সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমার চেয়ে আমার পরিবারের জন্য কঠিন: শান্ত
ক্রিকেটাররা খারাপ করলে সমালোচিত হন। বাজে ফর্মের সময় তোড়টা আরও বাড়ে। নাজমুল হোসেন শান্তর ক্ষেত্রে যেন সমালোচনাটা একটু বেশিই হয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেও ট্রল, সমালোচনার বন্যায় ভেসেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তবে খেই হারাননি শান্ত, মনোযোগ ধরে রেখে বিপিএলেও ব্যাট হাতে ধারাবাহিক থেকেছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের ওপেনার।
দল উড়ছে, নিজের ব্যাটে রানের ফোয়ারা; তবু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোনার কথা উঠতেই এর আগে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শান্ত। হতাশা থেকে বলে ফেলেন, 'আমি এখন প্রতিপক্ষ দলের সাথে খেলি না, আমার মনে হয় আমি এখন পুরো দেশের বিপক্ষে খেলি।' সমালোচানর তীরে আহত শান্ত কষ্ট থেকেই কথাগুলো বলেন। তবে তার আরও বড় কষ্টের জায়গা তার পরিবার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সমালোচনায় তার চেয়ে পরিবারের সদস্যরা বেশি কষ্ট পান বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিপিএলে ব্যাট হাতে সিলেটের ত্রাতা হয়ে উঠেছেন শান্ত। সাত ইনিংসে দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৫৬.২০ গড়ে ২৮১ রান করেছেন তিনি, যা এখন পর্যন্ত আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দলকে অন্ধকার থেকে টেনে তুলে ৬৬ বলে ৮৯ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন শান্ত। দল জিতেছে, শান্তর ঝুলিতে উঠেছে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। যদিও সংবাদ সম্মেলনে হতাশা নিয়েই বেশি কথা বলতে হয় তাকে।
দুর্দান্ত এই ফর্মের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শান্তকে নিয়ে সমালোচনা কমেছে। ধীরে ধীরে এটা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কিনা, সেটা আমি বলতে পারবো না। এটা যার যার চিন্তা ভাবনা থেকে বলে। আমি এটা নিয়ন্ত্রণও করত পারব না। পরিবর্তন হবে কি হবে না, সেটা নিয়ে আমি খুব চিন্তিতও না। যদি হয়, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। যদি না হয়, আমার হাতে কিছু নেই। এটা যার যার চিন্তা ভাবনা থেকেই বলে।'
নিজে সমালোচকদের কথা গায়ে না মাখলেও পরিবারের সদস্যদের জন্য এটা কষ্টের বলে জানান শান্ত। এসব দেখে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। বাঁহাতি এই ওপেনার বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমার জন্য যতোটা না কঠিন, তার থেকে বেশি কঠিন আমার পরিবারের জন্য। সত্যি বলতে আমি যেভাবে বুঝি, আমার পরিবারের সদস্যরা কিন্তু সেভাবে বোঝে না, তারা কষ্ট পায়। তারাও বাইরে যায়। এই জিনিসটার জন্য আমি মাঝে মাঝে আপসেট হয়েছি। আমার কষ্ট লেগেছে।'
ভালো পারফর্ম করতে ক্রিকেটারদের কতোটা কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, সেটা না দেখেই অনেকে সমালোচনা করে বসেন। শান্তর অনুরোধ, সমালোচনা করলেও যেন সেটা সুস্থ প্রক্রিয়ার হয়। তার ভাষায়, 'অনেকে না জেনে, না বুঝে কথা বলে ফেলে। দলের পরিকল্পনা, আমার পরিকল্পনা কিংবা আমি কতোটা হার্ড ওয়ার্ক করি, সেসব বলে দেয়। অনেকে জানে না। অনেকের জানার প্রয়োজনও নেই।
'এগুলো নিয়ে যতো বেশি কথা আমি বলবো, ততো বেশি বলা হবে। এটা আসলে যার যার চিন্তা থেকে বলে। কিন্তু তারা যদি বুঝে কথা বলে, জেনে কথা বলে, তাহলে ভালো। আমি এটা বলছি না যে আমাকে নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। আমি খারাপ খেললে অবশ্যই সমালোচনা হবে। আমি মনে করি আরো ডিসেন্ট ওয়েতে হতে পারতো। যেটা আমার পরিবারের জন্য ভালো হতো, এতোটুকুই।' যোগ করেন বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার।