মুশফিক বীরত্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, মিললো বড় লিড
বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে একাধিক ডাবল সেঞ্চুরির মালিক মুশফিকুর রহিম, দীর্ঘতম ফরম্যাটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু দারুণ একটি ইনিংস খেলা মুশফিক শেষ পর্যন্ত ডাবল সেঞ্চুরিতেই পৌঁছাতে পারেননি, ৯ রানের আক্ষেপ থেকে গেছে তার।
মুশফিকের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ইনিংস আর বেশি পথ এগোয়নি, এরপরও অবশ্য বড় লিডই মিলেছে। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমেছে ৬৬৫ রানে, লিড এসেছে ১১৭ রানের। টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। আগের সেরা ছিল ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান, ২০১৫ সালে খুলনাতে।
মুশফিক খেলেছেন দুর্বার এক ইনিংস। দীর্ঘদিনের বিরতির পর একটি চার দিনের ম্যাচের পর টেস্ট খেলতে নেমেই রানের ফোয়ারা বইয়ে দেন তিনি। ৩৪১ বলে ২২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৯১ রান করে আউট হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। এই ইনিংসটি দিয়ে কয়েকটি রেকর্ডে নিজের নাম তুলেছেন মুশফিক। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫টি সেঞ্চুরি এখন তার, ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে (৪টি সেঞ্চুরি)।
মুশফিকের এটা ১১তম সেঞ্চুরি। এতোদিন ১০টি সেঞ্চুরিতে তামিমের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন তিনি। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আরেকটি সেঞ্চুরি করে নিজেকে পরের ধাপে নিয়ে গেলেন দেশের পক্ষে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের এই মালিক। মুশফিকের সামনে কেবল ১২টি সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ২০তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিক, যা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবার উপরে থাকা তামিম ২৫টি সেঞ্চুরির মালিক।
এক সেঞ্চুরিতে দুটি রেকর্ডে তামিমকে ছাড়িয়ে যাওয়া মুশফিক আরেকটি কীর্তিতে তামিমের পাশে নিজের নাম বসিয়েছেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান পূর্ণ করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের রান ১৫ হাজার ১৫৯। ১৫ হাজার ১৯২ রান নিয়ে সবার উপরে তামিম।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে চতুর্থ দিনের শেষ ভাগের খেলা চলে, ইনিংস শেষ হয়েছে ২টি। বাংলাদেশ হয়তো পরের ইনিংসে ব্যাটিং নাও পেতে পারে। সেক্ষেত্রে ৩৩ রান করে তামিমকে ছাড়িয়ে যেতে দ্বিতীয় টেস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে মুশফিককে। টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের তালিকাতেও সবার উপরে তিনি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১৯। এ ছাড়া তালিকার ৬টি ইনিংসের মধ্যে ৪টিই তার।
অনেকগুলো রেকর্ড নিজের করা নেওয়া ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটিরও রেকর্ড গড়েন মুশফিক। সপ্তম উইকেটে ১৯৬ রানের যোগ করেন মুশফিক-মিরাজ, যা টেস্টে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি। ১৪ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছেন তারা। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে ১৪৫ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান।
মুশফিকময় ইনিংসে বাংলাদেশের আরও কয়েকজন ব্যাটসম্যান রানের দেখা পেয়েছেন। বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক ৯৩, মুমিনুল হক ৫০, লিটন কুমার দাস ৫৬ ও মিরাজ ৭৭ রান করেন। পাকিস্তানের ডানহাতি পেসার নাসিশ শাহ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান শানিহ শাহ আফ্রিদি, খুররাম শাহজাদ ও মোহাম্মদ আলী। একটি উইকেট নেন সাইম আইয়ুব।