রনি-পেরেরার ব্যাটে রান পাহাড় টপকালো মুশফিকের খুলনা
২০ ওভারে ১৮৩; রান পাহাড় গড়ে নির্ভারই ছিল মিনিস্টার ঢাকা। কিন্তু মারকাটারি এই ফরম্যাটে কোনো সংগ্রহই যে নিরাপদ নয়, সেটা তাদের মনে করিয়ে দিল খুলনা টাইগার্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রান পাহাড় টপকে দারুণ এক জয় তুলে নিল মুশফিকুর রহিমের দল। ৫ উইকেটের জয় দিয়ে বিপিএল মিশন শুরু করলো খুলনা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে মিনিস্টার ঢাকা। তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ শাহজাদ ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে ১৮৩ রান তোলে ঢাকা। জবাবে ম্যাচসেরা রনি তালুকদার ও আন্দ্রে ফ্লেচারের তাণ্ডবের পর থিসারা পেরেরার শেষের ঝড়ে ৬ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় খুলনা।
বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে খুলনার শুরুটা ছিল হতাশার। দলীয় ৮ রানেই ফিরে যান তাদের তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। উইকেটে হারানোর দুঃখ অবশ্য নিমেষেই ভুলিয়ে দেন আরেক ওপেনার রনি তালুকদার ও ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ফ্লেচার।
ঢাকার বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন এ দুজন। ফ্লেচার ছিলেন খুনে চেহারায়। ইনিংসের চতুর্থ ও রুবেলের করা প্রথম ওভারে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রান তুলে নেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়েন রনি-ফ্লেচার। ৮ ওভারে ৮০ রান পেয়ে যায় খুলনা। এ সময় থামেন ফ্লেচার। ফেরার আগে ২৩ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৫ রান করেন তিনি।
এরপর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম দ্রুতই বিদায় নেন, ৬ রান করেন তিনি। এক পাশ আগলে আরও কিছুটা সময় খেলেন রনি। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪২ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে আউট হন। এখান থেকে হোল ধরেন ইয়াসির আলী রাব্বি ও থিসারা পেরেরা।
ইয়াসির অবশ্য বেশি সময় টিকতে পারেননি। ১৪ বলে একটি চারে ১৩ রান করে আউট হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। পেরেরার সঙ্গে যোগ দেন শেখ মেহেদি হাসান। এই দুজন দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ১৮ বলে ৬টি চারে ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন লঙ্কান অলরাউন্ডার পেরেরা। শেখ মেহেদি ৫ বলে একটি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত ১২ রান করেন। ঢাকার এবাদত হোসেন ও আন্দ্রে রাসেল ২টি করে উইকেট নেন। একটি উইকেট পান শুভাগত হোম।
এর আগে ব্যাটিং করা ঢাকার শুরুটা হয় দাপুটে। তামিমকে এক পাশে রেখে মারকুটে মেজাজে খেলে যেতে থাকেন দলটির আফগান ওপেনার শাহজাদ। তামিম এ সময় কেবল সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন। শাহজাদের দাপুটে ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৮.১ ওভারে ৬৯ রান পায় ঢাকা। রান আউটে কাটা পড়ে থামতে হয় শাহজাদকে। ফেরার আগে ২৭ বলে ৮টি চারে ৪২ রান করেন তিনি।
এরপর শাহজাদের ভূমিকায় নাম লেখান তামিম। নাঈম শেখকে এক পাশে রেখে ব্যাট চালিয়ে যেতে থাকেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪০ রান যোগ করেন তামিম-নাঈম। এর মাঝে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। দলীয় ১০০ পেরিয়ে আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ৭টি চারে ৫০ রান করেন তিনি।
নাঈম বেশি সময় টিকতে পারেননি, ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৭ রান করা আন্দ্রে রাসেল অদ্ভুত রান আউটের শিকার হয়ে ফিরে যান। জহুরুল ইসলাম অমিকে নিয়ে কিছুটা পথ পাড়ি দেন মাহমুদউল্লাহ। জহুরুল ১২ রান করে ফেরার পর শুভাগত হোমকে নিয়ে তাণ্ডব চালান মাহমুদউল্লাহ।
ঢাকার অধিনায়ক ২০ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রানের খুনে ইনিংস খেলেন। শুভাগত ৪ বলে ৯ রানে এবং ইসুরু উদানা ২ বলে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। খুলনা টাইগার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। একটি উইকেট নেন থিসারা পেরেরা।