‘শিরোপা জিততে ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে’
নানা সময়ে সম্ভাবনা জেগেছে; কখনও কোয়ার্টার ফাইনাল, কখনও সেমি-ফাইনাল, কখনও বা ফাইনাল। একবারের বেশি শিরোপার স্বাদ নেওয়া হয়নি বাংলাদেশের। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ ও ত্রিদেশীয় সিরিজ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সাতটি ফাইনাল খেলেছে তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত যক্ষের ধন হয়ে আছে ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে জেতা ট্রফিটি।
একবার দুইবার নয়, সাত সাতটি ফাইনাল। বারবার আশা জাগিয়ে, নিঃশ্বাস দূরত্বে পৌঁছেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয় না বাংলাদেশের। ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে এমন যে, ফাইনাল মানেই বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙার গল্প। যে আক্ষেপ-হতাশার গল্পে সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমদের কান্নার দৃশ্য এখনও সুস্পষ্ট। বারবার ফাইনালে হারে কেন বাংলাদেশ? সহজেই বলা যায়, ফাইনালে খেই হারায় তারা। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলছেন, শিরোপা জিততে ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে।
ফাইনালে বারবার পরাজিত সৈনিকের দলে থাকার অনুভূতি ভালো করেই জানা অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের। বাংলাদেশের খেলা সাত ফাইনালের সব কটিতেই তিনি খেলেছেন। কিন্তু দল বা দলের বাকিদের মতো মুখে চওড়া হাসি তোলার সুযোগ হয়েছে ওই একবারই। নিজেকেও অবশ্য 'কাঠগড়ায়' তুলতে পারেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের এসব ফাইনালে কখনই উজ্জ্বল ছিলেন না তিনি, সাত ফাইনালে তার হাফ সেঞ্চুরি কেবল একটি।
আরেকটি বিশ্বকাপ অভিযানে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগামী ৮ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু করবে বাংলাদেশ। এটাকে আরেকটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন মাহমুদউল্লাহ। সম্ভাব্য সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করে ভালো ফল আনার প্রত্যয় সাবেক এই অধিনায়কের কণ্ঠে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা বিসিবির 'গ্রিন-রেড স্টোরি'- এর সর্বশেষ পর্বে মাহমুদউল্লাহ আজ বলেন, 'সুযোগ তো সবসময়ই থাকে। চেষ্টায় আমাদের কোনো কমতি থাকে না। ইনশাআল্লাহ, এবার আমরা ভালো কিছু করব। ট্রফি জিনিসটা আমার মনে হয়, অবশ্যই এটা ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে। আমরা হয়তো কয়েকটা বড় টুর্নামেন্টে খুব কাছাকাছি গিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা পারিনি। আরেকটি সুযোগ আসছে। আমাদের সমর্থন করুন। আমাদের যা সম্ভব সব কিছু করব।'
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৭ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে ৫০টি টেস্ট, ২৩২টি ওয়ানডে ও ১৩১টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। দীর্ঘ পথচলার এই পর্যায়ে এসে নামের পাশে বিশেষ কোনো অর্জন দেখতে চান কিনা জানতে চাওয়া হলে দলের কথাই উল্লেখ করলেন তিনি, 'নামের পাশে... আমি কখনও আমার নাম নিয়ে চিন্তা করিনি। ব্যক্তিগত লক্ষ্য নিয়ে খুব একটা চিন্তা করি না। দলের লক্ষ্য যদি অর্জন হয়, তাতেই অনেক খুশি।'
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুর ম্যাচটিই তাদের কাছে অনেকটা 'ফাইনাল' এর মতো হয়ে উঠেছে। এই ম্যাচের ফলের ওপরই যে অনেকাংশে নির্ভর করবে পরের রাউন্ডে যাওয়া। এই ম্যাচ জিতে শুরুটা ভালো করতে পারলে অনেক দূর যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন মাহমুদউল্লাহ, 'টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বলা কঠিন! যেকোনো দিনে এটা যেকোনো দলের খেলা হতে পারে। আমাদের যে প্রস্তুতি আছে, আমরা ভালো করছি। আমরা শুরুটা কেমন করি তার ওপর নির্ভর করবে। শুরুটা ভালো করলে আমরা অনেক দূর যাব।'