দুর্দান্ত জয়ে সমতায় ইংল্যান্ড
টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য দেখতে চাইলে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি দেখতে হতো। না দেখে থাকলে ক্রিকেটভক্ত হিসেবে এটা বড় ধরনের মিস। পুরো একটা দিন বৃষ্টির পেটে চলে যাওয়ার পরও ইংল্যান্ড যেভাবে দাপট দেখিয়ে ম্যাচ জিতলো, সেটাকেই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্যই বলা যায়।
টেস্ট ক্রিকেটে ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টায়, হয় বাঁক বদল। ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে অবশ্য সেটা হতে দেয়নি ইংলিশরা। পুরো ম্যাচে নাটাই হাতে রেখে শাসন করে গেছে স্বাগতিকরা। যে শাসনের ফল হিসেবে মিলেছে দারুণ এক জয়। দ্বিতীয় টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১১৩ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতা করেছে ক্রিকেটের জনক দেশ।
৫ দিনের দিনের টেস্ট চারদিনে নেমে এলেও জয়ের পথে এটাকে বাধা হতে দেয়নি ইংল্যান্ড। বিশেষ করে বলতে হবে বেন স্টোকসের কথা। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার একাই ক্যারিবীয়দের দিশেহারা করে তোলেন। প্রথম ইনিংসে পুরোপুরি টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করে ১৭৬ রান করা স্টোকসই দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৮ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন।
দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজে সমতায় ফিরতে ইংল্যান্ড কতটা মরিয়া ছিল, সেটা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে স্পষ্ট হয়েছে। প্রথম ইনিংসে ১৮২ রানে লিড পাওয়া ইংলিশরা দ্রুত রান তুলতে দ্বিতীয় ইনিংসে পাল্টে ফেলে উদ্বোধনী জুটি। অধিনায়ক জো রুট ওপেনার হিসেবে বেছে নেন বেন স্টোকস ও জস বাটলারকে।
বাটলার, জ্যাক ক্রাউলিরা না পারলেও ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট ঘুরিয়ে গেছেন ম্যাচ সেরা স্টোকস। বল হাতে ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়া ইংলিশ এই অলরাউন্ডার রান তুলে গেছেন ঝড়ের গতিতে। স্টোকসের ব্যাটে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৯ ওভারে ৬.৭৮ রান রেটে ৩ উইকেটে ১২৯ রান তোলে ইংল্যান্ড। পঞ্চম দিনে ঝড় তোলা এক ঘণ্টা ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩১২ রান।
এই রান পাড়ি দিতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকেছে প্রথম টেস্টে দারুণ জয় পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৩৭ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। এরপর শামার ব্রুকস ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড কিছুটা লড়াই করেন। ব্রুকস ৬২ ও ব্ল্যাকউড ৫৫ রান করেন।
এ দুজনের পর অধিনায়ক জেসন হোল্ডার লড়াই করার চেষ্টা করেও পারেননি। ৩৫ রান করে থামেন তিনি। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ১৯৮ রানে। ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড ৩টি এবং ক্রিস ওকস, ডম বেস ও বেন স্টোকস ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৪৬৯/৯, ডিক্লে. (ডম সিবলি ১২০, বেন স্টোকস ১৭৬; রস্টন চেস ৫/১৭২, কেমার রোচ ২/৫৮)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইন্ডিজ: ২৮৭/১০ (ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ৭৫, শামার ব্রুকস ৬৮, রস্টন চেস ৫১; স্টুয়ার্ট ব্রড ৩/৬৬, ক্রিস ওকস ৩/৪২)।
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: ১২৯/৩ ডিক্লে. (বেন স্টোকস ৭৮*, জো রুট ২২; কেমার রোচ ২/৩৭)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস: ১৯৮/১০ (শামার ব্রুকস ৬২, জার্মেইন ব্ল্যাকউড ৫৫, জেসন হোল্ডার ৩৫; স্টুয়ার্ট ব্রড ৩/৪২, ক্রিস ওকস ২/৩৪), ডম বেস ২/৫৯, বেন স্টোকস ২/৩০)।
ফল: ইংল্যান্ড ১১৩ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)
সিরিজ: ইংলান্ড ১-১ ওয়েস্ট ইন্ডিজ