দল ও নিজের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন না আফিফ!
জিতলেই সেমি-ফাইনাল; কয়েকদিন জটিল সমীকরণের হিসাব মেলানো বাংলাদেশ আজ সহজ সমীকরণ মাথায় নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বপ্নের সেমি-ফাইনালের টিকেট মেলেনি। রোববার অ্যাডিলেড ওভালে হতাশার পারফরম্যান্সে ৫ উইকেটের হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ, এই ম্যাচের পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সংবাদ সম্মেলনে আসবেন; এমনই ধারণা ছিল সবার। কিন্তু তেমন হয়নি, সংবাদ সম্মেলন সামলান পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে দলকে পথ দেখানো নাজমুল হোসেন শান্ত। সব প্রশ্নের উত্তরই স্বাভাবিকভাবে দিয়ে গেছেন বাংলাদেশের ওপেনার।
কিন্তু আইসিসির বিশেষ আয়োজন মিক্সড জোনে গিয়ে সংবাদকর্মীদের হতাশই হতে হয়েছে। এখানে এসেছিলেন বাংলাদেশের তরুণ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন ধ্রুব। সাংবাদিকদের করা ৯-১০টি প্রশ্নের মধ্যে চারটি প্রশ্নের উত্তরে, 'আমি জানি না', 'কিছু বলার নেই' বলেই থেমে গেছেন তিনি। আফিফের উত্তরে মনে হয়েছে দল সম্পর্কে ধারণা নেই তার, এমনকি নিজের সামর্থ্য সম্পর্কেও ভালোভাবে জানা নেই।
একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের এমন উত্তরে সংবাদকর্মীরা রীতিমতো বোকা বনে যান। দলের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নটি ছিল পারফরম্যান্স নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আপনার আক্ষেপ আছে কিনা? উত্তরে আফিফ বলেন, 'ব্যক্তিভাবে কিছু বলার নাই।'
বড় ইভেন্টে বাংলাদেশের ম্যাচ উইনার নেই বললেই চলে। কেবল সাকিবই ব্যাট অথবা বলে ভালো করে ম্যাচ বের করে আনেন। সাকিব ব্যাট হাতে অফ ফর্ম থাকায় সেটা দলকে ভুগিয়েছে কিনা? এমন প্রশ্ন করা হলে আফিফ বলেন, 'আমি জানি না এটা নিয়ে।'
এরপর প্রশ্ন করা হয়, শ্রীধরন শ্রীরাম বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক পরিবর্তন এসেছে। আপনার কী মনে হয়, কতোটা বা কী পরিবর্তন হয়েছে? এবারও একই পথে হাঁটেন আফিফ। উত্তরে বলেন, 'এটা আমি জানি না ভাই।' মিক্সড জোনে শেষ প্রশ্ন ছিল, মিডল অর্ডার বা লোয়ার অর্ডারের ব্যর্থ হওয়ার কারণ কী? একই সুরে আফিফ বলে দেন, 'কোচরা বলবে, আমি কেন বলবো?'
এ ছাড়া বাকি প্রশ্নগুলোতে ছোট করে উত্তর দেন স্বলভাষী আফিফ। সিনিয়র ক্রিকেটার না থাকায় চাপ ছিল কিনা জানতে চাইলে ৫ ম্যাচে ২৩.৭৫ গড়ে ৯৫ রান করা তরুণ এই ক্রিকেটার বলেন, 'আমরা আসলে ব্যাপারটা ওভাবে দেখিনি। আমরা ভেবেছি একেকজনের জন্য এটা একটা সুযোগ। যে সুযোগটা যাতে আমরা কাজে লাগিয়ে নিজেদের ক্যারিয়ারের জন্য ভালো কিছু করতে পারি। জিনিসটা সবাই এভাবেই দেখেছে। ভালো খেলে যাতে নিজের জায়গাটা ধরে রাখতে পারে।'
সাকিবের এলবিডব্লিউ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ব্যাটে-বলে সংযোগ হলেও সাকিবকে আউট ঘোষণা করা হয়, রিভিউ নিয়েও সিদ্ধান্ত পক্ষে আসেনি বাংলাদেশের। এ নিয়ে আফিফ বলেন, 'ওইটা যখন সিদ্ধান্ত দেয়, তখন আমাদের মনেও কিছু সংশয় ছিল। কিন্তু তখন আমি ব্যাটিংয়ে চলে যাই, তারপর ড্রেসিংরুমে কী হয়েছে সেটা আমার জানা নেই।'
সেমি-ফাইনাল খেলার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। সবার মতো এই আক্ষেপ আফিফেরও আছে। তবে এসব নিয়ে না ভেবে আগামীতে দৃষ্টি তার, 'অবশ্যই ভালো করার সুযোগ ছিল। আমরা যদি আরও কিছু ম্যাচ জিততে পারতাম, সেমি-ফাইনাল খেলতে পারতাম; অবশ্যই ভালো লাগতো। ইনশা আল্লাহ চেষ্টা থাকবে সামনে যেন দল হিসেবে আরও ভালো করতে পারি।'