রুদ্ধশ্বাস জয়ে রংপুরের ঘাড়ে বরিশালের নিঃশ্বাস
প্লে-অফ নিশ্চিত হয়েছে আগেই, লড়াই এখন এগিয়ে থাকার। শীর্ষ দুই দল হলে যে বাড়তি সুবিধা, ফাইনালে ওঠার মিশনে মেলে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ। সেই লক্ষ্যে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে ফরচুন বরিশাল। সিলেট পর্বে সর্বশেষ ম্যাচ হারা দলটি আজও ওড়ালো বিজয় নিশান। বড় লক্ষ্য গড়েও হারের অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো খুলনা টাইগার্সকে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে খুলনাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বরিশাল। বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এটা টানা পঞ্চম জয়, সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি ম্যাচ হেরেছিল তামিম ইকবালের দল। ১০ ম্যাচে আট জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে বরিশাল। শীর্ষ দল রংপুর রাইডার্সেরও ১৬ পয়েন্ট, তবে রান রেটে তারা এগিয়ে।
আজকের হারে প্লে-অফের পথ কঠিন হলো খুলনা টাইগার্সের। ১০ ম্যাচের চারটিতে জিতেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। আট পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে আছে তারা। বাকি থাকা দুই ম্যাচে জিতলে ১২ পয়েন্ট হবে খুলনার, তবে সেটা প্লে-অফে উঠতে যথেষ্ঠ নাও হতে পারে। কারণ আরও দুটি দলের ১২ পয়েন্ট হওয়ার সুযোগ আছে। ৯ ম্যাচে পাঁচ জয়ে তিন নম্বরে চিটাগং কিংস। ১১ ম্যাচের পাঁচটিতে জেতা দুর্বার রাজশাহী চার নম্বরে।
প্লে-অফ নিশ্চিতের পথে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে খুলনা টাইগার্স। দলটির হয়ে ব্যাটিং করা সাত ব্যাটসম্যানের ছয়জনই রানের দেখা পেয়েছেন। হাফ সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখ, অধিনায়ক মিরাজ, আফিফে হোসেন ধ্রুব, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনদের ব্যাটে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান তোলে খুলনা। জবাবে ম্যাচসেরা ডেভিড মালানের হাফ সেঞ্চুরির পর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে এগোয় বরিশাল। জয় তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন ঝড় তোলা ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নবি। উত্তেজনা ছড়ালেও দারুণ ছন্দে থাকা দলটি ৫ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় বরিশালের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই রানের দেখা পেয়েছেন। অনেকে ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। সর্বোচ্চ রানেরর ইনিংস খেলেন মালান, ইংল্যান্ডের বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩৭ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৩ রান করেন। ওপেনার তাওহিদ হৃদয় ৭ বলে ১১ রান করে আউট হন। ২৫ বলে ২৭ রান করেন তামিম। ১৭ বলে ২টি ছক্কায় ২৪ রান করেন মুশফিক। আরও দ্রুত রান তোলেন মাহমুদউল্লাহ, ১৩ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি।
শেষ দিকে নেমে ঝড় তোলেন বরিশালের হয়ে প্রায় প্রতি ম্যাচে অবদান রাখা ফাহিম। পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার ৬ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১৮ রান করেন। ১০ বলে একটি ছক্কায় ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন নবি। খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। একটি করে উইকেট পান সালমান ইরশাদ ও আফিফ হোসেন।
এর আগে ব্যাটিং করা খুলনার ইনিংসে সবচেয়ে বড় অবদান নাঈম শেখের। দাপুটে ব্যাটিংয়ে ২৭ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫১ রান করেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ১৮ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৯ রান করেন অধিনায়ক মিরাজ। অ্যালেক্স রস ১৫ বলে ২০ ও আফিফ ২৭ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩২ রান করেন। ১৬ বলে ২টি চারে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন উইলিয়াম বসিস্তো। খুনে ব্যাটিংয়ে শেষ দিকে রান বাড়ানো অঙ্কন ১২ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। বরিশালের ফাহিম ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান জেমস ফুলার, মোহাম্মদ নবি ও ইবাদত হোসেন।