ার মানসিক অফুরান শক্তি জোগায় মৃত ব্যক্তিকে।
ইফতারে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, খাবার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতি আহার থেকে রক্ষা করে। তদুপরি দিনভর রোজা রাখায় শরীরের ভিটামিন ও পুষ্টি ঘাটতি কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে খেজুর। দীর্ঘ সময় অনাহার ও তৃষ্ণার্ত থাকায় শরীরে যে শর্করার ঘাটতি সৃষ্টি হয়, তা-ও হটিয়ে দেয় খেজুর।
খেজুরকে ঘিরে কিশোর বয়সের এক স্মৃতিকথাও শোনান তিনি। তার দাদি ইন্তেকালের পর মধ্যরাতে তিনি ও তার চাচাতো ভাই-বোনেরা প্রচলিত রেওয়াজ অনুসারে খেজুরকে কবরস্থানে পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত করছিল। সে সময় তাদের সবার বয়স ১৪ বা তার আশেপাশে। দাদি তাদের কাছে বিশেষ প্রিয়পাত্র ছিলেন না। ফলে শোকের বদলে তারা হাসাহাসিই করছিল। এ সময়ে তাদের চাচা এসে হাজির হলেন রান্নাঘরে। ওই চাচার ছেলেও তাদের দলে ছিল। বাবাকে দেখে বেচারা ঘাবড়ে যেয়ে হাসাহাসি ঢাকার জন্য গলায় খেজুর আটকে যাওয়ার ভান করতে চায়। কিন্তু চাচা ঘটনা টের পেয়ে ছেলেকে মারতে তাড়া করলে পরিস্থিতি আরও হাস্যকর হয়ে ওঠে।
খেজুর নিয়ে ইরানি প্রবাদও শোনান তিনি আমাদের। 'কানগা বি কানগা নামিচাসপে।' ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের এ প্রবাদ রাজধানী তেহরানে সচরাচর শোনা যায় না। এক প্রজাতির খেজুরকে কানগা বলা হয় এবং এ প্রবাদের ভাবার্থ হচ্ছে সমশ্রেণির মানুষের সাথে চলাফেরায় একে অন্যের কাছ থেকে কিছুই শিখতে পারে না।
'নাকলে বি সার ছায়ে নাদারে।' মাথাহীন খেজুরগাছ ছায়া দেয় না শাব্দিক অর্থ হলেও ভাবার্থে সেই সব মানুষের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যাদের কিনা 'খায়রিয়ে মারদুম'—মানব কল্যাণের জন্য মুক্ত অর্থে দানের সামান্য সদিচ্ছাও নেই।
তৃতীয় প্রবাদটি হলো 'খোর্মা কাল্লে কাল্লে দোসব পানজে পানজে।' কাল্লে কাল্লে মানে প্রচুর আর পানজে পানজে মানে কম। দোসব বলতে খেজুরের নির্যাসকে বোঝানো হয়। প্রবাদের শাব্দিক অর্থ হলো অনেক খেজুর থেকে অল্প পরিমাণে 'দোসব' বা খেজুরের নির্যাস তৈরি হয়। খেজুরজাত ঘন রস বা 'দোসাব'কে ফার্সিতে 'শিরে খোর্মা'ও বলা হয়। ইরানি এই প্রবাদের মাধ্যমে মিতব্যয়ী হওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মুজতবা আলীর পেটুক ছেলের কথা সবার মনে আছে, তাই না! তাকে যা-ই পড়তে দেওয়া হতো, চিন্তাসূত্র বা অ্যাসোসিয়েশন অব আইডিয়াজ ঝেড়ে সে খানা-খাদ্যের নামে চলে যেত। খেজুর থেকে তৈরি মজায় ভরপুর খাবারের জগতে যেতে এখানে আমাদের চিন্তাসূত্র ব্যবহার করতে হয়নি। এবার তাহলে চলি খেজুর থেকে তৈরি খাবারদাবারের স্বাদে ভরা দুনিয়ার দিকে।
তুলনামূলকভাবে 'দোসব' বা 'শিরে খোর্মা' খেজুরের 'রস' বাংলাদেশের খেজুর গুড়ের মতোই। বেশি দিন রেখে দিলে নিচে শক্ত চিনি জমে। খেতে খুবই মজা। সুকুমার রায় তাঁর কবিতায় 'সবার চেয়ে অধিক মজা পাউরুটি ও ঝোলাগুড়'-এর কথা বললেও দেশে থাকার সময় তা কখনো চেখে দেখেনি। আমাদের চিরচেনা পাউরুটি ইরানে এসে 'নুনে তোস্ত' নাম ধারণ করে বিরাজ করছে। 'শিরে খোর্মা'-সহযোগে 'নুনে তোস্ত' খেয়ে রীতিমতো চমৎকৃত হয়েছি। এ ছাড়া খেজুরের গুড়ের বিকল্প হিসেবেও রন্ধন পটিয়সী গিন্নি এই 'শিরে খোর্মা' ব্যবহার করে পায়েস রেঁধে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ইরানে 'ক্ষীর' শব্দটি 'শিশ্ন' অর্থ বহনকারী অতিশয় অশিষ্ট শব্দ। এখানে ভুলেও 'ক্ষীর' ব্যবহার করি না। তবে আমাদের ব্যবহৃত 'ফিরনি' শব্দ ফার্সি থেকেই বাংলায় গেছে।
খেজুর নিজেই কেবল সুস্বাদু খাবার নয় বরং খেজুর দিয়ে নানা মিষ্টি এবং মজাদার খাবার তৈরি হয়। এ কথা বলতে গিয়ে খানমে হোসেইনি জানান, খেজুর দিয়ে পোলাও হতে পারে। মাছেও খেজুর দেওয়া হয়। খেজুরের কেক পাওয়া যায়। পাওয়া যায় খেজুরসহযোগে তৈরি বিস্কুট। খেজুরের পুর দেওয়া মিষ্টি।
এ ছাড়া খেজুরের লাচ্ছি, খেজুরের পিৎজাও পাওয়া যায়। ইরানে দই মানে টক দই তার সাথে বিচিহীন খেজুর মিশিয়ে ঘুটে নিলেই সবচেয়ে দ্রুত তৈরি হবে স্বাস্থ্যকর লাচ্ছি।
ইরানপ্রবাসী বাংলাদেশের নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. কাজী নওয়াজ ইকবালের আদি বাড়ি কুমিল্লায়। তার ইরানি স্ত্রী ডা. সাকিনে আসজাহ্ মাহধাবি তেহরানের অন্যতম বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক। কথা ছিল ডা. মাহধাবির সাক্ষাৎকার নেব কিন্তু এই ইরানিদুহিতা বঙ্গবধূর ব্যস্ততার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। সে অভাব পূরণ করেন ঢাকা থেকে এমবিবিএস এবং পরবর্তীতে ইংল্যান্ড থেকে নাক-কান-গলায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী ডা. ইকবাল। বর্তমানে তিনি কুর্দিস্তানের একটি সরকারি হাসপাতালে চাকরি করছেন।
ডা. ইকবাল নাশতায় 'কিশওয়া' বা আণ্ডা ও খেজুর দিয়ে তৈরি হালুয়ার কথাই তুলে ধরেন। এক চিকিৎসক কন্যা এবং এক প্রকৌশলীর জনক ডা. ইকবাল জানান, তার ঘরে স্ত্রী-পুত্র-কন্যা সবাই এ খাবারের ভক্ত। ঘরোয়া পদ্ধতিতে সহজভাবে 'কিশওয়া' বানানোর পাক-প্রণালিও জানান তিনি আমাদের।
এ জন্য চারটা আণ্ডা এবং এক শ গ্রাম বিচিছাড়া নরম খেজুর নিতে হবে। আণ্ডা আধকাপ দুধসহ ফেটে নিতে হবে। গরম রন্ধনপাত্রে মাখন দিয়ে তাতে খেজুর একটু ভেজে নিয়ে ফেটে রাখা আণ্ডা তাতে ঢালতে হবে। মিষ্টি বেশি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তাতে স্বাদমতো চিনি দেওয়া যায়। মিশ্রণটা ঘন হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে পরিবেশন করতে হবে। মূলত আজারবাইজানের খাবার কিশওয়ায় পেস্তা-আখরোট-বাদাম-কিসমিস দেওয়া হয়। কয়েক পরতে এসব দেওয়া হলেও ঘরে এটি বানানোর সহজ পথই বেছে নেওয়া হয়। বাংলাদেশের আণ্ডার হালুয়ার সাথে এর মিলটি সবাই সহজেই ধরতে পারছেন।
সৃজনশীল বাংলাদেশিদের তৈরি খেজুরের চাটনিও খেয়েছি। তৈরির তরিকা খুবই সহজ। টক ফল বা তেঁতুল (ইরানে তেঁতুল আসে থাইল্যান্ড হতে), পাঁচফোড়ন, (তৈরি পাঁচফোড়ন পাওয়া যায় না, তবে এতে ব্যবহৃত সব মসলাই আলাদাভাবে পাওয়া যায়।) চিনি এবং বিচিহীন খেজুর দিয়ে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় খেজুরের চাটনি। কেউ কেউ এতে যোগ করেন দেশ থেকে আনা শর্ষের তেল। এই চাটনি একবার মুখে দিলে বারবার তাই চাটতে মন চাইবে – সে কথা বলার দরকারই নেই।
ইরানে সাধারণভাবে দুধ ছাড়া লাল চা খাওয়ার চল। চায়ে চিনি মেশানোর অভ্যাস কমই আছে এ দেশের মানুষের। বদলে কান্দ বা সুগার কিউব মুখে পুরে চায়ে চুমুক দেয় ইরানিরা। কান্দ গিলে ফেলা বা চাবিয়ে খাওয়া হয় না। তা মুখে রেখে দেওয়া হয় এবং মুখ মিষ্টি করতে থাকে। এ ছাড়া চায়ের সাথে খাওয়ার জন্য ব্যবহার করে শুকনা ডুমুর বা এ জাতীয় মিষ্টি ফল। আর ফলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চলে খেজুর। খেজুর মুখে পুরে মুখকে মিষ্টি করছে তারপর গরম গরম লাল চায়ে তৃপ্তিসহকারে চুমুক দিচ্ছে—এ দৃশ্য ধনী-গরিব সব ইরানির মধ্যেই দেখা যায়। ইরানে চা বানাতে ব্যবহার হয় সামোভার। গরম পানির বাষ্পে দম দিয়ে চা বানানো হয়। ফুটন্ত পানিতে সরাসরি পাতা দিয়ে চা বানানোর কথায় বিস্মিত হতে দেখেছি অনেক ইরানিকেই।
কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা-গানে 'ইরানি বালিকা যেন মনোহারিণী ইরানী বালিকা যেন মরু-চারিণী/ পল্লীর প্রান্তর-বন মনোহারিণী/ছুটে আসে সহসা গৈরি-বরণী/ বালুকার উড়নী গায়', 'গুলিস্তানের বুলবুল পাখি, সোনালি রুপালি দিন।/লালা-ফুল সম দাগ-খাওয়া দিল, নার্গিস-ফুলি আঁখ,/ইস্পাহানির হেনা-মাখা হাত, পাতলি কাঁখ!/নৈশাপুরের গুলবদনির চিবুক গালের টোল/ রাঙা লেড়কির ভাঙা ভাঙা হাসি, শিরীন শিরীন বোল'—এসেছে। এসেছে 'শিরি ফরহাদ' 'লাইলি-মজনু', ফেরদৌসিহাফিজসহ ইরানের নানা প্রসঙ্গ। কিন্তু ইরানের বিশ্বখ্যাত খেজুরের কথা কেন আসেনি, নাকি কম পড়াশোনা থাকায় আমিই তা পাইনি! নিজের এ প্রশ্নে নিজেই বিস্মিত অহরহ।