তামিম-মাহমুদউল্লাদের টানা দ্বিতীয় হার
প্রথম ম্যাচে ১৮৩ রানের মতো বড় স্কোর গড়েও হার মানতে হয় মিনিস্টার ঢাকাকে। দ্বিতীয় ম্যাচে মাঝারি লক্ষ্য পেয়েও তা টপকাতে পারলো না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তামিম ইকবালই যা রান করলেন, বাকিরা উইকেটে গেছেন আর ফিরেছেন। তাতে স্বাভাবিকভাবেই ফল বিপক্ষে গেছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে হেরে গেছে ঢাকা। ব্যাটে-বলে দারুণ লড়াই করে ৩০ রানের জয় তুলে নিয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের চট্টগ্রাম। তাদের বিপিএল মিশনও হারে শুরু হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়েই ঘুরে দাঁড়ালো তারুণ্য নির্ভর দলটি।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উইল জ্যাকস, সাব্বির রহমান ও বেনি হাওয়েলের ব্যাটে ৮ উইকেটে ১৬১ রান তোলে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। জবাবে ম্যাচসেরা নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলামদের দারুণ বোলিংয়ের বিপক্ষে মিনিস্টার ঢাকার হয়ে কেবল তামিম ইকবালই রানের দেখা পেয়েছেন। অভিজ্ঞ এই ওপেনার হাফ সেঞ্চুরি করলেও অন্যদের ব্যর্থতায় ১৯.৫ ওভারে ১৩১ রানে অলআউট হয়ে যায় ঢাক।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার শুরুটা একেবারে মন্দ ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ৪২ রান যোগ করেন মোহাম্মদ শাহজাদ ও তামিম ইকবাল। এদিন আফগান ওপেনারকে এক পাশে রেখে ব্যাট চালিয়ে গেছেন তামিম। শাহজাদ তার স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করতে পারেননি, ১২ বলে ৯ রান করে বিদায় নেন তিনি।
এরপর তামিমই যা লড়েছেন। বাঁহাতি এই অভিজ্ঞ ওপেনার ৪৫ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫২ রান করেন। এই ইনিংস দিয়ে বিপিএলের সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে গেছে তামিম। প্রথম ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি করা তামিম ৭২ ম্যাচে ২ হাজার ৩২৬ রান নিয়ে সবার ওপরে। ৮৬ ম্যাচে ২ হাজার ২৮০ রান নিয়ে দুই নম্বরে মুশফিকুর রহিম।
তামিমের বিদায়ের পর কয়েকজন আশা জাগিয়েও পারেননি। জহুরুল ইসলাম অমি ১০, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ৫, আন্দ্রে রাসেল ১২, শুভাগত হোম ১৩ ও ইসুরু উদানা ১৪ রান করেন। এক বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় ঢাকা। চট্টগ্রামের বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন। এ ছাড়া নাসুম আহমেদ ৩টি এবং মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও নাঈম ইসলাম একটি করে উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রামের শুরুটা ভালো না হলেও দলকে সেটা বুঝতে দেননি উইল জ্যাকস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৮ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। আফিফকে অবশ্য কিছু করতে হয়নি, ঢাকার বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন জ্যাকস। ৪৮ রানের জুটিতে ১৭ বলে ১৩৬ রান করেন ইংলিশ ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
জ্যাকসকে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া আফিফ ধীর স্থিরভাবেই খেলে যাচ্ছিলেন। এরপরও ইনিংস বড় করতে পারেননি চট্টগ্রামের বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১২ বলে ১২ রান করে আউট হন তিনি। ২ রান পর থামেন জ্যাকসও। ফেরার আগে ২৪ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি।
দ্রুত ২টি উইকেট হারানোর চাপ কাটিয়ে তোলেন সাব্বির রহমান ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। এ দুজন গড়েন ৪৪ রানের জুটি। মিরাজ দেখেশুনে খেললেও মারকুটে মেজাজে ছিলেন সাব্বির। দলীয় ১০০ রানে থামতে হয় মিরাজকে। ২৫ বলে ৪টি চারে ২৫ রান করেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক।
সাব্বির ১৭ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ রান করে আউট হওয়ার পর চট্টগ্রামের ইনিংসের বাকিটা সময় ব্যাট হাতে রাজত্ব করেন বেনি হাওয়েল। ইংলিশ এই অলরাউন্ডার টর্নেডো স্টাইলে ১৯ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৭ রান করেন। শামীম হোসেন পাটোয়ারী ১ ও নাঈম ইসলাম শূন্য রান করেন। ঢাকার পেসার রুবেল হোসেন ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান আরাফাত সানি, ইসরু উদানা, শুভাগত হোম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।