জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং তাণ্ডব, ৩৪৪ রান তুলে গড়লো বিশ্ব রেকর্ড
একটা ম্যাচে কতোগুলো রেকর্ড হতে পারে? অনেক রেকর্ডই হতে পারে। কিন্তু জিম্বাবুয়ে যেন রেকর্ডের মালা গাঁথতে আজ মাঠে নেমেছিল। শুরুটা করে দিলেন টাডিওয়ানাশে মারুমানি ও ব্রায়ান বেনেট। সেই সুরে সুর মিলিয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ২২ গজে তাণ্ডব চালালেন। স্কোরকার্ডে রেকর্ড সংগ্রহ জমা করে দলীয়সহ ব্যক্তিগত অনেক রেকর্ড গড়লো তারা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উপ-আঞ্চলিক বাছাই পর্বে বুধবার গাম্বিয়ার বিপক্ষে রানের ফোয়ারা বইয়ে দিয়েছে তারা। নাইরোবিতে আগে ব্যাটিং করে ৪ উইকেটে ৩৪৪ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। টি-টোয়েন্টিতে বিশ্ব রেকর্ড। কেবল আন্তর্জাতিক ম্যাচেই নয়, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেই এটা সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ ছিল ৩১৪, মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে করে নেপাল।
রান বন্যা বইয়ে দিয়ে পরে গাম্বিয়াকে মাত্র ৫৪ রানেই অলআউট করে দেয় জিম্বাবুয়ে। ম্যাচটি তারা জিতেছে ২৯০ রানের বিশাল ব্যবধানে। এটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়। রানের হিসেবে এর চেয়ে বড় ব্যবধানে কোনো দল জিততে পারেনি। আগের সর্বোচ্চয় জয় ছিল নেপালের, মঙ্গোলিয়াকে ২৭৩ রানে হারিয়েছিল তারা।
ব্যাটকে তরবারিতে পরিণত করা সিকান্দার রাজা ৩৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। যা যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৭টি চার ও ১৫টি ছক্কায় ১৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস, টি-টোয়েন্টিতে দেশটির প্রথম সেঞ্চুরিয়ানও তিনি। জিম্বাবুয়ের হয়ে ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার মারার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। আগের রেকর্ডও তার ছিল, মারেন ৯ ছক্কা।
টি-টোয়েন্টি বাউন্ডারিতে রান তোলায়ও জিম্বাবুয়ের সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন রাজার মতোই ব্যাট চালানো রাজা। ১৩৩ রানের মধ্যে ১১৮ রানই তিনি বাউন্ডারি থেকে তুলেছেন। একদিনের জন্য রেকর্ডটি ছিল ডিওন মায়ার্সের দখলে। ২২ অক্টোবর রুয়ান্ডার বিপক্ষে ৯৬ রানের ইনিংসে ৮০ রানই বাউন্ডারি থেকে তোলেন তিনি। ১১টি চার ও ৬টি ছক্কা মারেন জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটসম্যান।
রাজার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ঝড় তোলের জিম্বাবুয়ের আরও তিন ব্যাটসম্যান, এই তিন জনই করেন হাফ সেঞ্চুরি। ওপেনার বেনেট ২৬ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় করেন ৫০ রান। ১৯ বলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬২ রানের খুনে ইনিংস খেলেন মারুমানি। এর আগে ১৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। যা জিম্বাবুয়ের দ্রুততম ও সব মিলিয়ে যৌথভাবে তৃতীয় দ্রুততম। শেষ দিকে ১৭ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ৫৩ রান করেন ক্লাইভ মাদান্দে। রায়ান বার্ল ১১ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৫ রান করেন।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসে ছক্কা ছিল ২৭টি, যা স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। আগের রেকর্ডধারী নেপালের ইনিংসে ছিল ২৬ ছক্কা। চা ও ছক্কা মিলিয়ে জিম্বাবুয়ে বাউন্ডারি মেরেছে ৫৭টি। এটাও টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ছিল ভারতের দখলে, কিছুদিন আগে হায়দরাবাদে ৪৭টি বাউন্ডারি মারে সূর্যকুমার যাদবের দল।
গাম্বিয়ার বিপক্ষে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ১০৩ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটা দ্বিতীয় সেরা পাওয়ার প্লে। অস্ট্রেলিয়ার দখলে পাওয়ার প্লে থেকে সর্বোচ্চ রান তোলার রেকর্ডটি। গত মাসে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ ওভারে ১১৩ রান তোলে অজিরা।
সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার বিব্রত রেকর্ডে নাম উঠেছে গাম্বিয়ার মুসা জোবারতেহর। ৪ ওভারে ২৩.২৫ ইকোনমিতে তার খরচা ৯৩ রান। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে খরুচে বোলিং এটি। সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার তালিকায় সবার উপরে ছিল শ্রীলঙ্কার পেসার কাসুন রাজিথার নাম, ২০১৯ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৫ রান দিয়েছিলেন তিনি।