১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের
ইনিংস ঘোষণা করার ব্যাপারটি কোনো দলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকে বোঝায়। প্রতিপক্ষের চেয়ে যথেষ্ট রানে এগিয়ে থাকলে সাধারণত কোনো দল ইনিংস ঘোষণা করে। পিছিয়ে থেকেও ইনিংস ঘোষণা করাটা এসব ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটনা। সেই ব্যতিক্রম ঘটনাই ঘটালো বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে অনেক রানে পিছিয়ে থাকার পরও প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে সফরকারীরা।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৬৯ রান তুলে ব্যাটিং ছেড়েছে বাংলাদেশ। ১৮১ রানে পিছিয়ে থাকার পরও বাংলাদেশের ইনিংস ঘোষণা করার বিষয়টি কতোটা তাৎপর্যপূর্ণ, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে অবস্থা বিবেচনায় এটা বলে দেওয়া যায়-ই যে, অলআউট না হতেই বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত।
৯ উইকেটে ২৬৯ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ১১ ও শরিফুল ইসলাম ৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। আজ তাদের দিনের খেলা শুরু করার কথা ছিল। খেলা ঠিক সময়েই মাঝে গড়িয়েছে আজ, তবে বাংলাদেশ আর ব্যাটিংয়ে নামেনি। অর্থাৎ, আজ কোনো বল মোকাবিলা করেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ইনিংস ঘোষণা করে ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে পাঠায় মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
মিকাইল লুই, আলিক আথানেজ ও সেঞ্চুরিয়ান জাস্টিন গ্রিভসের ব্যাটে ৯ উইকেটে ৪৫০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো ছিল না। ২১ রানে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। ২ উইকেটে ৪০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দলীয় ৬৬ রানে ফিরে যান শাহাদাত হোসেন দিপু। আগের দিন মুমিনুল হকের সঙ্গে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া ডানহাতি তরুণ এই ব্যাটসম্যান ৭১ বলে বলে ১৮ রান করেন। তৃতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে তার জুটি হয় ৪৫ রানের।
এরপুর মুমিনুল ও লিটন কুমার দাসের লড়াই, তাড়া গড়েন ৬২ রানের জুটি। এর মাঝে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল, ১১৬ বলে ৩টি চারে ৫০ রান করে আউট হন সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক। এই ইনিংস দিয়ে প্রথম শ্রেণিতে ১০ হাজার পূর্ণ হয়েছে তার। মাত্র তৃতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন তিনি। সবার ওপরে তুষার ইমরান, দুই নম্বরে নাঈম ইসলাম।
মুমিনুলের কিছুক্ষণ পরই ফেরেন লিটন, ডানহাতি উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান ৭৬ বলে ৩টি চারে ৪০ রান করেন। দলকে পথ দেখাতে পারেনি অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও, ৬৭ বলে ৩টি চারে ২৩ রান করেন তিনি। সপ্তম উইকেটে জুটি গড়ে তোলেন জাকের আলী অনিক ও তাইজুল ইসলাম। এ দুজন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬৮ রান যোগ করেন।
তাইজুল ৬৩ বলে ২৫ রান করে ফেরার পর আরও কিছু সময় উইকেটে থাকেন জাকের, তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরিও। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৮৯ বলে ৪টি চারে ৫৩ রান করেন। ১৫ বলে ১২ রানের জুটি গড়ে দিনের বাকি সময় পার করেন তাসকিন-শরিফুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার আলজারি জোসেফ ৩টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান জেডেন সিলস ও জাস্টিন গ্রিভস। একটি করে উইকেট নেন কেমার রোচ ও শামার জোসেফ।