শেখ মেহেদির স্পিন ছোবলে ঢাকাকে উড়িয়ে দুর্বার শুরু রংপুর রাইডার্সের
জিততে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হতো ঢাকা ক্যাপিটালসকে। লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটাও মনের মতো হয়েছিল দলটির। কিন্তু যমদূত হয়ে হাজির হওয়া রংপুর রাইডার্সের স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান মুহূর্তেই দৃশ্যপট পাল্টে দেন। দুই ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে ঢাকাকে কোণঠাসা করে ফেলেন তিনি, যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সামান্যতম সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারেনি দলটি। দুর্বার জয়ে শুরু হলো রংপুর রাইডার্সের।
সোমবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসকে ৪০ রানে হারিয়েছে রংপুর। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে সাইফ হাসান, ইফতিখার আহমেদ ও খুশদিল শাহর চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৯১ রান তোলে রংপুর। জবাবে শেখ মেহেদির তোপে দিক হারানো ঢাকা ক্যাপিটালস ভোগে খুশদিল শাহ ও নাহিদ রানার বিপক্ষে। ৯ উইকেটে ১৫১ রানে থামে ঢাকার ইনিংস।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় ঢাকার শুরুটা দুর্বার হয়। ৭.২ ওভারে ৬৫ রান যেগি করে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন কুমার দাস। কিন্তু এই জুটি ভাঙার পর দিক হারিয়ে বসে দলটি, তাদের কোনো ব্যাটসম্যানই পারেননি দায়িত্ব নিয়ে দলকে পথ দেখাতে। ২৭ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন লিটন।
তরুণ ওপেনার তানজিদ তামিম ২১ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩০ রান করেন। এ দুজনই রংপুরের স্পিনার শেখ মেহেদি হাসানের শিকারে পরিণত হন। হাবিবুল রহমান সোহান ও ফরমানউল্লাহ শাফিকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঢাকাকে পথ ভুলিয়ে দেওয়া শেখ মেহেদি।
স্টিফেন এসকিনজাই ২১ বলে ১৭, অধিনায়ক থিসারা পেরেরা ১৭, মকিদুল ইসলাম মুদ্ধ ১৮ ও নাজমুল ইসলাম অপু ১২ রান করেন। ঢাকাকে কোণঠাসা অবস্থায় ফেলে দেওয়া শেখ মেহেদি ৪ ওভারে ২৭ রানে ৪টি উইকেট নেন। ব্যাট হাতে ঝড়ো ইনিংস খেলা খুশদিল বল হাতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, ২ ওভারে ১৫ রানে ২টি উইকেট নেন তিনি। একটি করে উইকেট পান সাইফউদ্দিন, কামরুল রাব্বি ও রাকিবুল হাসান। কৃপণ বোলিং করলও উইকেট পাননি নাহিদ। ডানহাতি এই গতি তারকা ৩ ওভারে ১১ রান দেন।
এর আগে ব্যাটিং করা রংপুর রাইডার্স শুরুটা ভালো না করতে পারলেও অল্প সময়ের মধ্যে গুছিয়ে নেয়। ২০ রানের মধ্যে স্টিভেন টেইলর ও অ্যালেক্স হেলস ফিরে গেলে জুটি গড়ে তোলেন অভিজ্ঞ ইফতিখার আহমেদ ও সাইফ হাসান। তৃতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ৮৯ রানের জুটি গড়েন তারা। সাইফ হাসানের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি।
দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩৩ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪০ রান করেন। এরপর খুশদিল শাহর সঙ্গে ২৩ রানের জুটি গড়ে আউট হন রংপুরের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা ইফতিখার। ৩৪ বছর বয়সী পাকিস্তানের ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩৮ বলে ৮টি চারে ৪৯ রান করেন।
এরপর রংপুরের রান এগিয়েছে খুশদিল ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের জুটিতে। পঞ্চম উইকেটে ১৮ বলে ৪১ রান যোগ করেন তারা। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা খুশদিল শেষ পর্যন্ত ব্যাট চালান। পাকিস্তানের বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ২৩ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত ৪৬ রান করেন।
ছোট হলেও কার্যকরী ইনিংস খেলেন সোহান। ডানহাতি উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান ১১ বলে ৬টি চারে ২৫ রান করেন। এর মধ্যে এক রান দৌড়ে নেন তিনি, বাকি সব রান করেন বাউন্ডারি থেকে। ঢাকার আলিউদ্দিন বাবু ৩টি উইকেট নেন। মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ২টি ও মুস্তাফিজুর রহমান একটি উইকেট পান।