রুদ্ধশ্বাস লড়াই জিতে আশা বাঁচিয়ে রাখলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
জয়ের জন্য শেষ ওভারে মিনিস্টার ঢাকার দরকার ছিল ৯ রান। প্রথম বলেই কাইস আহমেদের স্টাম্প উপড়ে নিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পেসার মুত্যঞ্জয় চৌধুরী। উইকেটে এসে দুটি বলে রান নিতে পারলেন না নতুন ব্যাটসম্যান নাঈম শেখ। এরপর তামিম ইকবাল ও নাঈম মিলে এক এক করে আগালেন। শেষ বলে দরকার ৫ রান, এমন সময় ফুল টসে নো বল করলেন মৃত্যুঞ্জয়। সেটাও কাজে লাগাতে ব্যর্থ নাঈম। এমনকি ফ্রি হিট থেকে নিলেন ১ রান। রোমাঞ্চকর জয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্লে-অফে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখলো চট্টগ্রাম।
নতুন অধিনায়কত্বে নতুন শুরু হলো চট্টগ্রামের। এদিনই নাঈম ইসলামকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হয়েছে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। তার নেতৃত্বে টানা তিন ম্যাচে হারা চট্টগ্রাম মঙ্গলবার মিনিস্টার ঢাকাকে ৩ রানে হারিয়েছে। ৯ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে আছে চট্টগ্রাম। সমান ম্যাচে ৩ জয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে আছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল মিনিস্টার ঢাকা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অধিনায়ক আফিফে হোসেন ধ্রুব, শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও বেনি হাওয়েলের ব্যাটে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান তোলে চট্টগ্রাম। জবাবে ৭৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে তামিম ইকবাল অপরাজিত থাকার পরও মিনিস্টার ঢাকার ইনিংস থামে ৬ উইকেটে ১৪৫ রানে।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার হয়ে কেবল তিনজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করতে পেরেছেন। বাকিরা কেউ-ই উইকেটে থিতু হতে পারেননি, ১০ রানের কোটা পেরোতে ব্যর্থ হওয়া ঢাকার চারজন ব্যাটসমানের কেউ ৮ বলের বেশি খেলতে পারেননি।
ওপেনিংয়ে নেমে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেও দলকে জেতাতে পারেননি তামিম। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ওপেনার ৫৬ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। ঢাকার হয়ে দুই অঙ্কের রান করা দুই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুভাগত হোমের ইনিংসটা ছিল কার্যকর। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ১১ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রান করেন।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। এই রান করে দলকে এগিয়ে দেওয়ার চেয়ে বরং বিপদ বাড়িয়েছেন। বল-রানের ব্যবধানে ঢাকা যখন পিছিয়ে পড়ছে, তখন ২৪ রান তুলতে ২৯ বল খরচা করেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ৭ রান ও তিনে নামা ইমরান উজ্জামান ৮ রান করেন।
এদিন চার নম্বরে ব্যাটিং করা মাশরাফি বিন মুর্তজা ২ বলে কোনো রান করতে পারেননি। চট্টগ্রামের জয়ের অন্যতম নায়ক মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ৪ ওভারে ২১ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন। এ ছাড়া শরিফুল ২টি এবং নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রামের হয়ে মূলত চারজন ব্যাচসম্যান রান করেছেন। দুই অঙ্কের রানও করেছেন এই চারজন। ৩৭ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা শামীম পাটোয়ারী। এ ছাড়া উইল জ্যাকস ২৬, আফিফ হোসেন ২৭ ও বেনি হাওয়েল অপরাজিত ২৪ রান করেন। ঢাকার মাশরাফি বিন মুর্তজা, ফজলহক ফারুকী, আরাফাত সানি, এবাদত হোসেন, কাইস আহমেদ ও মাহমুদউল্লাহ একটি করে উইকেট নেন।