বরগুনা হত্যা মামলার আসামী রিশান ফরাজী গ্রেপ্তার
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় মামলার তিন নম্বর আসামী রিশান ফরাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের এ খবর দেন।
তবে তাকে কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে ব্যাপারে কোন তথ্য দেননি তিনি।
রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ডের প্রধান সহযোগী রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজী যথাক্রমে মামলার দুই ও তিন নম্বর আসামী । তারা দুজনই বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে।
দুই সপ্তাহ আগে রিশানের ভাই রিফাত ফরাজীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও হত্যাকান্ডের মূল আসামী সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় বলে দাবি করেছিল বরগুনা পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে মামলার প্রধান স্বাক্ষী নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ নিয়ে গেলেও রাতে হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার ‘প্রমাণ’ পাওয়ার কথা দাবি করে মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
বুধবার তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক অনুমতি দেন।
এরপর আজ বৃহস্পতিবার মিন্নির রিমান্ড বাতিলের জন্য হাইকোর্টে একজন আইনজীবী আবেদন করলে আদালতের দুই বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ তা নাকচ করে দেন।
গত ২৬ জুন স্ত্রীকে নিয়ে কলেজ থেকে ফেরার পথে প্রকাশ্য দিবালোকেই রিফাত শরীফ নামে বরগুনার এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী।
হত্যাকান্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাতে দেখা যায় রিফাতের স্ত্রী বারবার ঠেকানোর চেষ্টা করলেও সন্ত্রাসীরা তাকে রামদা দিয়ে কোপাতে থাকে। এসময় পাশে অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও রিফাতের স্ত্রী ছাড়া কেউই সন্ত্রাসীদের নিবৃত করার চেষ্টা করেননি। রক্তাক্ত অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তিনি মারা যান।
এর একদিন পর বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামী করে মামলা করেন রিফাত শরীফের বাবা।
এরমধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারের কয়েকটি স্ক্রিনশট ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তাতে দেখা যায়, হত্যার বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত এবং হত্যার মূল নকশা করেন মামলার প্রধান আসামী সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড ।
রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় দেশব্যপী সমালোচনার ঝড়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন। নির্মম এই হত্যাকান্ডকে ‘জনগণের ব্যর্থতা’ বলে মন্তব্যও আসে হাইকোর্ট থেকে।
ঘটনার পর অভিযুক্ত কয়েক আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও পালিয়ে যান ঘটনার প্রধান আসামী সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড। এরপর ২ জুলাই সকালে পুলিশের বরাত দিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নয়নের নিহত হবার খবর আসে গণমাধ্যমে।