রোনালদোর রেকর্ডময় ম্যাচে পর্তুগাল-ফ্রান্স সমানে সমান
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো; ফুটবলের এই মহানায়ক রেকর্ড গড়ায়ও রাজা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক রেকর্ড পায়ে লুটিয়েছে তার। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে আগের ম্যাচে দুটি রেকর্ড গড়েন তিনি। ফ্রান্সের বিপক্ষে আরও দুটি রেকর্ডে নাম লেখালেন পর্তুগিজ অধিনায়ক। যদিও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি তার। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে পর্তুগালকে।
'এফ' গ্রুপের ম্যাচে বুধবারে রাতে বুদাপেস্টের ফেরেঙ্ক পুসকার স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে পর্তুগাল। ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে দুটি গোলই পেনাল্টি থেকে করেন রোনালদো। ফ্রান্সের পক্ষে গোল দুটি করেন করিম বেনজেমা।
ড্র করলেও 'এফ' গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোর টিকেট পেয়েছে পর্তুগাল। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ শেষে এক জয় ও এক ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৪। এক জয় ও দুই ড্র করা ফ্রান্স ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবে নক আউট পর্বে উঠেছে। বুধবার রাতেই হাঙ্গেরির বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে এই গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে জার্মানি। তিন ম্যাচেই দারুণ লড়াই করা হাঙ্গেরি বিদায় নিয়েছে আসর থেকে।
এই ম্যাচের দুটি গোল দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আলি দাইয়ের ১০৯ গোলের বিশ্ব রেকর্ড স্পর্শ করেছেন রোনালদো। বাকি রেকর্ড কেবল তারই। ফুটবল ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ মিলিয়ে ২০টি গোলের মালিক হলেন রোনালদো। ১৯ গোল নিয়ে এরপরই আছেন জার্মানির সাবেক স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসা।
পর্তুগাল-ফ্রান্স ম্যাচে লড়াই হয়েছে সমানে সমান। ম্যাচের রং বদলেছে ক্ষণে ক্ষণে। পুরো ম্যাচে ফ্রান্স বল দখলের লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে ছিল। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ৫৩ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে। তাদের নেওয়া ১১টি শটের মধ্যে ৫টি ছিল লক্ষ্যে। পর্তুগাল গোলমুখে শট নিয়েছে ১০টি, এর মধ্যে ৫টি ছিল লক্ষ্যে।
ম্যাচের প্রথম পরিষ্কার সুযোগটি পায় ফ্রান্স। ১৬তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো পাস থেকে বল পান কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে বল পাঠাতে পারেননি পিএসজি তারকা। তার নেওয়া দারুণ শটটি অসাধারণ দক্ষতায় ফেরান পর্তুগালের গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও।
৩০তম মিনিটে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। এ সময় বল পরিষ্কার করতে গিয়ে ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিসের হাত গিয়ে আঘাত হানে দানিলোর মুখে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন রোনালদো। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। দারুণ শটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ৪৭তম মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে বাড়ানো বল নিয়ে ডান পাশ দিয়ে পর্তুগালের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন বেনজেমা। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে দারুণ শটে দ্বিতীয় গোলটি করেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ১৩ মিনিট লিড ধরে রাখে ফ্রান্স।
৬০তম মিনিটে আবারও সমতায় ফেরে পর্তুগাল। ফ্রান্সের ডি-বক্সে তাদের ডিফেন্ডার জুল কুন্দের হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। আরেকটি নিখুঁত স্পট কিকে গোল আদায় করে নেন রোনালদো। ৬৭তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ফ্রান্স। কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে পল পগবার নেওয়ার শট পর্তুগাল গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান।
যদিও দলকে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি, তার ফেরানো বল গোলবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে ডান পাশ থেকে শট নেন অঁতোয়ান গ্রিজম্যান। এবারও দারুণ দক্ষতায় বল ফিরিয়ে দেন প্যাট্রিসিও। এরপর দুই দল নিজেদের জাল সুরক্ষিত রাখতে লড়ে গেছে, কেউ-ই পায়নি গোলের দেখা।