জাপানের শ্রমবাজারে প্রবেশ করল বাংলাদেশ
সরকারিভাবে জাপানে বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণের সুযোগ ছিল না একদিন আগেও। তবে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাপান-বাংলাদেশের একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরের পর কেটে গেল সেই বাধা। নবম দেশ হিসেবে জাপানের শ্রমবাজারের তালিকায় প্রবেশ করল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার জাপানের টোকিওতে দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রনালয়, জাতীয় পরিকল্পনা এজেন্সি সাথে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষ কর্মী প্রেরণকারী নবম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ জাপানের সাথে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করলো। উভয় পক্ষ এ সময় কর্মী প্রশিক্ষণ ও নিয়োগে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
সহযোগিতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান এবং জাপানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় অধীন ইমিগ্রেশন সার্ভিস এজেন্সির কমিশনার মিজ সোকো সাসাকি।
সহযোগিতা স্মারকের বিষয়ে রৌনক জাহান বলেন, সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত স্বাপেক্ষে জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে যা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে।
“বাংলাদেশ সরকার জাপানের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে দক্ষ কর্মী তৈরিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সারা দেশে ২৬টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে জাপানী ভাষায় ৪ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানও জাপানি ভাষা শিক্ষার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাপান দু’টি ক্যাটাগরিতে আগামী পাঁচ বছর কেয়ার ওয়ার্কার, বিল্ডিং ক্লিনিং ম্যানেজমেন্ট, মেশিন পার্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, ইলেকট্রিক, ইলেক্ট্রনিক্স, কন্সট্রাকশন, জাহাজ শিল্প, অটোমোবাইল, কৃষিসহ জাপান ১৪টি খাতে বিশেষভাবে দক্ষ এবং জাপানিজ ভাষায় পারদর্শী কর্মীদের নিয়োগ প্রদান করবে।
“প্রথম ক্যাটাগরিতে জাপানীজ ভাষার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা থাকলে পরিবার ছাড়া জাপানে পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পাবেন। আর দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে যাদের জাপানী ভাষা ও নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা প্রথম ক্যাটাগরির কর্মী থেকে বেশি তারা পরিবারসহ অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করার সুযোগ পাবেন।”
সহযোগিতা স্মারক অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ রাবাব ফাতিমা, জাপানের পলিসি প্লানিং ডিভিশনের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফায়ারস দপ্তরের পরিচালক ইয়াসুয়াকি ইমাই, বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর এবং দু’দেশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।