বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার ২ শতাংশের কম
রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘ডেঙ্গু: বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে ডেঙ্গু-আক্রন্ত হয়ে মৃত্যুর হার দশমিক ২ শতাংশেরও কম। মৃত্যুহারের দিক দিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যু হার মোট মৃত্যুর প্রায় ৫ শতাংশ। যা সাধারণ মানুষের তুলনায় ২০ থেকে ২৫ গুণ বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার ১ শতাংশের কম হতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুসংখ্যা শতকরা দশমিক ৫ শতাংশ।
সেমিনারে জানানো হয়, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬২ হাজারেরও বেশি রোগী। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪৭ জন। তবে চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকিনিশিয়ানদের নিরলস প্রচেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট সকলের সুন্দর ব্যবস্থাপনার কারণে শতকরা মৃত্যুহার দশমিক ২ শতাংশের নিচে রাখা সম্ভব হয়েছে এবং ডেঙ্গুর সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করাও সম্ভব হয়েছে।
সেমিনারের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, “প্রতিরোধেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। মশা নিধনে ঢাকা সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে মশা নিধনের জোরদার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।”
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থা সম্পর্কে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেঙ্গু সেলে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন। অন্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৫৫৫ জন। যারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সাধারণ জ্বরের রোগীদের মধ্যে ডেঙ্গু-আক্রান্তের হার এখন ১০ শতাংশের মতো।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক ও রেসিডেন্ট ছাত্রছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. চৌধুরী আলী কাওসার, এডিটর-ইন-চিফ, ন্যাশনাল গাইডলাইন ফর ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট অফ ডেঙ্গু, অধ্যাপক ডা. কাজী তরিকুল ইসলাম।
মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জিলন মিঞা সরকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, বিএসএমএমই’র ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, অধ্যাপক ডা. আবুল কামাল আজাদ এবং শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামরুল লায়লা।