জয়াবিক্রমার বিক্রমে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে মনে হয়েছিল, আবারও রান বন্যা হতে যাচ্ছে। ১ উইকেট ২৯১ রান তুলে দিন শেষ করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দ্বিতীয় দিন থেকেই উইকেট বদলাতে থাকে। তৃতীয় দিনে এসে পাল্লেকেলের উইকেট পরিণত হয়েছে স্পিনারদের টেরিটরিতে। যেখানে স্পিন ভেল্কি দেখিয়ে একাই বাংলাদেশের ইনিংস গুঁড়িয়ে দিলেন অভিষিক্ত প্রাভিন জয়াবিক্রমা।
২২ বছর বয়সী এই লঙ্কান স্পিনারের বোলিং তোপে ৮৩ ওভারে ২৫১ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। অভিষেকেই বল হাতে রেকর্ড গড়া জয়াবিক্রমার দারুণ বোলিংয়ে ফলো অনও এড়াতে পারেনি মুমিনুল হকের দল। ফলো অন এড়াতে আর ৪২ রান করতে হতো বাংলাদেশকে। ৩৭ রানের মধ্যে বাংলাদেশ তাদের শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে।
ফলো অনে পড়লেও বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়নি শ্রীলঙ্কা। ২৪২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে স্বাগতিকরা। এই ইনিংসে তাদের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ১৫ রানেই দুই উইকেট হারিরেছে তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৭ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে লঙ্কানরা।
বাংলাদেশের ইনিংসে জয়াবিক্রমা যমদূত হয়ে দেখা দিয়েছিলেন। তরুণ এই স্পিনারের বিক্রমে আসা যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে ৯২ রান খরচায় ৬টি উইকেট ঝুলিতে পুড়লেন জয়াবিক্রমা। যা শ্রীলঙ্কার টেস্ট ইতিহাসে রেকর্ড।
জয়াবিক্রমার বোলিং ফিগারই অভিষেক টেস্টের এক ইনিংসে শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে সেরা। এতদিন রেকর্ডটি ছিল উপুল চন্দনার দখলে। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকায় নিজের অভিষেক টেস্টে ১৭৯ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার সাবেক এই লেগ স্পিনার। ২২ বছর পর এসে রেকর্ডটি নিজের করে নিলেন ২২ বছর বয়সী জয়াবিক্রমা।
শ্রীলঙ্কার আরেক স্পিনার রমেশ মেন্ডিসও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের শিকার ২ উইকেট। অভিজ্ঞ পেসার সুরঙ্গ লাকমলও নেন ২ উইকেট। তার নেওয়া শেষ উইকেটটি ছিল অদ্ভুত এক ঘটনা। লাকমলকে খেলতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা সৌম্যর জুতা খুলে গিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। হিট আউট হয়ে ফেরেন বাংলাদেশের এই স্পিনার।
বাংলাদেশের ইনিংসে ৫ জন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রানে পৌঁছাতে পেরেছেন। তামিম ইকবাল খেলেন ৯২ রানের ইনিংস। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া সাইফ হাসান করেন ২৫ রান। অধিনায়ক মুমিনুক হক ৪৯ রান করে বিদায় নেন। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম ৪০ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১৬ রান করেন।