রান খরার ম্যাচে সাকিবের দলের জয়
ভালোভাবে এগোনো ইনিংস হঠাৎ ছত্রখান। মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন তোপে দিক হারিয়ে খাদের কিনারে ফরচুন বরিশাল। সেখান থেকে হাল ধরে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিলেন জিয়াউর রহমান ও ডোয়াইন ব্রাভো। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল বরিশাল।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স বড় স্কোর গড়তে পারেনি। সাকিব, আলজারি যোসেফ, নাঈম হাসানদের দারুণ বোলিংয়ে ৮ উইকেটে ১২৫ রান তোলে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। জবাবে বাজে শুরুর পর ইনিংস গুছিয়ে নেওয়া বরিশাল মাঝে আবারও দিক হারায়। তবে জিয়াউর ও ব্রাভোর ব্যাটে ১৮.৪ ওভারে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয় তাদের।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে বরিশালের শুরুটা ভালো হয়নি। দরীয় ৩ রানেই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে হারায় তারা। দ্বিতীয় উইকেটে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন সৈকত আলী ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু এই জুটিও দীর্ঘ হয়নি। দলীয় ২৮ রানে এগিয়ে খেলতে গিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হন সাকিব। ফেরার আগে ১৩ রান করেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে সৈকত আলীর সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়ে তোলের তৌহিদ হৃদয়। দলীয় ৬২ রানে হৃদয়কে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। এক পাশ আগলে খেলে যাওয়া সৈকত আলী নতুন সঙ্গী ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন।
ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বরিশাল। কিন্তু ১৫তম ওভারে বরিশালের স্কোরকার্ডের চেহারা পাল্টে দেন মিরাজ। টানা দুই বলে সৈকত আলী ও ইরফান শুক্কুরকে ফিরিয়ে দেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। এই ওভারের শেষ বলে রান আউট হন সালমান হোসেন। সৈকত ৩৯ ও ইরফান ১৬ রান করেন।
শূন্য রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বরিশালের দায়িত্ব ওঠে ডোয়াইন ব্রাভো ও জিয়াউর রহমানের কাঁধে। দায়িত্বটা ভালোভাবেই শেষ করেন এ দুজন। বরিশালকে জেতানো ব্রাভো ১০ বলে একটি চারে ১২ ও জিয়াউর ১২ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। মিরাজ ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন, যা তার ক্যারিয়ার সেরা। এ ছাড়া মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ একটি উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে দলীয় ৬ রানেই ওপেনার কেনার লুইসকে হারায় চট্টগ্রাম। ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান ছক্কা মেরে ইনিংসের সূচনা করে পরে আর কোনো রান করতে পারেননি। তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুবও টিকতে পারেননি। ৬ রান করে বিদায় নেন তিনি।
এরপর দ্রুতই ফেরেন সাব্বির রহমান ও উইল জ্যাকস। সাব্বির ৮ ও জ্যাকস ১৬ রান করেন। দলের দুঃসময়ে ব্যাট চালাতে পারেননি অধিনায়ক মিরাজ ৯ রান করে আউট হন তিনি।
শামীম হোসেন পাটোয়ারি ও অভিজ্ঞ নাঈম ইসলাম ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শামীম ১৪ ও নাঈম ১৫ রান করেন। ১০০ রানের আগেই শেষ হতে পারতো চট্টগ্রামের ইনিংস। কিন্তু বেনি হাওয়েলের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সেটা হয়নি।
ইংল্যান্ডের ডানহাতি এই অলরাউন্ডার শেষ দিকে ঝড়ো ইনিংসে চট্টগ্রামের ইনিংস এগিয়ে নেন। ২০ বলে ৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪১ রানে ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। বরিশালের আলজারি ৩টি ও নাঈম ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান সাকিব, জ্যাক লিনটট ও ডোয়াইন ব্রাভো। সাকিব ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচা করেন।