পূর্বের অনুমানকেও ছাপিয়ে গেছে মাচুপিচুর বয়স, বলছে নতুন গবেষণা
নতুন এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, ১৪২০-১৫৩০ সনে ইনকা সভ্যতার তীর্থস্থান মাচুপিচুতে জনসমাগম ছিল। যার অর্থ, পূর্ববর্তী অনুমানের কয়েক দশক আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পেরুতে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক শহরটি।
রিচার্ড বার্গারের অধীনে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল সম্প্রতি রেডিওকার্বন ডেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আবিষ্কার করেন, সম্রাট পাচাচুটি, যার অধীনে নির্মিত হয়েছিল মাচুপিচু, আগে যা ধারণা করা হয়েছিল তারও অনেক আগে ক্ষমতায় অধিষ্ঠ হয়েছিলেন। যার মানে, পাচাচুটির প্রাথমিক রাজ্য দখল আরও কয়েক যুগ আগেই হয়েছিল। কলম্বাস-পূর্ব আমেরিকায় সবচেয়ে ক্ষমতাবান রাজ্য ছিল তারই।
ঐতিহাসিক সব দলিল অনুযায়ী, মাচুপিচু নির্মিত হয়েছিল ১৪৪০-৫০ সালের দিকে। কিন্তু বার্গার ও তার দল এক্সিলারেটর মাস স্পেক্ট্রোমেট্রি (এএমএস) পদ্ধতি ব্যবহার করে আরও সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে।
এএমএস পদ্ধতির সাহায্যে অনেক ক্ষুদ্র জীবাশ্মেরও বয়স নির্ধারণ করা যায়। ১৯১২ সালে মাচুপিচুর এক কবরস্থান থেকে যে ২৬টি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছিল, তাদের উপর এই পরীক্ষা চালিয়েছে বার্গারের দল।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বার্গার বলেন, 'বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদিসহ এটাই প্রথম গবেষণা যার মাধ্যমে মাচুপিচুর সৃষ্টি ও রাজত্বকাল নির্ণয় করা হয়েছে।'
মাচুপিচুর বয়স নির্ধারণে পূর্বের যে ঐতিহাসিক দলিল, সেগুলো তৈরি করেছিল স্প্যানিশ ঔপনিবেশিকরা। তারা যেই পদ্ধতি ব্যবহার করে উপসংহার টেনেছে, সেটি প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে গবেষকরা।
যদিও রেডিওকার্বন ডেটিং পদ্ধতিরও সীমাবদ্ধতা আছে বলে মানছেন গবেষকরা, কিন্তু পূর্বের দলিলকে সরাসরি অবিশ্বাসযোগ্য বলেই বাতিল করে দিয়েছেন তারা।
গবেষণা প্রবন্ধটিতে বলা হয়েছে, 'রেডিওকার্বনের সহযোগিতায় মাচুপিচুর স্থাপত্যকলার বয়স ও ইনকা সাম্রাজ্যের কালপঞ্জি নির্ণয়ের সময় এসে গেছে।'
এন্টিকুইটি নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণা প্রবন্ধটি।
দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত মাচুপিচু শহরটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। শহরটি প্রায় ২০০টির মতো পাথুরে স্থাপনায় পূর্ণ, যাদের গ্রানাইটের দেয়াল এখনো অক্ষত রয়েছে।
- সূত্র: সিএনএন