জয় নিশ্চিত ভেবে প্যাড খুলে ফেলেছিলেন শরিফুল
৬ বলে দরকার ৬ রান, উইকেটে তখন মেহেদী হাসান মিরাজ ও অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া তাওহিদ হৃদয়। প্রথম বলেই দর্শনীয় শটে চার মারেন মিরাজ, জয়ের জন্য তখন ৫ বলে লাগে ২ রান। হাতে উইকেট ৫টি, ওই অবস্থায় উইকেট পড়লেও পরে আরও দুজন আছেন; জয় তো নিশ্চিতই! এমন ভাবনা থেকে প্যাড খুলে ফেলেছিলেন ১০ নম্বর পজিশনে নামার জন্য প্রস্তুত থাকা শরিফুল ইসলাম। যদিও তরুণ এই পেসারকে আবার প্যাড পড়ে নামতে হয়, আর জয়সূচক রান আসে তার ব্যাট থেকেই।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাওয়া নাটকীয় জয়ে শেষের নায়ক শরিফুল। যদিও তার কাজটা বল হাতে, কিন্তু ব্যাট হাতে এক চারে সব শঙ্কা দূর করে দলকে এনে দেন রোমাঞ্চকর এক জয়। এর আগে টানা তিন বলে মিরাজ, তাসকিন ও নাসুমকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেন করিম জানাত। এ কারণেই গুরুদায়িত্ব নিয়ে শরিফুলের উইকেটে যাওয়া। কেমন ছিল ওই মুহূর্ত, কী ভাবছিলেন; পরের দিন সেই গল্প শুনিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এই পেসার।
দল পেয়েছে নাটকীয় এক জয়, সেই জয়ে ছিল অবদান; দারুণ ভালো লাগা নিয়েই হয়তো ঘুমোতে যেতে পেরেছেন শরিফুল। শনিবার অনুশীলন না থাকায় আরও কয়েকজনের সঙ্গে সিলেটের রাতারগুলে ঘুরতে যান তিনি। টিম হোটেলে ফেরার পর জানান ওই মুহূর্তের গল্প।
শরিফুল বলেন, '১ ওভারে যখন ৬ রান লাগে, এরপর মিরাজ ভাই চার মারে প্রথম বলেই, আমি তখন নিশ্চিত ছিলাম যে আমরা জিতে যাব। আমি, মুস্তাফিজ ভাই, নাসুম ভাই ভেতরে রিল্যাক্স… প্যাডও খুলে ফেলেছিলাম। দেখলাম যে মিরাজ ভাই আউট হয়ে গেল। তারপর আস্তে আস্তে প্যাড পরতে লাগলাম। তাসকিন ভাই নামলেন। আমি নিচে গেলাম।'
'নাসুম ভাই নামলেন। উনিও আউট হয়ে গেলেন। আমি যখন যাচ্ছিলাম, কোচ আমাকে বললেন, "তুমি পারবে, স্রেফ ব্যাটে বলে সংযোগ করবে, তাহলে সহজ হয়ে যাবে।" আমি মাঠে নামার পর হৃদয় বলছিল যে, "এটা কোনো বিষয় নয়, কোনো চাপও না। ২ বলে ২ রান হবেই। তুমিই পারবা। আর ব্যাটে না লাগলেও দৌড় দেবে।" আমি বললাম, "ঠিক আছে, তুমি বিশ্বাস রাখো, আমি পারব।" পরে তো আল্লাহর রহমতে হয়ে গেছে।' যোগ করেন শরিফুল।
দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়েও দর্শকের ভূমিকায় থাকতে হয় হৃদয়কে। ৩২ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৭ রান করে ম্যাচসেরা হওয়া এই ব্যাটসম্যান স্ট্রাইকে যাওয়ার সুযোগই পাননি। শরিফুলের জন্য অবশ্য তার সঙ্গই যথেষ্ট ছিল। হৃদয় উইকেটে ছিলেন বলেই জোর পাচ্ছিলেন বলে জানান তিনি।
শরিফুলের ভাষায়, 'হৃদয় তখন সেট ব্যাটসম্যান ছিল… ওর সঙ্গে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছি, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপসহ। অনেক দিন একসঙ্গে থেকেছি, অনেক ম্যাচ খেলেছি। ওর ওপর আমার বিশ্বাস ছিল, যদি আমি ব্যাটে নাও লাগাতে পারি, ও যদি স্ট্রাইক পেতো, শেষ করত খেলা। ওটাই বড় বিশ্বাস ছিল।'