দর্শক খরার মাঝেই দুর্দান্ত বিশ্বকাপের আশায় আইসিসি প্রধান
বিশ্বকাপে অনুষ্ঠিত বেশিরভাগ ম্যাচে দর্শক খরা দেখা গেছে। ব্যতিক্রম কেবল ভারতের ম্যাচ, আয়োজক দেশের ম্যাচে গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু বাকি ম্যাচগুলোতেও সেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না দর্শকরা। কিছু কিছু ম্যাচে প্রায় পুরো গ্যালারি ফাঁকা পড়ে থেকেছে। দর্শক খরা চলতে থাকলেও আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে দুর্দান্ত একটি বিশ্বকাপের আশা করছেন।
দর্শক খরার সঙ্গে আছে অভিযোগও। ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তান সমর্থকদের ঘাটতি এবং নিজেদের পক্ষে সমর্থনের অভাবের জন্য আইসিসিকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের কোচ মিকি আর্থার। ম্যাচটিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের বদলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) একটি ইভেন্টের মতো মনে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান এই কোচের কাছে।
এমন অভিযোগ সেভাবে আমলে নিচ্ছেন না আইসিসি প্রধান। তার মতে, আইসিসির সব টুর্নামেন্টেই এমন সমালোচনা থাকে। যদিও সমালোচিত বিষয়গুলো সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বার্কলে। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমাদের প্রতিটি ইভেন্টে বিভিন্ন মহল থেকে সব সময়ই সমালোচনা থাকে, সমালোচনার বিষয়গুলো আমরা সংশোধনের চেষ্টা করব। এটা নিয়ে কাজ করছি। চেষ্টা থাকবে আরও ভালো করার।'
বিশ্ব ক্রিকেটে আর্থিকভাকে সবচেয়ে শক্তিশালী বিসিসিআই। তবে এবারের বিশ্বকাপ আয়োজনে অদূরদর্শিতার ছাপ ছিল তাদের অনেক কাজে। যা নিয়ে চরম সমালোচনা হয়েছে। ঠিক সময়ে সূচি ঘোষণা করতে পারেনি বিসিসিআই, এমনকি সূচি প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পর ম্যাচের তারিখ ও সময়ে পরিবর্তন আনা হয়।
অনলাইনে টিকিট বিক্রিতেও ছিল অনিয়ম। অনেক সমর্থকের অভিযোগ, অনলাইনে স্বাগতিকদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর টিকিটসংখ্যা একেবারেই কম ছিল। আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পাকিস্তানী সমর্থকদের আসতে দেওয়া হয়নি, ভারতীয় ভিসা দেয়া হয়নি তাদের। ম্যাচের দিন পুরো স্টেডিয়াম ভারতের জার্সির রঙে সেজে উঠেছিল। সবাই গলা ফাটিয়েছেন কোহলি-রোহিতদের জন্য। নিজেদের দর্শকদের সামনে দাপুটে ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় ভারত।
আমেরিকা ও ইংল্যান্ড থেকে আসা কিছু পাকিস্তানি দর্শক আহমেদাবাদের ম্যাচটি দেখতে পেরেছেন। ম্যাচ শেষে পাকিস্তান কোচ আর্থার বলেন, 'নির্মম হলেও সত্যি যে এটাকে আমার আইসিসির কোনো ইভেন্ট মনে হয়নি। এটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজের মতো, বিসিসিআইর কোনো ইভেন্টের মতো মনে হয়েছে।' এরপরও আইসিসি প্রধানের ভাষ্য, 'এটি একটি দুর্দান্ত বিশ্বকাপ হতে চলেছে এবং এর আয়োজন নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।'
রাজনৈতিক বৈরীতার কারণে ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধ বহুদিনের। যেটার প্রভাব পড়ে ক্রিকেট মাঠেও। ২০১২ সালের পর এই দুই দেশ কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি। ১১ বছর আগে ভারতে অনুষ্ঠিত সেই সিরিজে পাকিস্তান জেতে ২-১ ব্যবধানে। এ ছাড়া আইপিএলের প্রথম আসরের পর টি-টোয়েন্টি এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটারকে নেওয়া হয় না।