আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফির ধারণা যেভাবে পাল্টে দিলেন ক্রিস্টি
'আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি'তে নিজেদের বিশেষত্ব জাহির করেন যেসব ফটোগ্রাফার, ক্রিস্টি লি রজার্স তাদের চেয়ে আলাদা।
নিজে পানির নিচে ডুব দেওয়ার বদলে তিনি বরং পানি ও মডেলদের মুভমেন্ট নিয়ে স্বপ্নের মতো খেলা করেন। 'আমার ধারণা, বেশির ভাগ আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফারের চেয়ে আমার কাজের ধরন আলাদা। কেননা, আমি পানির ওপরে থেকেই শুট করি, আর ব্যবহার করি লাইটের রিফ্রেকশন,' বলেন আমেরিকান এই ফটোগ্রাফার ও ফিল্মমেকার।
'এভাবেই এমনতর কোমল ইফেক্ট ধরা পড়ে ছবিতে।'
টেকনিকটির বিকাশ ঘটাতে ১৫ বছর লেগেছে ক্রিস্টির। এই দীর্ঘ যাত্রায় গত বছরের 'সনি ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড ফর ওপেন ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার'সহ পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কার।
'এই তরিকায় কাজ না হওয়ারই কথা,' নিজের টেকনিকের অনির্দিষ্ট ও একেকবার একেক রকম ফল পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন তিনি। 'ব্যাপারটা এমন, যেন আপনি এইসব বাধা ও বেশির ভাগ ফটোগ্রাফারের টেকনিককে ব্যবহারযোগ্য না ভেবে এক পাশে ঠেলে দিচ্ছেন।'
তবে ক্রিস্টি জানান, এই প্রক্রিয়া তাকে শেষ পর্যন্ত 'আশার রাস্তা দেখায় এবং সুন্দর ফল এনে দেয়।'
ক্রিস্টির জন্ম হাওয়াইয়ের কাইলুয়ায়। অল্প বয়সেই তিনি পানির প্রতি এক অদ্ভুত টান অনুভব করেন। 'পানির একটা স্মৃতিশক্তি আছে। এটা অতীত মনে করিয়ে দেয়। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এই জীবনীশক্তির দরকার রয়েছে,' বলেন তিনি।
এ বছরের শুরুতে করোনাভাইরাস যখন আঘাত হানল, ক্রিস্টি ততদিনে তার সাম্প্রতিকতম সিরিজটির কাজ শেষ করে এনেছিলেন। পরে, পোস্ট প্রোডাকশন কালে সিরিজটির নাম তিনি 'হিউম্যান' রেখেছেন বৈশ্বিক মহামারিটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি যোগানোর প্রেরণা হিসেবে।
'রাইডারস অব দ্য লাইট' শিরোনামের একটি ছবিতে দেখা মেলে তিন পরীর, যেন অতলে হারিয়ে যেতে বসা 'মানুষের দিকে তাকিয়ে রয়েছে' তারা। করোনাভাইরাস প্রেক্ষাপটকে ফুটিয়ে তোলার এ প্রচেষ্টা সম্পর্কে ক্রিস্টি বলেন, 'আলোর দেখা পেতে কখনো কখনো অন্ধকারের প্রয়োজন পড়ে আমাদের।'
নিজের এই আলোকচিত্রকর্ম তিনি অনুদান হিসেবে নিউইয়র্ক সিটির মাউন্ট সিনাই হসপিটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটকে দিতে চান। এই সিরিজের আরেকটি ছবি, 'ভেনাস ইজ রাইজিং' দাতব্য কর্মে অনুদান হিসেবে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
'আমার সব কাজের নেপথ্যে রয়েছে স্বাধীনতা, আশাবাদ এবং দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার বার্তা,' বলেন ক্রিস্টি।
'তাই মানবতার পক্ষেই সবসময় কাজ করি।'
- সিএনএন থেকে অনুবাদ: রুদ্র আরিফ