‘ফজল আমাকে হারিয়ে দিয়েছে, এটা মেনে নেওয়ায় লজ্জার কিছু নেই’
বাংলাদেশের ঘরের মাঠ, তামিম ইকবালের কাছে তা আরও আপন। এই চট্টগ্রামেই তার বেড়ে ওঠা। যদিও নিজের শহরে ব্যাট হাতে কখনই শাসন করা হয় না বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ২৪টি সেঞ্চুরির মালিক তামিম চট্টগ্রামে মাত্র একবার তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন।
আরও একবার নিজের শহরে অনুজ্জ্বল থেকে গেছেন তামিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অভিজ্ঞ এই ওপেনারের রান ৩১, সর্বোচ্চ ১২। হতাশার এই সিরিজে তামিমের কাছে দুঃস্বপ্নের নাম হয়ে উঠেছিল ফজল হক ফারুকী। তিন ওয়ানডেতেই আফগান বাঁহাতি এই পেসারের বলে আউট হন তিনি।
সিরিজ শেষে তামিম জানালেন, ফজল তাকে হারিয়ে দিয়েছেন। আর এটা মেনে নিতে লজ্জা নেই তার। ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, 'আমার এতো বড় ক্যারিয়ারে খুব কম সময়ই গোটা সিরিজে রান করতে পারিনি। আগে হয়তো দুই-একবার হয়েছে এমন। হ্যাঁ, আমি হতাশ। বিশেষ করে আমার কাছে মনে হয়, এক বোলারের বলেই বারবার… এটা মেনে নেওয়ায় লজ্জার কিছু নেই যে সে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে আমার মনে হয়।'
আবার তামিম এটাও মনে করালেন, ওই জায়গাতেই অনেক রান করেছেন তিনি। তার ভাষায়, 'একই ধরনের ডেলিভারিতে তিনবার আউট হয়েছি বলেই যে কাজ করতে হবে, এমন নয়। কারণ, ওই জায়গায় আমি অনেক রানও করেছি। হয়তো আমাকে আরেকটু ভালো করতে হবে। একটু ভালো হতে হবে। আর এটা নিয়ে আমি কাজ করে যাব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে, আমি সবসময় বলে এসেছি, কাজ করে যেতে হবে, করে যেতেই হবে। কাজ করতে থাকলে এতে ভালো হয়ে উঠবেনই।'
ফজলের একই ধরনের বলে বারবার আউট হয়ে হতাশ তামিম। তবে এরচেয়ে তার বড় হতাশা দলের জন্য অবদান রাখতে না পেরে। তামিম বলেন, 'আউট হওয়ার ধরনের চেয়ে আমি বেশি হতাশ যে দলে অবদান রাখতে পারিনি। ওটা নিয়ে দুর্ভাবনা বেশি নেই আমার, কারণ এই জায়গাটায় আমি আগেও আউট হয়েছি, অনেক রানও করেছি। তবে গোটা সিরিজে রান না করা ও তিনবার আউট হওয়া হতাশাজনক।'
'কারণ নিজের ব্যাটিংয়ে আমি অনেক গর্ব খুঁজে নিই এবং নিজের কাছে নিজের ব্যাটিংয়ের মানদণ্ড অনেক উঁচুতে। তো হতাশাজনক, তবে এটাই ক্রিকেট। এটা নিয়েই এগোতে হবে। এখানেই দুনিয়ার শেষ নয়। কখনও সময় আসে, যখন রান করা হয়ে ওঠে না। আবার সময় আসে, যখন রানের জোয়ার বয়ে যায়। আমার সময় এলে, নিশ্চিত করব যেন অনেক রান করতে পারি।' যোগ করেন তামিম।
প্রথম দুই ওয়ানডেতে তামিমের আউট আলাদা করার উপায় ছিল না। ফজলের ভেতরের দিকে ঢোকানো ডেলিভারিতে দুইবারই সামনে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন তামিম। দুঃস্বপ্নের শুরু হওয়া প্রথম ওয়ানডেতে ফজলের একটি গুড লেংন্থের ডেলিভারিতে পরাস্থ হন তামিম। রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। লাইনে পিচ করা ডেলিভারিটির প্রভাব ছিলো স্টাম্প বরাবর। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তামিমকে ফেরায় আফগানিস্তান।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও একই দৃশ্যের মঞ্চায়ন। ফজলের ভেতরের দিকে ঢোকা ডেলিভারিটি চেষ্টা করেও খেলতে পারেননি তামিম, বল গিয়ে আঘাত হানে তার প্যাডে; আবারও এলবিব্লিউ। তৃতীয় ওয়ানডেতে ফজলের বলের লাইনই বুঝতে পারেননি তামিম। সামনে পা বাড়িয়ে ব্যাট চালালেও ভেঙে যায় তার স্টাম্প। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করা তামিমের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে নির্দিষ্ট বোলারের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে আউটের রেকর্ড ছিল না। এবার সেই তিক্ত অভিজ্ঞতাই হলো তার।