চিন্তায় পড়লে গিটার বাজান আজম খান
মানুষ চিন্তায় পড়লে কী করে? মাথায় হাত রাখে, চুল চুলকায়, ঠোট কামড়ায় বা নখ কামড়ায়। অনেকে অনেক কিছু করে। কিন্তু চিন্তিত হয়ে কেউ গিটার বাজায় বা গান গায়, এমন শুনেছেন? না শুনে থাকলে আজম খানের গল্পনা শুনতে পারেন। পাকিস্তানের ২৪ বয়সী উইকেটরক্ষ এই ব্যাটসম্যান ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়লে গিটার নিয়ে বসে পড়েন, বাজিয়ে ফেলেন কয়েকটি গান। তাতে স্বস্তি মেলে তার।
আজম খানের প্রথম পরিচয় তিনি ক্রিকেটার। ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি দিয়ে পাকিস্তান দলে তার অভিষেক। এরপর খুব একটা সুযোগ না পাওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। বাকি দুই ফরম্যাটে এখনও অভিষেকের অপেক্ষায়। আপাতত বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলে বেড়াচ্ছেন।
খুলনা টাইগার্সের হয়ে বিপিএলে ৯ ম্যাচে ৮ ইনিংসে একটি সেঞ্চুরিসহ ৪৫.২০ গড় ও ১৫৯.১৫ স্ট্রাইক রেটে ২২৬ রান করেছেন আজম। দল খুলনা প্লে-অফের রেস থেকে বাদ পড়লেও ব্যাট হাতে সময়টা ভালোই গেছে পাকিস্তানি এই ক্রিকেটারের। ক্রিকেটের এই সফরে তার সঙ্গী গিটারও, পাকিস্তান থেকে নিয়ে এসেছেন। ম্যাচ নিয়ে যখনই দুর্ভাবনা, তখনই তার হাতে ওঠে গিটার।
যদিও আজম খানের গিটার হাতে তুলে নেওয়ার কারণ ভিন্ন। অনেক বেশি মোবাইল ব্যবহার করতেন তিনি, একটা সময়ে এটা নিজেই অনুধাবন করেন। মোবাইলের ব্যবহার কমানোর জন্য সঙ্গীতকে বেছে নেন আজম, কিনে ফেলেন গিটার। তবে কোনো গুরুর কাছে যাননি, ইউটিউব দেখে দেখে রপ্ত করেছেন গিটার বাজানো। তার পরিচয় এখন সঙ্গীত শিল্পীও। নিয়মিত গানের চর্চা করেন, ভিডিও করে ছাড়েন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও।
সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ফেসবুক পেজে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে আজমকে পাওয়া গেলো ক্রিকেটার, সঙ্গীত শিল্পী; দুইভাবেই। ভিডিওটিতে ক্রিকেটের আদর্শ, ক্রিকেট ক্যারিয়ার, বিপিএল, সঙ্গীত নিয়ে কথা বলা ছাড়াও কয়েকটি গান গেয়ে শোনান আজম।
ক্রিকেটের পাশাপাশি সঙ্গীতের পেছনে সময় দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'মিউজিকে আমি সম্পৃক্ত হয়েছি কারণ, আমার কাছে মনে হতো আমি মোবাইল বেশি ব্যবহার করছি। কিছু কিছু সময় যা আমাকে ক্লান্তও করে দিতো। এজন্য নিজ থেকে উপলব্ধি করে মিউজিকে মনোযোগ দিই।'
'মিউজিক আমাকে মোবাইল থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। সেখান থেকেই আমি হাতে গিটার তুলে নিই। আমি নিজ নিজে গিটার বাজানো শিখি। কোনো ট্রেনার ছিল না, ইউটিউব থেকেই শিখেছি। আমি যখন কোনো ম্যাচ নিয়ে চিন্তিত হই, তখন গিটার হাতে নিই এবং কয়েকটি গান গাই। এই তো…।' যোগ করেন আজম খান।
ক্রিকেটার, সঙ্গীত শিল্পী ছাড়াও আরও একটি বড় পরিচয় আছে আজমের, তিনি পাকিস্তান কিংবদন্তি মঈন খানে ছেলে। বাবাকে দেখেই ক্রিকেটে আসা তার। আজমের ভাষায়, 'আমি আমার বাবাকে দেখেই ক্রিকেট খেলা শুরু করি। তাকে মাঠে দেখা এবং টিভিতে তার খেলা দেখা আমার জন্য অনু্প্রেরণাদায়ক ছিল। এ জন্য ক্রিকেটকে বেছে নেওয়া। আমার পড়াশোনার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। আমার শুরুর পরিকল্পনাই ছিল ক্রিকেট খেলা। আমি এখন বিশ্বজুড়ে খেলছি। উঠা-নামার মধ্য দিয়ে ভালো সময় যাচ্ছে আমার।'
বিপিএলকে ভালো মানের টুর্নামেন্ট বলে মনে হয় আজমের। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য দারুণ একটা প্ল্যাটফর্ম জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি এটা দারুণ একটা টুর্নামেন্ট। বিশেষ করে বাংলাদেশি তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য একটা বড় একটি টুর্নামেন্ট। এ ধরনের প্রতিযোগিতায় খেলে তারা অনেক কিছু শিখবে। নিশ্চয়ই জানেন এখানের উইকেট কঠিন। উপমহাদেশে যখন খেলবেন, তখন কঠিন উইকেটই পাবেন।'