হার্দিক পান্ডিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারত দলে জায়গা হয়নি হার্দিক পান্ডিয়ার। তারকা এই অলরাউন্ডারকে দলে না নেওয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এই আলোচনাই চলছিল গত কয়েকদিন ধরে। এর মাঝে বড় অভিযোগ উঠল ভারতের এই অলরান্ডারের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কেবল হার্দিকই নন; আরও বড় বড় নাম উঠে এসেছে অভিযোগে। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মুনাফ প্যাটেল ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সাবেক চেয়ারম্যান রাজীব শুক্লার বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে।
দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগী হিসেবে পরিচিত রিয়াজ ভাটির স্ত্রী রেহনুমা ভাটি এই অভিযোগ করেছেন। রিয়াজের বিরুদ্ধে যৌন ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ তুলেছেন রেহনুমা। স্বামীর বিরুদ্ধে মুম্বাই পুলিশের কাছে অভিযোগের আবেদন করেন তিনি। সেখানেই উঠে আসে হার্দিক, মুনাফ ও শুক্লার নাম। এ নিয়ে অভিযুক্ত কেউ-ই এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি।
অভিযোগ করতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন রেহনুমা। পুলিশ তার কথা গুরুত্ব দিচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'আমি এফআইআর করার চেষ্টা করছি, কিন্তু পুলিশ কোনো সাহায্য করছে না। গত সেপ্টেম্বরে আমি আবেদন করেছি, আর নভেম্বর চলছে এখন। এ ব্যাপারে আমি পুলিশ কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছি। আমাকে ঘুষ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি কেন দুর্নীতি বাড়াব? আমি আমার জায়গায় ঠিক আছি। সন্ত্রাসী তো ওরাই।'
রেহনুমা যে আবেদন করেছেন, সেটার সত্যতা স্বীকার করেছেন পুলিশের সহকারী কমিশনার মঞ্জুনাথ সিংহে। তবে এ নিয়ে বেশি কিছু বলেননি তিনি। ভারতীয় এই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বিস্তারিত বলার মতো কোনো তথ্য তার কাছে নেই। এ নিয়ে এখনও কোনো প্রমাণ মেলেনি।
রেহনুমার আবেদনের ছবি টুইটারেও ছড়িয়ে পড়েছে। আবেদনের ছবি তুলে টুইটারে পোস্ট করেছেন সমিত থাক্কার নামের একজন। ছবিতে দেখা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর আবেদন করেছেন রেহনুমা। যেখানে স্বামী রিয়াজ ভাটি, হার্দিক পান্ডিয়া, মুনাফ প্যাটেল, ব্যবসায়ী পৃথ্বীরাজ কোঠারি এবং কংগ্রেস নেতা ও বিসিসিআইয়ের সাবেক চেয়ারম্যান রাজীব শুক্লার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তিনি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, রেহনুমার মাকে হুমকি দিয়ে তাকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন রিয়াজ ভাটি। রেহনুমার অভিযোগ, স্ত্রী হলেও তার সঙ্গে নিয়মিত অত্যাচার চলতো। রিয়াজ ভাটির ব্যবসায়িক সঙ্গীদের সঙ্গে তাকে ভ্রমণ করতে পাঠানো হতো। তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করা হতো। বাধা দিয়ে পারতেন না তিনি, এতে অত্যাচারের পরিমাণ আরও বেড়ে যেত।
পথ না পেয়ে ২০১৬ সালে রিয়াজ ভাটিকে ছেড়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন রেহনুমা। কিন্তু বেশিদিন সেটা সম্ভব হয়নি। ২০১৯ সালে জোর করে তাকে আবার নিজের কাছে নিয়ে যান রিয়াজ ভাটি। সে সময় যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে নেহনুমা ও তার দুই সন্তানকে খুন করার হুমকি দেন রিয়াজ।
অভিযোগে রেহনুমা উল্লেখ করেছেন, মুনাফ প্যাটেলের সঙ্গে একটি কন্টিনেন্টাল হোটেলে রাত কাটাতে বাধ্য করা হয় তাকে। এ ছাড়া ২০১৪-১৫ সালে ট্রাইটেন্ড নামের এক হোটেলে হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে থাকতে তাকে বাধ্য করা হয়। মদ্যপ অবস্থায় পান্ডিয়া তার দুই বন্ধুকে নিয়ে যৌন নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ রেহনুমার।
কংগ্রেস নেতা রাজীব শুক্লার সঙ্গেও অনিচ্ছাস্বত্বে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করা হয় রেহনুমাকে। নিজের অনিচ্ছার কথা জানালে শুক্লা ও তার বন্ধুরা তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উল্লেখ করেছেন রেহনুমা। নগ্ন হয়ে নাচতেও রেহনুমাকে বাধ্য করা হয়েছিল। এরপর সেখানকার সবাই তাকে ধর্ষণ করেন। সেটা আবার ভিডিও করেও রাখা হয়। যা পরবর্তীতে দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয় অভিযোগ করেছেন রেহনুমা।