‘টেনেটুনে’ ফলোঅন এড়িয়ে দিন পার করলো বাংলাদেশ
প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৬৯ রান। তবে উইকেটের সংখ্যাটি ১০-ও হতে পারতো, অর্থাৎ, বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যেতে পারতো। সেটা হয়নি আলোক স্বল্পতার কারণে, ১২ ওভার বাকি থাকতেই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে এখনও ১৮১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে চলমান টেস্টে বাংলাদেশের যে দুজন অপরাজিত, তারা কেউ-ই ব্যাটসম্যান নন, দুজনই বোলার। তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম; তাদের ব্যাটে খুব বেশি পথ পাড়ি দেওয়া যে সম্ভব হবে না; এমন ভবিষ্যদ্বাণী যে কেউ-ই করতে পারবেন। তাসকিন ১১ ও শরিফুল ৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
ইনিংস শেষ হয়নি, এভাবে ভেবে স্বস্তি পাওয়ার উপায় নেই বাংলাদেশের। তাসকিন-শরিফুলের জুটিতে বড় রান পাওয়ার আশা করারও সুযোগ নেই। বরং এখনও অনেক রানে পিছিয়ে থাকায় আরও একটি টেস্ট হারের দুশ্চিন্তা পেয়ে বসতে পারে সফরকারীদের। আর এই দুশ্চিন্তার অংশ হওয়ার কথা টানা ব্যাটিং ব্যর্থতার বিষয়টিও।
পাকিস্তানের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে জেতা টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ এমন পারফরম্যান্স করে, যা উল্লেখযোগ্য। যেখানে ছিল ব্যাট হাতে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, পেসারদের দুর্বার বোলিং ও দলগত পারফরম্যান্স। কিন্তু ওই সিরিজের পর বাংলাদেশ যে নিজেদের হারিয়েছে, অনেক খুঁজেও পুরনো 'নিজেদের দেখা মিলছে না। ভারত সফর, ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ মিলিয়ে চারটি টেস্ট হারা দলটি আরও একবার কোণঠাসা অবস্থায়, মাথায় হারের চিন্তা।
আগের চার টেস্টেই বাংলাদেশের হারের অন্যতম কারণ ছিল ব্যাটিং ব্যর্থতা। তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু পুরনো গল্পই নতুন মোড়কে ফিরে এসেছে। যে উইকেটে ক্যারিবীয়রা ৯ উইকেটে ৪৫০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে, সেই উইকেটেই ব্যাট হাতে দিশা হারানো বাংলাদেশ ফলোঅন এড়িয়েছে 'টেনেটুনে'।
২ উইকেটে ৪০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। আগের দিনের মতো আজও তারা শুরুটা ভালো করতে পারেনি। দলীয় ৬৬ রানে ফিরে যান শাহাদাত হোসেন দিপু। আগের দিন মুমিনুল হকের সঙ্গে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া ডানহাতি তরুণ এই ব্যাটসম্যান ৭১ বলে বলে ১৮ রান করেন। তৃতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে তার জুটি হয় ৪৫ রানের।
এরপুর মুমিনুল ও লিটন কুমার দাসের লড়াই, তাড়া গড়েন ৬২ রানের জুটি। এর মাঝে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২১তদম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল, ১১৬ বলে ৩টি চারে ৫০ রান করে আউট হন সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক। এই ইনিংস দিয়ে প্রথম শ্রেণিতে ১০ হাজার পূর্ণ হয়েছে তার। মাত্র তৃতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন তিনি। সবার ওপরে তুষার ইমরান, দুই নম্বরে নাঈম ইসলাম।
মুমিনুলের কিছুক্ষণ পরই ফেরেন লিটন, ডানহাতি উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান ৭৬ বলে ৩টি চারে ৪০ রান করেন। দলকে পথ দেখাতে পারেনি অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও, ৬৭ বলে ৩টি চারে ২৩ রান করেন তিনি। সপ্তম উইকেটে জুটি গড়ে তোলেন জাকের আলী অনিক ও তাইজুল ইসলাম। এ দুজন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬৮ রান যোগ করেন।
তাইজুল ৬৩ বলে ২৫ রান করে ফেরার পর আরও কিছু সময় উইকেটে থাকেন জাকের, তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরিও। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৮৯ বলে ৪টি চারে ৫৩ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার আলজারি জোসেফ ৩টি উইকেট নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন জেডেন সিলস ও জাস্টিন গ্রিভস। একটি করে উইকেট নেন কেমার রোচ ও শামার জোসেফ।